আরেক স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষা

বাংলাদেশে পাতাল রেল

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ পাতাল রেলে প্রবেশ করতে চলেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে ঢাকায় পাতাল রেল চলা শুরু করবে। প্রাথমিক পর্যায়ে পাতাল রেল চলবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। পরে তা বাড়ানো হবে। এই পাতাল রেলের কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ২ ফেব্রুয়ারি।

পাতাল রেল আমাদের কাছে রূপকথার গল্পের মতো। পাতাল রেল অর্থাৎ মাটির নিচ দিয়ে রেল গাড়ি চলাচল। এ এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আমরা ছোটবেলা থেকেই পাতাল রেলের নাম শুনে আসছি। আমাদের দেশে কখনও যে পাতাল দিয়ে রেল চলবে, তা ভাবতেও পারিনি। যা একদিন ভাবতে পারিনি, তা আজ দেখতে চলেছি। যা ছিল স্বপ্ন, তা আজ বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। অনেক স্বপ্নের মতো এই পাতাল রেলের স্বপ্নও দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তা তিনি পূরণও করবেন। শেখ হাসিনা এমনই এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি শুধু স্বপ্নই দেখান না- সেই স্বপ্ন পূরণও করেন। পাতাল রেলের স্বপ্নও পূরণ হবে।

বিশ্বে প্রথম পাতাল রেল চালু হয় লন্ডন শহরে ১৮৯০ সালে। প্রতিবেশী ভারতের কলকাতা শহরে পাতাল রেল চালু হয় প্রায় ১০০ বছর পর ১৯৮৪ সালে। আর বাংলাদেশে পাতাল রেল চালু হতে চলেছে বিশ্বে প্রথম চালু হওয়ার ১৩৩ বছর পর। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পাতাল রেল এখনও স্বপ্ন। অধিকাংশ দেশই পাতাল রেল নিয়ে ভাবতে পারে না। আমরা শুধু ভাবিইনি, তা কার্যকরও করতে চলেছি। মেট্রোরেল চালু হয়েছে। পাতাল রেলও মেট্রোরেলের অন্তর্ভুক্ত। মেট্রোরেল কখনও মাটির নিচ দিয়ে, কখনও মাটির ওপর দিয়ে চলাচল করে। কখনও বা ওপর দিয়ে। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় মেট্রোরেল অত্যন্ত এক সুবিধাজনক মাধ্যম। দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতে এর বিকল্প নেই। বলা যায়, কলকাতা শহর অচল হয়ে যেত যদি না পাতাল রেল চালু হতো। পাতাল রেলই শহরের ওপরে যাতায়াত ব্যবস্থাকে সহনীয় করে রেখেছে। এ কথা সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। লন্ডন শহরের নিচ দিয়ে মাকড়সার জালের মতো বিছানা পাতাল রেল। পাতাল রেলের যোগাযোগ ব্যবস্থাই লন্ডন শহরকে চলাচলযোগ্য করে রেখেছে। এইভাবে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে পাতাল রেল ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। আমরাও সে দিকেই যাচ্ছি। তবে আগে পাতাল রেল চালু করতে সময় লাগত বেশি। কলকাতায় পাতাল রেল চালু করতে সময় লেগেছিল ১৪ বছর। এখন প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে। এখন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখন আমাদের এই পথ চালু করতে লাগবে ৪ বছর।

আধুনিক একটি দেশ গড়তে যা কিছু দরকার, তার সব কিছুই করা হবে। বর্তমান সরকারের এটাই লক্ষ্য। এই সরকারের মতো চিন্তা-ভাবনা ও তা কার্যকর করা, আগের কোনো সরকারের মধ্যে দেখা যায়নি। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর আমরা চৌকস বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছি। আমরা চাইব, আমাদের এই যাত্রা যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়। একের পর এক স্বপ্ন পূরণে সরকার যে আন্তরিকতার পরিচয় দিচ্ছে, তা অব্যাহত থাকুক। এই স্বপ্ন পূরণে কেউ যেন বাধা দিতে না পারে, সে জন্যই বর্তমান সরকারকেই দরকার। সরকার বদল হলে আবার সব তছনছ হয়ে যাবে। আমরা তা হতে দিতে পারি না। এ দেশের জনগণও তা হতে দেবে বলে আমরা মনে করি না। জনগণই দেশের মূল শক্তি, যা কিছু করতে হবে সবই জনগণকে নিয়েই করতে হবে।

আমাদের বিশ্বাস, বাংলার মানুষ উন্নয়নের ধারায় আস্থা রাখবে। আর এই আস্থার বলেই সরকার আমাদের স্বপ্ন পূরণে সফল হবে।