দেশে দিন দিন যেভাবে চাল, ডাল, তেল, আটা-ময়দা, ডিমসহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। রেকর্ড হারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্য বেশির ভাগ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। গরিব এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা। আয় নেই অথচ সরকারই তেলের দাম সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কথামত একের পর এক বৃদ্ধি করে চলছে। অথচ দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার কথা কেউই একরারও চিন্তা-ভাবনা করছে না। এতে গরিব ও মধ্যবিত্তরা আরও অসহায় ও কাহিল হয়ে পড়েছে। তাদের দেখার কেউ নেই। এরই মধ্যে দেশে কর্মহীন ও বেকারের সংখ্যা যেভাবে বেড়ে চলছে, তাতে ভবিষ্যত ভালো মনে হয় না। জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে দেওয়ালে সাধারণ মানুষের পিঠ ঠেকে গিয়েছে। হঠাৎ করে সরকার তেলের দাম অসৎ ব্যবসায়ীদের পাল্লায় পড়ে এক লাফে বাড়িয়ে দেয়। রাষ্ট্র একবারও সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করল না। তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কিছুই তো হু-হু করে বাড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল দেশের বেশির ভাগ মানুষ। বিশেষ করে গরিব ও মেহনতি মানুষের ঘরে ঘরে হাহাকার। এই মূল্যবৃদ্ধি কোনো সুস্থ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নয়। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, দারিদ্র্য, অপুষ্টি, দুর্নীতি ও অবক্ষয়ের মতো অভিশাপকে আরও বাড়িয়ে দেয়। চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা কৃত্রিম অভাব সৃষ্টিকারী, মজুতদারি, ফটকাবাজি, মুদ্রাস্ফীতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইত্যাদির কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই; কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রাষ্ট্র বা সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই । দেশ আজ বন্যা ও জলবদ্ধতায় সয়লাভ। দেশের মানুষের বেঁচে থাকাটা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে জীবনযাত্রার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবন আজ পর্যুদস্ত। প্রতিদিনই জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আসলে মজুরি বা শ্রমজীবীর আয় দিন দিন যেভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বা হচ্ছে, মুনাফা সেভাবে হয়নি। দিন দিন দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে আসছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ ক্ষুব্ধ। সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়গুলো ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।
মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী, ফরিদাবাদ-গেন্ডারিয়া