ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নগরীর জলাশয়ে মাছ চাষ

নগরের চাহিদা মেটাতে পারে
নগরীর জলাশয়ে মাছ চাষ

আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা। ঢাকা এখন মহানগরী। কয়েক কোটি লোকের বসবাস এই নগরীতে। এই নগরীতে বেশ কিছু লোক রয়েছে। বেশ বড়ও। গুলশান, বনানী, রমনা লেক সবাই চেনেন। নগরীর সবচেয়ে বড় লেকের নাম হাতিরঝিল। এটা এতই বড় যে, এই লেকে নৌ-পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশন লেকগুলোতে মাছের চাষ করার কথা ভাবতে শুরু করেছে। খুবই ভালো চিন্তা। বিশ্বের অনেক দেশেই শহরের মধ্যে বা শহরের আশপাশে লেক থাকলে সেখানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মাছের চাষ করা হয়। সুতাং আমাদের মেয়র শহরের লেকে মাছ চাষ করবেন সেটা অবাস্তব কিছুই নয়। তবে মাছ চাষের আগে লেকগুলোর পানি পরিষ্কার করতে হবে। এই চিন্তা থেকেই এরই মধ্যে গুলশান লেকের সঙ্গে যেসব বাড়ির শোয়ারেজ লাইন আছে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিছু বাড়ির শোয়ারেজ লাইনে কলা গাছ ঢুকিয়ে লাইন বন্ধও করে দেয়া হয়েছে। এতেই বোঝা যায়, লেকটিকে দূষণমুক্ত করে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নগরীর লেকগুলোতে মাছের চাষ করলে নগরবাসী অল্পদামে মাছ কিনতে পারবে। লেকগুলোতে যে পরিমাণ মাছ উৎপন্ন হবে, তাতে ঢাকা মহানগর ছাড়াও নগরের বাইরেও মাছ সরবরাহ করা যাবে। লেকে মাছ চাষ আগেও সফল হয়েছে। তাহলো বাড়াই লেক। কাপ্তাইয়ের মাছ সারাদেশে পাঠানো হতো। বিশেষ করে ঢাকা শহরে তো বটেই। কাপ্তাই লেকের মাছের সঙ্গে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী জড়িত। এমন এক সময় ছিল যখন দৈনিক ১০ থেকে ১৫ টন মাছ পাওয়া যেত কাপ্তাই লেক থেকে। বছরের ৯ মাসই মাছ বেচাকেনা হতো। এখনও সেখানে মাছ হয়, তবে অনেক কমে গেছে। কেন কমে গেছে সে অন্যবিষয়। কাপ্তাই লেকের আদলে নগরীর হাতিরঝিলে মাছ চাষ করা যেতে পারে। এতে সুফল বেশি পাওয়া যাবে। নগরীর বিভিন্ন লেক এ মাছের চাষ আগেও হয়েছে। গুলশান লেকে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার জন্য মঞ্চও করা আছে। টিকিট কিনে সৌখিন শিকারিরা ছিপ দিয়ে মাছ ধরতেন। সব কিছুই হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। ফলে সুফল তেমন মেলেনি। নগরের লেকগুলোতে দূষণমুক্ত করে মাছ চাষের ব্যবস্থা করলে প্রচুর অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে। বিশেষ করে হাতিরঝিলের মতো বড় লেকের মাছ হবে খুবই সুস্বাদু। ছোট বড় সব ধরনের মাছই পাওয়া যাবে এসব লেক থেকে। পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করলে এক হাতিরঝিল থেকেই কমপক্ষে দৈনিক ১ টন করে মাছ পাওয়া গেলেই চাষের স্বার্থকতা মিলবে। তাছাড়া টিকিট কিনে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে অনেকে উৎসাহিত হবেন, এতে আয়ও বাড়বে। যেহেতু সিটি করপোরেশন-এর ব্যবস্থা করবে, তাই এর মালিকও হবে সিটি করপোরেশন। মাছ বেচাকেনা তারাই করবে, লাভ-লোকসান তাদেরই।

আমরা আশা করি, নগরীর লেকগুলো পরিষ্কার করে অর্থাৎ শোয়ারেজ লাইন যেন লেকে না যায়, তা নিশ্চিত করে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা হবে এবং আমাদের বিশ্বাস আধুনিক সিটি করপোরেশন আন্তরিকতার সঙ্গে এই উদ্যোগ কার্যকর করবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত