ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইভিএম নিয়ে ভাবনা

বিকল্প খুঁজতে হবে
ইভিএম নিয়ে ভাবনা

ইভিএম অর্থাৎ ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন। এই মেশিনের সাহায্যে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে দ্রুত ও সহজে ভোট গ্রহণ করা যায় এবং এতে ভোট চুরির কোনো সুযোগ থাকে না। তার ওপর একজনের ভোট অন্যজন দিতেও পারে না। এসব কারণে এই মেশিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরে অবশ্য কেউ কেউ এই মেশিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন। অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলেও অভিযোগ করতেই থাকেন। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষও এই মেশিনে ভোট নেয়ার ইচ্ছায় আটক থাকে। কেননা কোনো বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার এই মেশিনের মারাত্মক কোনো ত্রুটি প্রমাণ করতে পারেননি। তাই ইভিএম স্বচ্ছ একটি আধুনিক মেশিন হিসেবে কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমেই আমাদের জাতীয় নির্বাচনের ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য একটি বাজেট দেয়া হয়; কিন্তু সরকার সেই বাজেট অনুমোদন করেনি। পরে সিদ্ধান্ত হয়, নতুন মেশিন না এনে যা আছে তা দিয়েই যতটুকু সম্ভব ভোট গ্রহণ করা হলে বাকিগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে।

ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণের বিপক্ষে কথা বলে আসছে বিরোধী দলগুলো। তাদের ধারণা, ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে মানে ওই ১৫০ আসনে সরকারি দলকে জেতানো হবে। পরিকল্পিতভাবে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যদিও কীভাবে ইভিএমের মাধ্যমে সরকারি দলকে জেতানো হবে, তার ব্যাখ্যা তারা দিচ্ছেন না। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ইভিএম মেশিনের অভাবেই হোক বা সরকারের নীতি পরিবর্তনের কারণেই হোক, ইভিএমে জাতীয় নির্বাচনের ১৫০ আসনে ভোট হবে না। ব্যালটেই হবে। যদিও উপনির্বাচনের ছয়টি আসনেই ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হয়েছে।

ইভিএম নিয়ে যখন এত বাগ্বিত-া, তখন ইভিএমের বিকল্প নিয়ে ভাবা উচিত বলে আমরা মনে করি। ইভিএমে কিছু সমস্যা তো আছেই। যেমনÑ যান্ত্রিক গোলযোগে ভোট বিলম্ব হয়। কখনও মেশিন ঠিক করতে না পেরে ব্যালটে যেতে হয়। এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আঙুলের ছাপ না মেলা। অনেকেরই আঙুলের ছাপ মেলে না। আঙুলের ছাপ মিলতে পারে। যেমন ৭০ বছরের ওপরে কোনো ব্যক্তির আঙুলের ছাপ না মেলার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। এ জন্য আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে ৭০-ঊর্ধ্ব যাত্রীদের আঙুলের ছাপ নেয়া হয় না। ইভিএমেও এমন বিকল্প কিছু ব্যবস্থা রাখা দরকার। সেই অর্থে ইভিএমের বিকল্প ভাবা উচিত। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট নিলে জাল ভোটের সম্ভাবনা থাকে না। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ব্যালটে ভোট নিয়ে পরে তা গণনা করার সময় মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ভাবে গণনা করার জন্য বিশেষভাবে ব্যালট পেপার তৈরি করতে হবে। ব্যালটে নির্দিষ্ট স্থানে ক্রস বা টিক চিহ্ন অথবা সিল মেরে ব্যালটটা না ভাঁজ করে বক্সে ফেলতে হবে। পরে এগুলো বক্স করে খ- খ-ভাবে মেশিনে দিলে মুহূর্তেই ফল বেরিয়ে আসবে। এখানে কারচুপি করার কোনো সুযোগ থাকবে না। আমাদের সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ অনেক প্রতিষ্ঠানেই এই পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হয়ে থাকে। কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না। ভোট হয় ব্যালটে, গণনা হবে মেশিনে। মেশিনে গণনার পর কোনো অভিযোগ করলে হাতেও গণনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা আশা করি, জাতীয় নির্বাচন ইভিএমের বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত