ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল

সুশৃঙ্খল যান চলাচল
স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল

রাজধানী ঢাকা শহরে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে যানবাহন চলাচল করে। কোনোভাবেই শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যাচ্ছে না। চালকদের ৯৫ জনই ট্রাফিক আইন মানতে চায় না। যে যেমন করে পারে আগে যাওয়ার জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে কিছু রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস এলোপাতাড়ি চলাচল করায় বিশৃঙ্খলা আরও বেড়ে যায়। সিগন্যালগুলোতে সমস্যা হয় আরও বেশি। গাড়ির সংখ্যা একে তো বেশি, তার ওপর একই রাস্তায় মানুষ এবং গাড়ি একসঙ্গে পার হয়। ফলে সিগন্যালে এসে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়। মানুষ যাবে না গাড়ি যাবে, তা ট্রাফিক পুলিশ ঠিক করতে পারে না। পারার কথাও নয়। চারদিকে রাস্তা। কোন রাস্তা আটকাবে আর কোন রাস্তা ছাড়বে, তা ঠিক করতে হিমশিম খেতে হয়। এরপর যে যেমন পারে সিগন্যাল অতিক্রম করে চলে যায়। ফলে লেগে যায় জট। এই জট ছাড়তে সময় কেটে যায়। এতে যাত্রী ও গাড়ির হয়রানি বাড়ে।

বিশ্বের সব বড় শহরে স্বংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবহার করা হয় সুশৃঙ্খলভাবে শহরে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। অল্প গাড়ি থাকলে তা ট্রাফিক পুলিশ হাত দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গাড়ির সংখ্যা বেশি হলে ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ঢাকা শহরে গাড়ির যে সংখ্যা, তা কোনোভাবেই ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সে জন্যই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের ব্যবস্থা প্রয়োজন। ঢাকা শহরে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা অর্থাৎ ডিজিটাল সিগন্যাল স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছিল; কিন্তু তা সফল হয়নি। কেন হয়নি, এর পেছনের কারণ কী সেটাও কেউ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেননি। ডিজিটাল সিগন্যাল বা স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল একমাত্র গুলশান-২ নম্বরে এখনও চালু আছে বলে দেখা যায়। এও দেখা যায় যে, এখানে সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন চলাচল করে। কেউ আইন ভাঙতে চেষ্টা করে না। এই সিগন্যালে যেভাবে সবাই আইন মেনে চলে, ঠিকই একইভাবে অন্য কোথাও মানতে দেখা যায় না। যেহেতু সেইসব স্থানে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল নেই। গুলশান-২ নম্বরে ডিজিটাল সিগন্যাল থাকলেও সেখানে ট্রাফিক পুলিশকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। তবে অন্য মোড়ে যেমন তৎপর থাকতে হয়, এখানে তেমন থাকতে হয় না।

প্রশ্ন উঠতে পারে, আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপ নিয়েছে। তবে এতদিনে কেন রাজধানীর সব মোড়ে ডিজিটাল সিগন্যাল বসাল না। আগে চেষ্টা করেও কেন ব্যর্থ হলো। তাহলে কী ভাবতে হবে যে, ডিজিটাল সিগন্যাল বসাতে যে পরিমাণ মেধার দরকার হয়, তা আমাদের নেই? না-ই থাকতে পারে, আশপাশের দেশগুলোতে তো আছে। ব্যাংকক শহরে ট্রাফিক পুলিশ নামে কিছু আছে বলে জানাই যায় না। সব চলছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। নিকটতম প্রতিবেশী কলকাতা শহরেও অধিকাংশ সিগন্যাল অটোমেটিক। এমনকি নতুন শহর যেগুলো তৈরি হচ্ছে, সেখানে যানবাহনের চাপ না থাকলেও সব সিগন্যাল স্বয়ংক্রিয় করে বসানো হচ্ছে।

শহরে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে ডিজিটাল সিগন্যালের বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, ঢাকা শহরে যত দ্রুত সম্ভব সব জায়গায় ডিজিটাল সিগন্যাল বসানো হবে। আমাদের বিশ্বাস, ডিজিটাল সরকার এ ব্যাপারে সফল হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত