ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈদযাত্রা হোক নিরাপদ

সড়কপথে ভোগান্তি কাম্য নয়
ঈদযাত্রা হোক নিরাপদ

ঈদে সব পথেই যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে। নৌ, আকাশ, সড়ক কিংবা রেলপথে ঈদযাত্রা এবং ঈদের পর ফিরতি যাত্রায় কমবেশি সব বছরই যাত্রীদের ভোগন্তিতে পড়তে হয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সড়ক পথের ভোগান্তি বড় হয়ে দেখা দেয়। বিশেষ করে সড়কের কিছু অংশের বেহাল দশার কারণে যাত্রীরা চরম দুর্দশায় পড়েন। তারপরও দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায়গুলোর একটি সড়কপথ। তবে একাধিক মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ের কল্যাণে সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশ উন্নয়ন হলেও নিয়মিত সংস্কারের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। তাই প্রতিবছর ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষের কাছেও বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সড়ক-মহাসড়কের এ বেহাল দশা। এদিকে প্রকাশ, ১ বছর আগে সারা দেশে বেহাল সড়কের সমীক্ষা করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এতে দেখা যায়, ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ ভাঙাচোরা, যা মোট সড়কের ১০ ভাগ। সে সময় রাস্তা মেরামত ও ভালো সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ৫ বছরে ১৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা চাওয়া হয় মন্ত্রণালয়ের কাছে। তবে যথা সময়ে সে টাকা পাওয়া যায়নি। তাই আগের অবস্থাতেই রয়ে গেছে এসব সড়ক। এক রকম বাধ্য হয়েই ঈদ ঘিরে নিজস্ব অর্থায়নে এসব সড়ক সাময়িক মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। তবে তা ঈদযাত্রা কতটুকু নির্বিঘ্ন করতে পারবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেছে।

সওজের (সড়ক ও জনপথ) নিজস্ব তহবিল থেকে রাস্তা সংস্কার করছে এটা তাদের দায়বদ্ধতা প্রকাশ করছে। আমরা জানতে পেরেছি আগামী ২৫ রোজার মধ্যে সারা দেশের সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। প্রশ্ন হল সড়ক উন্নয়নের বিষয়টি কি আরও আগেই সমাধা করা যেত না? আর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে কিনা এর নিশ্চয়তা আদৌ রয়েছে কি? এদিকে জাড়াতালির সংস্কারে বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পাওে এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব। কারণ এরই মধ্যে বর্ষা এসে গেছে। চলতি মাসেই ঘূর্ণিঝড়ের আভাস দিয়েছে আওহাওয়া অধিদপ্তর। ভারি বৃষ্টি হলে পথে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। তেমনটি ঘটলে জনদুর্ভোগে পড়তে হবে ঘরে ফেরা মানুষের। সওজ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে জীর্ণশীর্ণ, খারাপ ও খুবই খারাপ সড়কের পরিমাণ ২ হাজার ৭৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে খুবই খারাপ সড়কের পরিমাণ ৪৫৭ কিলোমিটার, যা মোট সড়কের ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। অথচ ২০১২-১৩ অর্থবছরে খুব খারাপ সড়কের পরিমাণ ছিল ২৯৬ কিলোমিটার, যা মোট সড়কের ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ এক দশকে খুব খারাপ সড়কের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ এ সময় লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। বিষয়টি পরিতাপের।

দেখা যায়, সড়ক-মহাসড়কের কিয়দংশের জন্য যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যেমন ঈদে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপার পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের আশঙ্কা করছেন পরিবহন চালকরা। সাভারে এবার ঈদ যাত্রায় জনভোগান্তির মাত্রা চরমে পৌঁছার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানে একদিকে রাস্তা খানাখন্দে ভরপুর, অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দখলে গোটা মহাসড়ক। আবার চলমান বিআরটি প্রকল্পের কারণে সরু রাস্তা, বিভিন্ন স্থানে গর্তসহ বেশ কিছু কারণে এবারের ঈদ যাত্রায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা করছেন চালক ও স্থানীয়রা। এ ধরনের সড়কের অংশ দ্রুত চিহ্নিত করে সংস্কার করা হোক, পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি নিশ্চিত করা হোক। ঈদযাত্রা হোক নির্বিঘ্ন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত