দেশে দিন দিন বেড়ে চলছে অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নিদুর্ঘটনা। পত্রিকা খুললে বা টেলিভিশন সামনে বসলেই দেখা যাচ্ছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর। আগুনে দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মানুষ এবং এরই সঙ্গে আগুনে পুড়ে শত শত কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্পর্কে আমরা বেশির ভাগ মানুষই অসচেতন। অগ্নিকাণ্ড কখন ঘটবে, সে বিষয়ে আগে অনুমান করার উপায় নেই। তবে আমরা যদি সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হই, তাহলে দুর্ঘটনা অনেকাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। যেহতু আগুন লাগার আগ মুহূর্তে অনুমান করা যায় না, তাই আমাদের অগ্নিকাণ্ডের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া অতীব জরুরি।
অগ্নিকাণ্ডের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হলে আমাদের জানতে হবে, কেন অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। বেশির ভাগ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে শর্টসার্কিটের কারণে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ দালানকোঠা, কলকারখানা বৈদ্যুতিক সংযোগের সঠিক নিয়ম না মেনে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপন করা। এর ফলে হুটহাট বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে অগ্নিদুর্ঘটনা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও অগ্নিদুর্ঘটনার উলে¬খযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, দাহ্য কেমিক্যাল গোডাউনে ত্রুটি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম (এসি, ফ্যান, লাইট) থেকে, বিড়ি-সিগারেট ফেলে দেয়া জ্বলন্ত অংশ থেকে ইত্যাদি।
তাই আমাদের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পেতে উপরের বিষয়াবলির ওপর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নতুন দালানকোঠা নির্মাণের সময় বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগের সঠিক নিয়ম মনে চলতে হবে। পুরাতন ভবনের বৈদ্যুতিক পুরান তার পরিবর্তন করে নতুন তার দিতে হবে। প্রতিটি দালানকোঠা, কলকারখানায়, অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে। আগুন লাগার পর উঁচু ভবন থেকে বের হওয়ার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথ বা সুড়ঙ্গের ব্যবস্থা রাখতে হবে। রান্নাঘরের গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দাহ্য কেমিক্যাল গোডাউনে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করে মালামাল সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। কেমিক্যাল কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণের জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সর্বোপরি আমাদের সবাইকে উপরিউক্ত মেনে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে এবং অন্যকেও সচেতন করতে হবে। তাহলে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে আমাদের জানমালের ক্ষতিটা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থী
ঢাকা কলেজ, ঢাকা