ঢাকা ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অর্থ সংকটহীন ছাত্রজীবন চাই

আলী আহসান
অর্থ সংকটহীন ছাত্রজীবন চাই

ইন্টারেস্টেড! ইন্টারেস্টেড!! হাইলি ইন্টারেস্টেড!!!

টিউশন মিডিয়াগুলোর কমেন্ট বক্সে গেলে এমন হাজারো কমেন্ট চোখে পড়ে। যা নিঃসন্দেহে আমাদের আর্থিক সংকটকে তুলে ধরে।

বুকের মধ্যে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজ বাসস্থান ত্যাগ করে বিভিন্ন শহরে যায়। একেকজনের একেক লক্ষ্য থাকলেও বেশিরভাগের লক্ষ্য একটাই উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করে ভালো চাকরি করা। কারণ আমাদের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ সমাজের কম আয়ের পরিবার থেকে উঠে আসা।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পরে আমাদের অনেকের পরিবারেই মিষ্টি কেনার টাকাও থাকে না। আমাদের বাবা-মায়েরা ধারদেনা করে মিষ্টি কিনে ঘরে নিয়ে আসে ছেলেমেয়েদের খুশিকে ভাগ করে নেয়ার জন্য। অনেকের ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরা চাইলেও সামর্থ্যরে অভাবে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে না। তবে সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সব পরিবারই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সন্তানকে নিয়ে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন দেখে। বাবা-মারা তাদের অপূর্ণতাগুলো সন্তানের মাধ্যমে তারা পূর্ণ করতে চায়।

সন্তানরাও পিতামাতার স্বপ্নপূরণ করতেই তাদের অপূর্ণ আশাগুলোকে খাঁচায় বন্দি করে রাখে। খেলাধুলা ভালো করতে পারা ছেলেটাও মা-বাবার ইচ্ছে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য রাত-দিন পড়াশোনা করে থাকে।

পিতামাতার শত আশা পূরণের আকাঙ্ক্ষা তার মাঝে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। অর্থ সংকট স্টুডেন্ট জীবনে উন্নতির প্রধান অন্তরায়। অর্থ সংকট দূর করতে স্টুডেন্টের একটা বড় অংশ টিউশন নামক পেশায় সময় ব্যয় করে। অর্থ সংকটে থাকা স্টুডেন্টের কাছে টিউশন পাওয়াটা ঠিক সোনার হরিণকে পাওয়ার মতোই। টিউশন করতে আসা ও যাওয়ার মাঝে শহরের তীব্র জ্যাম স্টুডেন্টের পড়ার সময় কেড়ে নেয়। রাস্তার তীব্র শব্দদূষণ মস্তিষ্কে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এসব নানান ধরনের সমস্যার ফলে ডিপার্টমেন্টে খারাপ রেজাল্ট হয়। পরবর্তীতে একদিকে ডিপার্টমেন্টের ফলাফলকে বাড়ানোর চেষ্টা, বিসিএস প্রস্তুতি, বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রিপারেশন আর অন্যদিকে টিউশন করে অর্থ উপার্জন। এসবকিছু মিলিয়ে আমাদের কোনো কিছুই পরিপূর্ণভাবে করা হয়ে ওঠে না।

আমি এবং আমার মতো এমন হাজারো শিক্ষার্থী এরূপ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাই।

সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা নানান ধরনের উপায় সমাধানের পথ দেখাতে পারলেও মাঠপর্যায়ে আমরা শিক্ষার্থীরা কোনো কিছু করতে পারছি না। এজন্য সরকারি সহযোগিতা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

পড়ালেখার পাশাপাশি আমাদের জন্য চাই কর্মসংস্থান। যেখানে আমরা অধিক সময় পড়ালেখা করে বাকি কিছু সময় কাজ করতে পারব। যার জন্য আমাদের আলাদাভাবে সময় নষ্ট হবে না, ঘরে বসেই কাজ করতে পারব। কারণ জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সময়ের সঠিক ব্যবহার অপরিহার্য। বিজয়ের অর্ধশত বছর পরে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এবং একজন সুনাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে এ কামনায় করি। সর্বোপরি, অর্থ সংকটহীন ছাত্রজীবন চাই।

শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত