‘মুজিবের বাংলাদেশ’

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

মো. জিয়াউল হক হাওলাদার, পর্যটন বিশ্লেষক ও কলাম লেখক

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে এবং বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চলছে- Mujib's Bangladesh বা ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিং। সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ পরিস্ফুটিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন এক মহান আদর্শ এবং বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে এক মহান মূর্ত প্রতীক। তিনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের শুধু একজন মহাকাব্যিক মহানায়কই নন, আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি সৃষ্টির ক্ষেত্রেও তার রাজনৈতিক দর্শন এবং রাজনৈতিক জীবন আজ এক কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। উন্নয়শীল দেশ হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের পরিচিতিকে তুলে ধরা ও পর্যটন শিল্পের প্রচার এবং বিপণনে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক ইমেজ এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিশীলা হিসেবে কাজ করছে।

অনেক পর্যটক বিখ্যাত নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়রের জন্মস্থান অবলোকনের জন্য ইংল্যান্ডের স্ট্রেটফোর্ড উপন এভন ভ্রমণ করেন এবং নেলসন ম্যান্ডেলার বাসভবন এবং রাজনৈতিক স্মৃতি দেখার জন্য সাউথ আফ্রিকায় ভ্রমণে যান।

এ মাটির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা এবং অবিসংবাদিত ঐতিহাসিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিদেশে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব।

বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান, প্রাথমিক জীবন, ছাত্রজীবন, রাজনৈতিক কর্মজীবন, কারাগারের জীবন এবং তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বক্তৃতাসহ সবই বাংলাদেশের জন্য প্রত্যাশিত পর্যটন আকর্ষণ। বিশ্বব্যাপী এসব বিষয় ব্যাপকভাবে চিত্রিত ও প্রচার করা আমাদের দায়িত্ব¡। এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একযোগে কাজ করছে। এরই মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেছে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি নান্দনিক স্মারকগ্রন্থ। প্রধানমন্ত্রী গত ২৬ মার্চ ২০২৩ মহান স্বাধীনতা দিবসে স্মারকগ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন।

ইউনেস্কো এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণকে একটি ‘ডক্যুমেন্টারি বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে মনোনীত করেছে। তার বীরত্বপূর্ণ বক্তৃতা ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এখনও আমাদের দীর্ঘ ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণা। বিশ্বজুড়ে নিপীড়িত মানুষের অনুপ্রাণিত করার জন্য এ ভাষণকে ব্যাপকভাবে দেশে এবং বিদেশে প্রচারের কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চলছে।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই তরুণ প্রজন্মকে দেশের উন্নয়নে আত্মনিবেদিত হওয়ার জন্য অনেকগুলো অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি কবি জীবনানন্দ দাশের মা কুসুমকুমারি দাশ-এর কবিতার উদ্ধৃতি দিতেন, ‘মুখে হাসি, বুকে বল তেজে ভরা মন/মানুষ হইতে হবে- এই তার পণ।’ আমাদের বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে সাহসের সঙ্গে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পসহ সব উন্নয়নে আত্মনিয়োজিত করতে হবে।

বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একজন মহান আদর্শবান ব্যক্তিত্ব, দেশপ্রেমে অনন্য, মানবতাবাদী ও জনকল্যাণে এক মহান পুরুষ। যিনি বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের এবং নিজ পরিবারের সর্বসুখ, শান্তি, ত্যাগ করে তার ৫৫ বছরের জীবনে জেল খেটেছেন ৪ হাজার ৬৮২ দিন অর্থাৎ ১২ বছরেরও বেশি। বিশ্বের কম নেতাই আছেন যে তার রাজনৈতিক জীবনে এতোদিন জেল খেটেছেন। বাঙালির জন্য তার পরম মমতা, ভালোবাসা তাকে বাঙালি জাতির হৃদয়ে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। তাই এ মহান ব্যক্তিত্বের আত্মত্যাগ এবং দর্শন আমাদেরকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সর্বদাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।