ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গণপরিবহণে হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন

মো. হামিদুর রহমান
গণপরিবহণে হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন

কিছু দিন আগে মহাখালী ওয়ারলেস থেকে থেকে রবরব গাড়িতে উঠলাম। গন্তব্য আমার ওয়ারলেস থেকে লিংক রোড পর্যন্ত। অফিসের জন্য প্রতিদিন এই পথের যাত্রী আমি। গাড়ি ভাড়া আমার মুখস্থ। কারণ প্রতিদিন ১০ টাকা দিয়ে আমি যাতায়াত করি। সেদিন গাড়ির সহকারী সঙ্গে ঘটল ভিন্ন কাহিনি। রবরব সহকারী ইলেকট্রনিক মেশিন নিয়ে এসে বলল-মামা ভাড়া দেন, প্রতিদিনের মতো আমি ওরে ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে বললাম-লিংক রোড নামব, সে জিজ্ঞেস করল, মামা উঠছেন কোথায় থেকে? জবাবে ওয়ারলেস। উনি বলছেন, ও আচ্ছা-মহাখালী থেকে বাড্ডা ১৫ টাকা ভাড়া। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন ১৫ টাকা, এখানে তো ১০ টাকা ভাড়া। গাড়ির ওই সহকারীর উত্তর ছিল, মেশিনে যা আসে তাই। জিজ্ঞেস করলাম, মেশিনটা কখন থেকে চলছে, তার উত্তর ছিল কিছুক্ষণ আগে থেকে। কিছু না বলে ১৫ টাকা দিয়ে দিলাম। পরে এক যাত্রী সহকারীর সঙ্গে কিছু যুক্তিতর্ক করার সঙ্গে সঙ্গে সে চুপ হয়ে গেল এবং বলল মামা মেশিনে যা আছে তা দিতে হবে। ঢাকার প্রতিটি গাড়ি মেশিন চালু করে ফেলবে। ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা বসবাসকারি প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ দৈনদিন কাজের জন্য লোকাল বাস ব্যবহার করে। হুটহাট মনগড়া ভাড়ার সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছাড়াও চালকের অযোগ্য চালানিতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। একটা বাস আরেকটা বাসের আগে যাওয়ার জন্য দ্রুত ওভারটেক, একটার পেছনে আরেকটা ধাক্কা দেয়া, অনেক সময় ওভারটেক করার সময় দুটো বাস ঘেঁষে যাওয়ার সময় গ্লাস ভেঙে যাত্রীদের গায়ে পড়ে হাত-মুখ কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এছাড়া ফিটনেসবিহীন গাড়ি ঢাকা শহরে চলাচল করে আইনের সামনে দিয়ে স্বাধীন রাজার মতো। অধিক যাত্রী গাড়িতে থাকার পরও গাড়িতে যাত্রী নেয়ার জন্য ট্রাফিক সিঙ্গন্যাল পড়তে ইচ্ছে করে গাড়ি চালাচ্ছে অসাধু চালকরা। ফলে অনেক পরীক্ষার্থী যাত্রী সময়মতো উপস্থিত হতে পারছেন না পরীক্ষাকেন্দ্রে। ফলে ক্ষতি হচ্ছে যাত্রীদের। কেউ কেউ প্রতিবাদ করলে খারাপ ভাষায় কথা বলছেন বাসের সহকারী ও চালক।

ঢাকার সড়ক-সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিমাসে থাকা জরুরি। তাহলে ইচ্ছেকৃত ভাড়া কথা বলে মাস্তানি করতে পারবে না। এছাড়া রাস্তায় প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চালানো দেখলে প্রশাসন উপস্থিত অর্থ ও শারীরিক শাস্তি দেয়ার প্রয়োগ করতে হবে। শারীরিক শাস্তি প্রয়োগ করলে ভয়ে চালক অনিয়ম বন্ধ করবে। এছাড়া গাড়ির মধ্যে যাত্রীদের সুবিধার লক্ষ্যে সিটের বাইরে যাত্রী তোলা নিষেধ করা প্রয়োজন। ফলে নারী যাত্রীদের লাঞ্ছিত করার থেকেও রক্ষা পাবে। এছাড়া ফিটনেসবিহীন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া চালক রাস্তায় উঠলে কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করতে হবে। পরিশেষে, হাসি নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া ব্যক্তি অযোগ্য পরিবহণের জন্য যেন কান্না করতে না হয়, কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত, দায়িত্বরত পরিবহণ মালিক সমিতির সব সদস্যের।

মহাখালী ঢাকা

[email protected]

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত