চি ঠি প ত্র

হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ

প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

কালের বিবর্তনে গ্রামবাংলার প্রকৃতি থেকে এখন বিলুপ্তপ্রায় শিমুল গাছ। শিমুল গাছ খুব একটা চোখে পড়ে না। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে উঠে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল।

এমন এক দৃশ্য চোখে পরে, বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের রাকসার কুমার পাড়ায়। শিমুল গাছের ডালে কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। শিমুল গ্রাম বাংলার অত্যন্ত পরিচিত একটি ফুল। কেউ শিমুল শব্দটা উচ্চারণ করলে সবার আগে এর রক্তরাঙা চেহারার কথাই মনে আসে। শিমুলের ইংরেজি নাম : Silk Cotton Tree. বাংলা নাম : শিমুল, রক্ত শিমুল, লাল শিমুল। বৈজ্ঞানিক নাম : B.ceiba। Bombax গণের অন্তর্গত পাতাঝরা বৃক্ষজাতীয় তুলা উৎপাদক উদ্ভিদ। ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বাংলাদেশে এ গাছ প্রচুর জন্মে। সাধারণত এ গাছ লম্বায় প্রায় ১৫-২০ মিটার হয়। এর শাখা-প্রশাখা অপেক্ষাকৃত কম। দেখতে অনেকটা সরল ও বৃত্তাকারভাবে চারদিকে বিস্তৃত থাকে। বাকলে (ছালে) কাঁটা থাকে। কাঁটার অগ্রভাগ সরু ও তীক্ষè এবং গোড়া বেশ মোটা হয়। তবে বয়স্ক গাছে তেমন কাঁটা থাকে না। শীতের শেষে পাতা ঝরে যায়, ফাল্গুনে ফুল ফোটে। ফল মোচাকৃতি। চৈত্র বা বৈশাখ মাসে ফল ফেটে শিমুল তুলা বেরিয়ে আসে। শিমুল তুলা ব্যবহৃত হয় বালিশ, তোশক ইত্যাদি বানাতে। মৌসুমে সাধারণ আকৃতির একটি শিমুল গাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি তুলা পাওয়া যায়। আজকাল শিশুরা শিমুল গাছ ও ফুলটি চেনে না। একদিকে শিমুল গাছ বিলুপ্তির কারণে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত তুলা থেকে। একটা সময় ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি এলে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার জন্য শিশু-কিশোরদের ফুলের সংকট দেখা যেতো। ফুল না পেয়ে শৈশবে অনেকেই লাল টকটকে শিমুল ফুল দিয়ে ফুলের তোড়া বানিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাত।

সমাজের প্রবীণ ব্যক্তিরা মনে করেন, নির্বিচারে শিমুলগাছ নিধন ও চারা রোপণ না করার কারণে এ অঞ্চল থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

বুলবুল হাসান

বেড়া, পাবনা