বিবাহ বিচ্ছেদ এড়াতে অকারণে সন্দেহ নয়

সাকিবুল হাছান

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের ঘটনা। মহামারির মতো সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রবণতা। অর্থনৈতিক অশান্তির কারণেও ভাঙন ধরেছে অনেক সংসারে। স্বার্থের সংঘাত, অর্থের অভাব, পর নর-নারীতে আসক্ত ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়া, যৌতুক, মতের অমিল আর আত্মসম্মান মোকাবিলায় চূড়ান্ত হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ।

জরিপে দেখা গেছে, বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত বর্তমানে ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩৭টি বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে, সে হিসেবে প্রতি ৩৮ মিনিটে একটি দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ডিভোর্সই দিচ্ছেন নারীরা ৩০ শতাংশ দিচ্ছেন পুরুষরা। তবে এটা শুধু শহরের হিসাব। গত ১০ বছরে শুধু ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকাতেই প্রায় ৯৩ হাজার ডিভোর্সের আবেদন জমা পড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষিত নারীদের নিয়ে সংসার পরিচালনা করতে এখনও প্রস্তুত নন ছেলেরা। তারা শিক্ষিত মেয়ের সঙ্গে সংসার করতে চান; কিন্তু শিক্ষিত মেয়ের চাকরি জীবন, তার ব্যক্তি স্বাধীনতা, তাকে কিছু বিষয়ে সহযোগিতা করা, এসবে পূর্ণ স্বাধীনতা বা সহযোগিতা করতে নারাজ স্বামীরা। ফলে একটি শিক্ষিত মেয়ের যখন আত্মসম্মানে আঘাত আসে, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন ডিভোর্সের। যেহেতু সমঝোতা শুধু নারীকেই করতে হয়, তাই মেয়েটি বেছে নেন নিঃসঙ্গ জীবন।

সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজনরা বলেছেন, শহরে ডিভোর্সের মধ্যে নারীরা এগিয়ে থাকলেও সেটা সারা দেশের চিত্র নয়। নিম্নবিত্তের বিয়ে বা ডিভোর্সের কোনো তথ্য নথিভুক্ত সব সময় হয় না। তবে নিম্নবিত্তের মধ্যে স্বামীরাই ডিভোর্স দিচ্ছে বেশি।

বিবাহ বিচ্ছেদ এড়াতে কার্যকরী উপায় হলো- আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা করুন। কারণ দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার শুরুটাই হয় চাহিদার চেয়ে অর্থের জোগান কম হলে।

বিবাহ বিচ্ছেদ এড়াতে স্যাক্রিফাইস করার মনমানসিকতা রাখুন। প্রিয় মানুষটার জন্য একটু ছাড় দিন। ঘরের কাজগুলো একসঙ্গে করুন। কখনোই একজনের ওপর সব কাজ চেপে দিবেন না? পরিবারের বড়দের সাহায্য নিন, কেন তারা বিবাহ ভাঙতে চান। বিবাহ বিচ্ছেদ এড়াতে অকারণে সন্দেহ নয়। অপরকে সন্দেহ করার আগে তার কারণ খুঁজে বের করুন।

ঢাকা কলেজ, ঢাকা