ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যুদ্ধের ধ্বংসলীলা এবং জি-২০ সম্মেলন

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
যুদ্ধের ধ্বংসলীলা এবং জি-২০ সম্মেলন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় তৎকালীন বিশ্বনেতৃত্ব শান্তির পথে প্রত্যাবর্তনে প্রচণ্ডভাবে এগিয়ে এসেছিলেন। আজ সেই দায়িত্ব চেপেছে বিশ্ব নেতাদের ওপর। পৃথিবীকে শান্ত, সমৃদ্ধিশালী ও নিরাপদ করে তুলতে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। এটাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ইউক্রেনের সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড মহামারির বৈশ্বিক সংকটের ফলে গোটা বিশ্বে সরবরাহব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। চারদিকে হাহাকার। প্রতিটি দেশের দরিদ্রদের অবস্থা দুর্বিষহ। বিশেষ করে গরিব দেশগুলোর অবস্থ আজ হুমকির মুখে। দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করা তাদের কাছে কঠিন হয়ে উঠেছে। বলতে দ্বিধা নেই, জাতিসংঘের মতো বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান এই সংকটের মোকাবিলায় ব্যর্থ। সবাই প্রয়োজনীয় সংস্কারে ব্যর্থ হয়েছে। আর তাই, এবারের জি-২০ নেতৃত্বের কাছে বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা বেড়ে গেছে।

গত সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদোর ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, আমাদের আর কোনো পথ নেই। বিশ্বকে রক্ষায় সহযোগিতা প্রয়োজন। জি-২০ কে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে হবে। আমাদের বিশ্বকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা ঠিক হবে না। আমরা আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পথে হাঁটতে পারি না। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির উপায় সবাইকেই খুঁজতে হবে। সেই দায়িত্ব আজ প্রত্যেকের ওপর। এটা যুদ্ধের সময় নয়। কূটনীতির রাস্তায় কী করে ফেরা যায়, তার খোঁজে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধবাজ জোট ন্যাটোর লাগাতার পূর্ব ইউরোপে বিস্তার এবং ইউক্রেনকে সেই চক্রান্তে শরিক করার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। আর এতেই শুরু হয়েছে বিশ্ব মন্দা।

আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্সসহ উন্নত পশ্চিমা দেশগুলো শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্র, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিক থেকে সাহায্য করেছে। রাশিয়ার বক্তব্য, সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনকে লেলিয়ে ক্রমেই সংঘাতের পথে রাশিয়ার বিশাল প্রাকৃতিক জ্বালানিসম্পদে থাবা বসানো। অতীতে ঠিক যেভাবে ইরাক ও লিবিয়ার মতো আরো ভূখণ্ডের দেশগুলোকে মার্কিনরা বেপরোয়াভাবে আক্রমণ চালিয়েছে। জাতিসংঘে আলোচনার সময় ভারতের প্রতিনিধি প্রস্তাবটার সীমাবদ্ধতার দিকটাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে এবং সুদূরপ্রসারী শান্তির জন্য নয়াদিল্লির কাঙ্ক্ষিত সমাধান ভাবনার সঙ্গে এই প্রস্তাবটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আসলে রাশিয়াও যেমন জানে, ইউক্রেন দখল করা এখন আর সম্ভব নয়। আবার রাশিয়াবিরোধী পশ্চিমা দেশগুলোরও বোঝা দরকার যে পুতিনকে পর্যুদস্ত করাও এত সোজা নয়। পুতিনকে কোণঠাঁসা করলে ইউক্রেনসহ সারা পৃথিবীর জন্য পরবর্তী সময় আরো দুঃসহ হয়ে উঠতে পারে। পুতিনের পাশে রয়েছে চীন। চীনের প্রেসিডেন্ট ও পুতিনের এ সম্পর্কটা তো কোনো ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির নিরিখেই সেটাকে দেখতে হবে। এখন এই পরিস্থিতিতে জি২০ সম্মেলন ভারতে হতে চলেছে। এই মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই হতে চলেছে জি২০ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। বাংলাদেশও বিশেষ আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে সেখানে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশের এ গুরুত্ব পাওয়ার প্রধান কারণ হলো তার জিও-স্ট্র্যাটেজিক পজিশন। এর সঙ্গে এই উপমহাদেশে বাংলাদেশের আর্থিক ও সামাজিক অগ্রগতি এবং ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ পশ্চিমা দেশগুলোর যেসব রাষ্ট্রপ্রধান কিয়েভ সফরে যাচ্ছেন, তাদের তো এখন একটাই উদ্দেশ্য ইউক্রেনকে আরও বেশি করে অস্ত্র জোগান দেয়া।

এমনকি সুইজারল্যান্ড ও সুইডেনের মতো ইউরোপের দেশ, যারা শান্তিপ্রক্রিয়ার পুরোধা ছিল, তারাও এখন এই অস্ত্র সরবরাহকারীদের দলে নাম লিখিয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়া যা করছে, সেটা যে অন্যায় তা নিয়ে কোনো মতপার্থক্য নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুতিনের সঙ্গে দেখা করে তাকে এই যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে আরজি জানিয়েছেন। তিনি এই যুদ্ধকে সমর্থন করেননি, কিন্তু ইউক্রেনকে ক্রমাগত অস্ত্র দিয়ে সংঘাতে আরও ইন্ধন জোগানো, সেটা কি শান্তির বাণী বহন করে? রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর একটা বছর চলে গেল। এখনো ধ্বংসলীলা অব্যাহত। প্রতিটা মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শুধুই বাড়ছে। রাশিয়ার এই আক্রমণ শুধু ইউক্রেনের অর্থনীতিকে যে ধ্বংস করছে তা নয়, কোভিড-পরবর্তী সময়ে সারা দুনিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকেও তো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ যেকোনো মুহূর্তে ভয়ংকর চেহারা নিয়ে নিতে পারে। যুদ্ধ যাতে অবিলম্বে বন্ধ হয়, তার জন্য সব দেশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া জরুরি। কিন্তু সেই উদ্যোগ যতটা প্রয়োজন, ততটা কি আমরা দেখতে পাচ্ছি। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাষ্ট্রসংঘে আনা প্রস্তাবে ভারত; কিন্তু ফের ভোট দিলো না। সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪১টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিরুদ্ধে ভোটদান করেছে সাতটি দেশ।

আর ভারত, চীন, বাংলাদেশসহ মোট ৩২টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। এখন এই ভোটদানে বিরত থাকার মানে, ভারত ও বাংলাদেশ যে রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে সমর্থন করছে তা নয়। ভারত তার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যা করছে, সেটা বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে, বাংলাদেশের সঙ্গে পরামর্শ করেই করছে। এ ব্যাপারে ভারত ও বাংলাদেশের যুদ্ধবিরোধী যে পররাষ্ট্রনীতি, সে ব্যাপারে যথেষ্টই সাযুজ্য দেখা যাচ্ছে।

এই কূটনীতির আরেকটা সাম্প্রতিকতম নিদর্শন হলো, বাংলাদেশের যে পরমাণু বিদ্যুতের সরঞ্জাম, যেটা দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল, বাংলাদেশে এসে পৌঁছাচ্ছিল না, যেটা রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসার কথা এবং ন্যাটোর বিরোধিতায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য বিরোধিতায় সেটা মাঝপথে আটকে যায়। এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা বাংলাদেশে পৌঁছাচ্ছে। আর পৌঁছাচ্ছে ভারত হয়ে। অর্থাৎ ভারতও এ ব্যাপারে কূটনৈতিক দৌত্য করছে এবং বাংলাদেশের প্রাপ্য সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা ভারত করেছে। অতএব, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম রাশিয়া থেকে ভারত হয়েই আসছে। যেমনটা আগে কথা ছিল, পরে এটা কিছুদিনের জন্য থমকে দাঁড়িয়েছিল মার্কিন চাপে। ভারত কিন্তু কূটনৈতিক দৌত্যর মাধ্যমে সেটার জটিলতা মুক্ত করতে পেরেছে। এর ফলে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কটা আরও মজবুত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসছে দিল্লির জি২০ সম্মেলন। সম্প্রতি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার অজিত দোভাল গিয়েছিলেন রাশিয়ায়। তিনি পুতিন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, সেটা হচ্ছে, রাশিয়ার দোসর হওয়া সত্ত্বেও চীনও; কিন্তু এই যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারে একটা নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। চীন এ ব্যাপারে দৌত্য শুরু করেছে। চীনের বক্তব্য হচ্ছে, এবার রাশিয়ারও শান্তির পথে যাওয়া উচিত। একটা আলোচনা শুরু করা উচিত, যাতে বিভিন্ন রাষ্ট্র এভাবে আলোচনার পথে যায়। চীন এই উদ্যোগটা নিচ্ছে কেন? এর কারণ চীনও বুঝতে পারছে, এর পরও যদি এই যুদ্ধকে থামতে দেয়া না হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যাবে। আমেরিকার সঙ্গে চীনের যে ভয়ংকর একটা বিরোধের পরিস্থিতি, সেটা আরও জটিল আকার ধারণ করবে। আর যাই হোক, চীন এখন কোনো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্যও নয়। নরেন্দ্র মোদি চীনের সঙ্গেও একটা ট্র্যাক টু আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন।

সেই আলোচনায়ও এই ইউক্রেনের যুদ্ধ যাতে রাশিয়া থামায় এবং ইউক্রেনের দিক থেকেও যাতে আর নতুন করে আক্রমণের নিশানা রাশিয়াকে না করা হয়। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও যাতে সেই বোঝাপড়াটা তৈরি হয়, তার জন্য মোদিও চীনের শি জিন পিংয়ের সঙ্গে একটা কথাবার্তার পরিবেশ তৈরি করছেন। এই জি-২০-এর সম্মেলনকে ঘিরে এই শান্তি বার্তা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনকি মোদি-শি জিন পিং একটা যুদ্ধ থামানোর সমাধান সূত্র নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক মহলে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। যাহোক, জি-২০ হলো বিশ্বের প্রধান প্রধান উন্নত এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর ফোরাম। ফোরামটি বৈশ্বিক অর্থনীতির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি প্রশমন এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম। জি-২০ গোষ্ঠীর দেশগুলো বৈশ্বিক জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রক। বৈশ্বিক বাণিজ্যেরও ৭৫ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে এ গোষ্ঠীর সদস্যরা। পাশাপাশি মানবসম্পদেও ভরপুর এ গোষ্ঠী। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এই গোষ্ঠীর সদস্যগুলোর বাসিন্দা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালে গঠিত হয়েছিল গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০। এটি মূলত বিভিন্ন রাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের একটি সভা ছিল। সভার লক্ষ্য ছিল, বৈশ্বিক অর্থনীতি ও আর্থিক সংকট সমাধানের জন্য কার্যকরী নীতিমালা রচনা। বর্তমানে এই ফোরামের শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিটি সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নিয়ে থাকেন। তাই বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবারের সম্মেলনেও আছে বিস্তর আলোচনার বিষয়বস্তু। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চীন-মার্কিন উত্তেজনা, বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফিতি, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার হুমকি, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি এবং সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা।

তবে যুদ্ধ বন্ধে জি-২০ জোটকে অবশ্যই প্রভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মকে আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া যাবে না। তা ছাড়া, এ সম্মেলনের ১৬ পাতার একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ সদস্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান এই যুদ্ধের তীব্র নিন্দা করেছে। এতে আরও বলা হয়েছে এ যুদ্ধ অপরিমেয় মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে বেশ চাপে ফেলছে। সুতরাং এই বিবেচনা মাথায় রেখেই এবারের জি-২০ সম্মেলনে আগত সব নেতা যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান চাইবেন এটিই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত