ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট

স্বাভাবিক হতে ব্যবস্থা নিন
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট

আমাদের রেলে অনলাইন টিকিট নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা। আর এই সমস্যা মূল দুটি কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। একটি হলো এক্সপোর্টের অভাব আর অপরটি হলো কালোবাজারে টিকিট বিক্রি। ঘরে বসে অ্যাপসেরমাধ্যমে যাত্রীরা টিকিট পাবে, ডিজিটাল পদ্ধতির এই সুযোগ সবাই আশা করে; কিন্তু এই পদ্ধতি যাতে পুরোপুরি চালু না হতে পারে, সে জন্য আগাগোড়াই একটা অপচেষ্টার আভাস পাওয়া গেছে। ইদানিং আর একটি খবর বেড়িয়েছে, যে অনলাইনে টিকিট বিক্রির ফলে ট্রেনের টিকিট বিক্রি কমে গেছে। প্রত্যেক স্টেশনে খোঁজ নিয়ে নাকি এমন তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টা যতটুকু সত্যি, এর পেছনে অনলাইনে টিকিট বিক্রিতে নিরুৎসাহিত করার কোনো ইচ্ছা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা দরকার।

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ঘরে বসে পাবার প্রত্যাশা সবার। কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন সাধারণ যাত্রীদের কি হবে। অর্থাৎ যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে না, তারা টিকিট কীভাবে কাটবে? এ প্রশ্ন অবান্তর। কেননা, প্রতিদিন কাউন্টারেও টিকিট বিক্রি করা হবে এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য একটা কোটা তো থাকবেই, যা কাউন্টার থেকে কাটা যাবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, পশ্চিম বাংলার রেলে ঘরে বসে সব টিকিট পাওয়া যায়। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তা অনলাইনে কাটতে হয়। টিকিট আগেই শেষ হবার পরেও জরুরিভিত্তিতে ১ দিন আগে কিছু বিক্রি করা হয় এবং ট্রেন ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যায়। এতে রিজারভেশন পাওয়া যায় না, তবে যাত্রীরা গন্তবে যেতে পারেন। আর ১ দিন আগে যে টিকিট পাওয়া যায়, তাতে তাড়া একটু বেশি লাগে, তবে রিজারভেশন পাওয়া যায়। কোনো যাত্রীর কোনো রকম অসুবিধা হয় না, অধিকাংশই ঘরে বসে যেকোনো স্থানে যাবার টিকিট পেতে পারেন। আমাদের দেশেও এই ব্যবস্থা করতে হবে যে কোনো মূল্যে। কারণ কিছু কর্মকর্তার বা কর্মচারীর লাভ হতে পারে, যাত্রীদের কোনো লাভ তো হবেই না বরং দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

আমাদের দেশে ঈদের আগে ট্রেনের দারুণ চাপ লক্ষ্য করা যায়। রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সবাইকে। সারারাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে, পরের দিনেও টিকিট পাওয়া যায় না। শেষে কালো বাজারে কিনতে হয়। তাই যেভাবেই হোক, যাতে অনলাইনে টিকিট স্বাভাবিক হতে পারে, সেই ব্যবস্থাই করতে হবে। এ জন্য দরকার হলে প্রতিবেশী দেশ থেকে এক্সপোর্ট এনে অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করতে হবে। অবশ্য আমরা মনে করি অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে আমাদের দেশেই এক্সপোর্ট আছেন, তাদের কাজে লাগানো যেতে পারে, তবে পশ্চিমবাংলার তথা ভারতীয় রেলের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা বিশাল এক ব্যাপার সেখান থেকে অভিজ্ঞতা আনতে তো কোনো ক্ষতি নেই।

আমরা আশা করি, অনলাইন টিকিটে যা যা নিয়ম দরকার, যাত্রীরা সবই পালন করবেন। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্মনিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন করবেন। যারা অতি সাধারণ মানুষ কিছুই বোঝেন না অথচ ট্রেনে ভ্রমণ করেন, তারা কাউন্টার থেকে টিকিট কিনবেন। ঈদের সময় অন্য কারও সাহায্য নিয়ে আগাম টিকিট করবেন। সুতরাং অনলাইনে টিকিট কোনো অবস্থায় কোনো অজুহাত বন্ধ করা যাবে না। কারণ এতে যাত্রীদের সুবিধা ও রেলের আয় নিশ্চিত। চুরি করার সুযোগ থাকবে না। আমাদের বিশ্বাস ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইন টিকিট নিশ্চিত করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত