ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পবিত্র শবেবরাত

আত্মশুদ্ধির মহিমান্বিত রজনী
পবিত্র শবেবরাত

পবিত্র শবেবরাত সৌভাগ্যের বার্তাবহ, মহিমান্বিত রজনী। বরকতময় এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আল্লাহর অশেষ রহমত ও দয়া বর্ষিত হয়। শবেবরাত শব্দটি ফারসি থেকে এসেছে। শব শব্দের অর্থ রাত আর বরাত অর্থ মুক্তি। সুতরাং শবেবরাতের অর্থ হলো, মুক্তির রাত। শবেবরাতের আরবি হলো, ‘লাইলাতুল বরাত’, এর অর্থ দাঁড়ায় মুক্তির রজনী। হাদিসে একে ‘লাইলাতু নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। এ রাতকে তকদিরের রাতও বলা হয়। শবেবরাতের অর্থগত মানে থেকেই এ রাতের গুরুত্ব অনুধাবন করা সম্ভব। তবে এর গূঢ়ার্থ এবং মহিমা আরও ব্যাপক ও তাৎপর্যময়। এ রাতে আল¬াহ মানবজাতির জন্য তার অসীম রহমতের দরজা অবারিত করে দেন। পবিত্র এ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনের জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের সুযোগ ঘটে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ধর্মীয় ভাবগম্ভীরপূর্ণ পরিবেশে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে শবেবরাত পালন করে থাকেন।

শবেবরাত আল্লাহ কর্তৃক বান্দার জন্য অশেষ নেয়ামতস্বরূপ। এ রাতে আল্লাহ মানবজাতির জন্য কল্যাণের দ্বার অবারিত করে দেন এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পাপ ক্ষমা করে দেন। তাই শবেবরাতের যথোচিত গুরুত্ব উপলব্ধি করা অতীব জরুরি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ রাতে নফল ইবাদত-বন্দেগিতে নিমগ্ন থাকতে মুসলমানদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এ রাতে আল্লাহ মানবজাতির কল্যাণে অফুরন্ত ভান্ডার উন্মুক্ত করে দেন। হিংসুক ও শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন বলে হাদিসে বলা হয়েছে। শবেবরাতের আলোয় মানুষ সবধরনের অন্যায় পরিহার ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হতে উৎসাহিত হন। ধর্মীয় দিকের পাশাপাশি মানুষে মানুষে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে শবেবরাত অনন্য ভূমিকা রাখে। এদিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সাধ্যমতো খাবার তৈরি করে প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করেন। অনেকে দানের হাত প্রসারিত করে দেন। এভাবে মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রগাঢ় হয়।

বর্তমানে আমাদের সমাজে নানা অশুভ কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা সামাজিক অস্থিরতার এক সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করছি। নৈতিকতার চরম অবক্ষয় লক্ষণীয়। নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মানুষ সন্ত্রস্ত। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী তুঙ্গস্পর্শী অস্থিরতা মানবগোষ্ঠীকে শঙ্কাগ্রস্ত করে তুলছে। অন্যায়, অবিচার ও পঙ্কিলতা সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান। এ অবস্থায় প্রয়োজন নৈতিক শুদ্ধতা ও পরিশুদ্ধ জীবন। শবেবরাতের শিক্ষা এক্ষেত্রে আমাদের পাথেয়। তাই এ মহিমান্বিত রাতের তাৎপর্য সবাই উপলব্ধি করবেন- এটাই প্রত্যাশা। শবেবরাত সবার জন্য কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসুক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত