বিভাগীয় শহরগুলোর কোনো থানার সামনে দিয়ে যদি কখনও আপনার যাতায়াতের সৌভাগ্য হয়। তবে আর কিছু দেখেন আর না দেখেন- এক গাদা নষ্ট গাড়ি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ইত্যাদি পড়ে থাকতে দেখবেন। এগুলোর রাস্তায় পড়ে আছে দিনের পর দিন। মাস, বছরের পর বছর। রাস্তা সরু হয়ে গেছে। আপনাকে খুব সাবধানে গাড়ি নিয়ে চলতে হবে। কারণ দু’পাশের জায়গা এই সব জব্দ মালে হয়েছে আবদ্ধ। মানুষের ভীষণ দুর্ভোগ তো বটেই। পাশাপাশি থানার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। সুন্দর থানা ভবন, অথচ তার সামনে বিষফোড়ার মতো জব্দ মালপত্র। রাস্তায় বেওয়ারিশ কুকুরগুলোও একদল পশুপ্রেমী দেখাশোনা করে। অথচ এই অব্যবস্থা দেখার কেউ নেই। রাজধানীর বনানী থানার কথাই বলতে পারি। রোজ কিছুটা সময় এখানে রিকশায় বসে থাকতে হয়। কারণ বড় গাড়ি ঢুকলে পাশ দিয়ে রিকশা যেতে বেগ পেতে হয়। অথচ সড়কটি কিন্তু ভালোই চওড়া। কিন্তু তাতে কি? কিছুটা জায়গা জব্দ মাল কেড়ে নিয়েছে। থানার আশপাশে প্রায় কিলোখানেক জায়গাজুড়ে জব্দ মাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এক সময়ের সুন্দর গাড়ি, এখন জং পড়া লোহা ছাড়া আর কিছুই নেই। জব্দ মাল মানুষ ছাড়িয়ে নেন না। নেপথ্যে নানা রকম ঝক্কি ঝামেলা আছে। এমন লোকের মাল জব্দ হলো, যিনি কোটিপতি। শুধু সামান্য মাল ছাড়িয়ে নিতে তিনি মোটেই উৎসাহ দেখান না। না দেখানোই স্বাভাবিক। কিছু এ সব মাল যত্রতত্র ফেলে রেখে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়া হবে কেন? সাধারণ মানুষের অপরাধ কোথায়? এর কি কোনো মানে আছে? হয়তো আইনি জটিলতার কারণে মালগুলো থানা সরাতে পারছে না। যদি সেটাই হয়, তবে আইনি জটিলতা কাটাতে ব্যবস্থা নিতে অসুবিধা কোথায়? আইন তো মানুষের কষ্ট দেয়ার জন্য নয়। জব্দ মালের এই অব্যবস্থাপনা যুগের পর যুগ ধরে কেন দূর হচ্ছে না। সেটাই প্রশ্ন। সময় এসেছে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ায়। সংশ্লিষ্টরা একটু তৎপর হোন। এটাই আকুল আবেদন।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
বনানী, ঢাকা