ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মিয়ানমারের গণহত্যা ইস্যুতে গাম্বিয়া ও আইসিজে

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
মিয়ানমারের গণহত্যা ইস্যুতে গাম্বিয়া ও আইসিজে

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার মামলার বিরুদ্ধে যে আপত্তি তুলেছিল মিয়ানমার, গত বছরের জুলাই মাসে সেগুলো খারিজ করে দিয়ে মামলা চলার পক্ষে রায় দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়া মামলা করার পর অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি কয়েকটি আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের দাবি ছিল, গাম্বিয়ার এই মামলা করার অধিকার নেই এবং এই আদালতের বিচার করার এখতিয়ার নেই। তবে দীর্ঘ শুনানির পর আদালতের রায়ে মিয়ানমারের সেসব আপত্তি খারিজ করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে যে মামলা করেছে গাম্বিয়া, তার বিচারকার্য অব্যাহত থাকবে। মিয়ানমারের বক্তব্য ছিল, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় গ্রহণের কারণে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেহেতু আইসিজেতে মামলা করেনি, তাই গাম্বিয়া কোনোরকম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ না হয়ে মামলা করার অধিকার রাখে না। সেই সঙ্গে দেশটি আরও আপত্তি তুলেছিল যে, গাম্বিয়া অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি)ছায়া হয়ে মামলা করেছে। কিন্তু আইসিজের নিয়ম অনুযায়ী, কোন রাষ্ট্র মামলা করতে পারে, জোট নয়। মিয়ানমার ও গাম্বিয়া-দুই পক্ষের মধ্যে কোনো বিরোধ ছিল না বলে মামলাটি আদালতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে দাবি করেছিল দেশটি। এ ছাড়া মিয়ানমার নিজেরাও জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনের ৯ অনুচ্ছেদ স্বাক্ষর করেনি বিধায় এই আদালতের মামলা গ্রহণের অধিকার নেই বলেও মিয়ানমার আপত্তি তুলেছিল। মিয়ানমারের এসব আপত্তির বিষয়ে আইসিজে সভাপতি বিচারক জোয়ান-ই-দোনোঘুই রায়ে বলেন, গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী যেকোনো দেশ অন্য দেশের গণহত্যা প্রতিকারের স্বার্থে মামলা করতে পারে, তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় না।

গাম্বিয়া কোনো জোটের ছায়া হয়ে নয়, নিজের সিদ্ধান্তেই মামলা করেছে বলে আদালত নিশ্চিত হয়েছে। গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকেই গাম্বিয়া আদালতে এসেছে। সেই সঙ্গে মামলা করার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা জোটের কাছ থেকে আর্থিক বা রাজনৈতিক সহায়তা নেয়ার অধিকার গাম্বিয়ার আছে। দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল না বলে যে আপত্তি তুলেছে, তাও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। কারণ গাম্বিয়া ২০১৮ ও ২০১৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয়টি তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছে। যেখানে মিয়ানমারও পাল্টা বক্তব্য দিয়েছে। মামলা করার আগে মিয়ানমারের কাছে কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়ে গণহত্যা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিল গাম্বিয়া। মিয়ানমার তার কোনো জবাব দেয়নি। সেই সঙ্গে মিয়ানমার গণহত্যা সনদ অনুসমর্থন করেনি বলে যে আপত্তি তুলেছে দেশটি, সেই প্রসঙ্গে আদালত বলেছেন, এতে আদালতের এখতিয়ার ক্ষুণ্ণ হয় না। ফলে আদালত মিয়ানমারের আপত্তি নাকচ করে দিয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা দায়ের করে আফ্রিকার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া। অভিযোগে গাম্বিয়া বলেছে, রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালানোর মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে গৃহীত জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমার। দেশটি বলছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ৫৭ জাতির সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স বা ওআইসি’র পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গণহত্যার তদন্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায় দেশটি।

শুনানির পর ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি একটি অন্তর্বর্তী আদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে আদেশ জারি করে আইসিজে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় অন্তর্র্বতীকালীন রায়ে মিয়ানমারের প্রতি চারটি নির্দেশনা দেয় আইসিজে। রাখাইনে বসবাসরত সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের সুরক্ষা দেবার জন্য মিয়ানমার সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লাগাম টেনে ধরতে হবে। আদালত বলেছে, সেনাবাহিনী কিংবা অন্য যে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বাহিনী যাতে গণহত্যা না চালায় কিংবা উস্কানি না দেয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।। রোহিঙ্গা গণহত্যা সংক্রান্ত যেসব অভিযোগ এসেছে, সে সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য মিয়ানমার কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী চার মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে জমা দিতে হবে। এর পর প্রতি ছয় মাসে একটি করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এসব প্রতিবেদন গাম্বিয়ার কাছে তুলে ধরা হবে। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মামলা করার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, সে ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী কিছু করার জন্য তাগিদ দেয়া। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিমপ্রধান এই দেশটিই রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে জাতিসংঘে সর্বোচ্চ আদালত আইসিজে-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারে মিন অং হ্লাইংয়ের জান্তা সরকার যে পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেটি আন্তর্জাতিক চাপ থেকে মুক্তির একটি ফন্দি ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। আপাতভাবে মিয়ানমারের সামরিক নেতারা ভেবে নিয়েছেন, একের পর এক জাতিগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করে তারা যে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ করে চলেছেন, সেটি তাঁরা নির্বিঘ্নেই চালিয়ে যেতে পারবেন। গণহত্যাসহ অন্যান্য অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ তারা নিষ্ঠুর কৌশল প্রয়োগ করে এড়িয়ে চলেছেন।

সর্বশেষ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রহেলিকা সৃষ্টি করে জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোকা বানাতে চাইছে। কিন্তু জার্মানির নাৎসি, ইন্দোনেশিয়ার সুহার্তো ও কম্বোডিয়ার খেমাররুজ শাসকদের পরিচালিত গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে যেভাবে হয়েছে, তাতে মিয়ানমারের সামরিক শাসকরাও রোহিঙ্গাসহ একাধিক জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার অপরাধের ঘটনায় পার পাবেন না। নাৎসি শাসকরা ১৯৩০ ও ১৯৪০-এর দশকে ট্রেড ইউনিয়ন নেতাকর্মী, কমিউনিস্ট, জার্মান প্রতিবন্ধী, সমকামী, ইহুদি, রোমা ও সিন্থিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটিত করেছিল। ১৯৬০-এর দশকে সুহার্তো সরকার কমিউনিস্ট তকমা দিয়ে ইন্দোনেশিয়ান ও চীনাদের বিরুদ্ধে আর খেমার রুজরা ১৯৭০-এর দশকে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, চ্যাম মুসলিম ও খেমার বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছিল। আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমার মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া এখন চলমান। কিন্তু মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত মিয়ানমারের সেই একই সামরিক নেতৃত্ব নতুন করে একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করে চলেছে। মিয়ানমারের কারেননি, কারেন, কাচিনসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেই অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা হলো, কেন্দ্র স্থলের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা অভ্যুত্থানবিরোধী, তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি জাতিসংঘ প্রকাশ করেছে। জেনেভায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫২তম অধিবেশনে সংস্থাটির হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়েছে-মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে একটি কৌশল সবচেয়ে বেশি প্রয়োগ করতে দেখা গেছে। সেটা হলো গ্রামগুলো ও মানুষের বাড়িঘরগুলো পদ্ধতিগতভাবে ও বিস্তৃতভাবে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এক দশকের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গতিবিধির ওপর নজর রেখে জাতিসংঘ প্রতিবেদন বলছে যে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেশজুড়ে সামরিক অভিযানে অন্তত ৩৯ হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অথবা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। মাত্র পাঁচ বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তারা বাংলাদেশে চলে যায়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেভাবে শত শত গ্রাম পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেয়, তা থেকে জীবন বাঁচাতেই তারা পালিয়ে যান। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর গত দুই বছরে মিয়ানমারের সেই একই সামরিক বাহিনী একই কৌশল প্রয়োগ করে চলেছে। মিয়ানমারের ৮০ শতাংশ এলাকাজুড়ে যে সংঘাত চলছে, সেসব এলাকায় ১৩ লাখের বেশি মানুষ ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ধর্মীয় পরিচয়ে বৌদ্ধ নয় কিংবা জাতিগত পরিচয়ে বর্মিজ নয়, এমন জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জঘন্য ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের অভিযোগ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জন্য নতুন ঘটনা নয়। কয়েক দশক ধরেই তারা এটা করে চলেছে। কিন্তু এবারের সামরিক শাসকেরা নতুন যেটা করছেন, তা হলো ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ব্যাপক অজনপ্রিয় অভ্যুত্থানের সমালোচনা বা বিরোধিতা যেসব গোষ্ঠী করেছে, তাদের তারা ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল মিয়ানমার নিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানকার জাতিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের জান্তারা যে ভয়ংকর নৃশংসতা চালিয়েছে, তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী তারা। বিমান থেকে গোলাবর্ষণ, মর্টারশেল নিক্ষেপ ও গণহত্যা করেছে। পুরো গ্রাম ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে। বার্মিজ মানবাধিকারকর্মী ও নির্বাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে এক দশক আগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত ধ্রুপদি গণহত্যার ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রথম ফাঁস করেছিল।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি নির্মূল করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের ওপর তিন বছর ধরে পদ্ধতিগত নিপীড়ন চালিয়েছিল। অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি শুনে এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে কৌশল প্রয়োগ করছে, তার অসংখ্য নথি ঘেঁটে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের গণহত্যাকারী সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ যেভাবে অস্বীকার করে চলেছে এবং এ অপরাধের পক্ষে যেভাবে সাফাই গেয়েছে, নতুন গণহত্যার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তারা সেটার পুনরাবৃত্তি করবে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করা সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে দুই হাজার নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ১৫ হাজার আন্দোলনকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দল পাকানোর অপরাধে কারাগারে ঢোকানো ও নির্যাতন করা হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে বিবাদী জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নৃশংস প্রোপাগান্ডাসহ মানবতার বিরুদ্ধে অসংখ্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ জাতিসংঘের মিয়ানমার সংক্রান্ত সংস্থা ইনডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ম্যাকানিজম ফর মিয়ানমার কর্তৃক নথিভুক্ত হয়েছে। এদিকে রাখাইন রাজ্যের যে এলাকায় রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল, সেখানে আটকা পড়া পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শাসকদের তাঁদের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে দেখেন না। এদিকে শিবিরে বেঁচে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য সত্যিকারের ন্যায়বিচারের অর্থ অবশ্যই জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে মিয়ানমারের ওপর আইসিজের রায় নয়; বরং এর মানে অবশ্যই বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ভারত ও পাকিস্তানে আইনবহির্ভূত ও অমানবিক অবস্থার মধ্যে থাকা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন সবার কাম্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত