ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আইসিসির মর্যাদা এবং ট্রাম্প-পুতিনের বিচার

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
আইসিসির মর্যাদা এবং ট্রাম্প-পুতিনের বিচার

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বিশ্ববাসী আমেরিকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতির আরেক দফা গতি পরিবর্তনের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসতে পারেন এবং আরেক দফা আমেরিকার গণতন্ত্র এবং বিশ্বরাজনীতিতে বিদ্যমান দেশটির ভূমিকা হুমকিতে পড়তে পারে বলে ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করছে। রাশিয়া ও চীনের বিষয়ে ওয়াশিংটনের গৃহীত নীতি সমর্থনে অধিকাংশ রাষ্ট্রেরই উদাসীনতা আছে। কারণ, গত দুই-তিন দশকের মার্কিন প্রশাসনগুলো যেভাবে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে অদলবদল করেছে, আগামী প্রশাসনও যে বিদ্যমান নীতি থেকে একেবারে উল্টো পথে হাঁটা ধরবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বুশ প্রশাসনের সাম্রাজ্যবাদী নীতি থেকে ওবামার প্রায়োগিক বাস্তবতার নীতি; ট্রাম্পের আমেরিকা ফার্স্ট শীর্ষক জাতীয়তাবাদ থেকে সর্বশেষ বাইডেনের আমেরিকার স্বমূর্তিতে ফিরে আসার নীতি আমাদের সামনে আমেরিকান নেতৃত্বের নিয়ত পরিবর্তনশীল নীতিকেই তুলে ধরে। অথচ আমেরিকার প্রশাসনের নীতিতে স্থিতিশীলতা বাকি বিশ্বের জন্য জরুরি। মস্কো ও বেইজিংয়ের ক্ষমতায় কে বসতে যাচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্বনেতাদের উৎকণ্ঠায় না থাকলেও চলে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনে কে প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে যৌক্তিক কারণেই তাদের সীমাহীন আগ্রহ থাকে। সবারই কম বেশি জানা আছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন এ আদালতের দ্বারে দ্বারে বিচারের জন্য ঘুরছে। অধিকৃত কাশ্মীর, সিরিয়ায় ঘটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো কোনো কিছুই তাদের নজরে আসেনি। অন্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ড জোর করে দখল করে বসতি স্থাপন করেছে ইসরাইল। এই আদালত গঠনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে ইরাকে যুদ্ধের কথা আমাদের মনে আছে। প্রেসিডেন্ট বুশ এবং যুক্তরাজ্যের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সারা বিশ্বকে বুঝিয়েছিলেন ইরাক মানবতাবিরোধী অস্ত্র সংগ্রহ করছে, যা মানবসমাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

এমন তথ্য হাজির করে ইরাক দখল করে ইরাকের তেল ভাণ্ডার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেশটিকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। বহু বছর ধরে ইরাক থেকে তেল লুণ্ঠন করেছে- এই দুই দেশের তেল কোম্পানিগুলো। শেষপর্যন্ত টনি ব্লেয়ারকে তার নিজ দেশেই এক ইন্ডিমনিটি গ্রহণ করতে হয়েছে ইরাক যুদ্ধের দায়ভার নিয়ে। অথচ এই আন্তর্জাতিক আদালত পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘটা স্বীকৃত অপরাধকে গুরুত্ব দেয় না, গুরুত্ব পায় শুধু মার্কিন নিয়ন্ত্রিত রাজনীতি। ইউক্রেনের যে দুইটি অংশকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে পুতিন স্বীকৃতি দিয়েছেন, সে অংশ দুটির জনগণ কী চায়- তার কোনো গুরুত্ব নেই তথাকথিত পশ্চিমা গণতান্ত্রিক সমাজের কাছে। তারা পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। আবার ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে ইঙ্গ-মার্কিন তেল কোম্পানিগুলো। অদ্ভূত এক মুদ্রা ব্যবস্থায় পৃথিবীর তাবদ মুদ্রা যখন মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে মূল্য হারাচ্ছে- তখন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির ঘটনা ঘটছে। আমেরিকার নিজের আর্থিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার শর্তেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ চলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির মতো একটি ঘটনাও প্রয়োজন ছিল মার্কিনীদের। মূলত এ যুদ্ধকে আরও জটিল রূপ দেয়ার লক্ষ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতটি এই একপেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইউক্রেন থেকে শিশুদের তাড়িয়ে দেয়ার মতো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার দুই সপ্তাহ পর নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দেয়া সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত করেছেন। এ মামলা দুটিতে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে রাজনীতির ওপর আইনের ক্রমবর্ধমান সম্ভাব্য ভয়ানক প্রাধান্য বিস্তারের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। দুটি ঘটনাই যুগান্তকারী।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যেকোনো সাবেক ও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে প্রথম ঘটনা। একইভাবে আন্তর্জাতিক আদালতগুলো এর আগে হাতে গোনা কয়েকটি দুর্বল দেশের সরকার প্রধানদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিলেও পরাশক্তিগুলোর সরকারপ্রধানদের মধ্যে এ প্রথম কোনো নেতাকে গ্রেপ্তার করতে আদালত আদেশ দিয়েছেন। এ দুটি ঘটনায় যদি দু’জনের একজনও দোষী সাব্যস্ত না হন, তাহলেও চলমান আইনি পদক্ষেপগুলো এমন গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করবে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকবে। এখন প্রশ্ন হলো, সেই নজিরগুলো সুখকর হবে কি-না এবং সেগুলোর ফলাফল ভারসাম্যের দিক থেকে ইতিবাচক হবে কি-না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত নুরেমবার্গ ট্রায়াল থেকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধকালীন কর্মকাণ্ডের আইনভিত্তিক জবাবদিহির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণই আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের মূল লক্ষ্য হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধীন। তার মানে দাঁড়ায়, এসব আদালতকে নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ স্থায়ী সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুযোগ নেই। কিন্তু আইসিসি তার গঠনগত নকশা অনুযায়ী জাতিসংঘের আওতাধীন নয়। যদিও রাশিয়া কখনোই আইসিসির এখতিয়ারকে স্বীকৃতি দেয় না। আইসিসির কৌঁসুলি করিম এ এ খান মনে করছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মানুষের মনে এ আশা জাগিয়ে তুলছে যে পুতিনকে ইউক্রেনে শিশুদের নির্যাতন করা এবং হয়তো আরও অনেক অপরাধে নির্দেশ দেওয়ার জন্য জবাবদিহি করা হবে। এমনকি পুতিনকে যদি কোনো দিন হেগের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে নাও হয়, তারপরও এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইউক্রেনে আইসিসির ভাষায়, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে অবদান রাখবে।

ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন উপদেষ্টা হ্যারল্ড কোহ বলেছেন, এ পরোয়ানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুতিনের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং তাকে আরও একঘরে করবে। অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক সাবেক আইন উপদেষ্টা ও বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের নীতিপ্রধান স্টিফেন পম্পার মনে করেন, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আন্তর্জাতিক মহলে ভয়ানক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পম্পার মনে করেন, এতে পুতিন আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারেন। বিশেষ করে, যদি এই পরোয়ানা আদালতকে সমর্থনদানের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক বিশ্বকে বিভক্ত করে ফেলে অথবা রাষ্ট্রগুলো যদি সুযোগ পাওয়ার পরও পুতিনকে গ্রেপ্তার করতে এবং হেগে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে আইসিসির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে। ট্রাম্পের বিচার কাজের মধ্যেও একই ধরনের ঝুঁকি আছে। ট্রাম্প যদি নিউইয়র্কের অপরাধ আইন লঙ্ঘন করে থাকেন, তাহলে কারাদণ্ড তার প্রাপ্য। তিনি যে একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট, তা এ ক্ষেত্রে অর্থহীন এবং এ ধরনের একজন ক্ষমতাবান লোকের সাজা হওয়া আইনের শাসনের জন্য অধিক মর্যাদা বয়ে আনবে। এ অভিযুক্তি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ক্ষতি করতে পারে এবং প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করার জন্য তাকে অযোগ্য করতে পারে। তবে এর উল্টো প্রতিক্রিয়াও আছে। নিউইয়র্ক কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন এল ব্র্যাগের এ মামলাকে এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে খুব দুর্বল মামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মামলার দুর্বলতার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, অ্যাটর্নি ব্র্যাগের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ আছে এবং এই প্রেক্ষাপট সামনে রেখে মামলাটিকে রিপাবলিকান পার্টির লোকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হিসেবে দাবি করছেন। এতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরকারি নথি চুরি করার আরও যে মামলা আছে, তাও হালকা হয়ে যেতে পারে।

ইউক্রেন বলছে, শিশু ও প্রসূতি হাসপাতালে রাশিয়া যে হামলা চালিয়েছে তা যুদ্ধাপরাধ। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে আর হাসপাতালের ১৭ জন কর্মী ও রোগী আহত হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ান সৈন্যরা পলায়নরত ইউক্রেনিয়ান বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে- এমন খবরও পাওয়া গেছে। এছাড়া খারকিভ শহরে বেসামরিক এলাকায় ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপেরও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ইউক্রেন বা রাশিয়া কেউ এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞায় স্বাক্ষর করেনি। তা সত্ত্বেও এসব ঘটনাগুলো যুদ্ধাপরাধ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে রাশিয়া ভ্যাকিউম বা থারমোব্যারিক বোমা ব্যবহার করেছে। বলা হয়, বিস্ফোরক দিয়ে তৈরি বোমার চেয়েও মারাত্মক বিধ্বংসী এ ভ্যাকিউম বোমা। এ বোমা দুই ধাপে কাজ করে। প্রথম ধাপের বিস্ফোরণে মেঘের মতো বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে জ্বালানি তেল। দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে, এই জ্বালানি তেলের মেঘ আবার বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের গোলার মতো তৈরি হয়, বড় ধরনের শক ওয়েভ বা শব্দ তরঙ্গের ধাক্কা তৈরি করে এবং আশপাশের সব অক্সিজেন শুষে নেয়। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন ইউক্রেনে আগ্রাসনটাই একটা অপরাধ। যুদ্ধের যেসব সৈন্য অপরাধ করেন, তাদের চিহ্নিত করা যত সহজ ততটাই কঠিন যেসব নেতাদের নির্দেশে তারা এটা করেন তাদের অভিযুক্ত করা। কিন্তু আইসিসি যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে আমলে নিতে পারে। এটা নুরেমবার্গ থেকেই এসেছে। যেখানে মস্কো মনোনীত বিচারক মনে করেছিলেন যে নাৎসি নেতাদের বিচার হওয়া উচিত শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে। তবে আন্তর্জাতিক আইনের বিশ্লেষক প্রফেসর ফিলিপ স্যান্ডস বলেছেন, রাশিয়া এ আদালতের সিগনেটরি না হওয়ায় আইসিসি রাশিয়ার নেতাদের বিচার করতে পারবে না।

তাত্ত্বিকভাবে, নিরাপত্তা পরিষদ আইসিসিকে তদন্তের জন্য বলতে পারে। কিন্তু স্থায়ী সদস্য হিসেবে রাশিয়া তাতে ভেটোও দিতে পারে। আইসিসির কার্যকারিতা বা আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ শুধু চুক্তির ওপর নির্ভর করে না। বরং এখানে রাজনীতি ও কূটনীতির ব্যাপার আছে। সে কারণেই অনেকে মনে করেন নুরেমবার্গের মতো এখানে সমাধান নিহিত কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক চুক্তির মধ্যে। তারা ইউক্রেনে আগ্রাসনের অপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন। প্রত্যেক দেশেরই দায়িত্ব আছে কোনো কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ বলে সন্দেহ হলে তার তদন্ত করা। যুক্তরাজ্যে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা প্রমাণ সংগ্রহসহ এ বিষয়ে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেনকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অনেকগুলো কোর্ট হয়েছে। এর মধ্যে আছে যুগোস্লোভিয়া ভাঙনের পর গঠন করা ট্রাইব্যুনাল ফর ওয়ার ক্রাইমস। রুয়ান্ডায় গণহত্যার দায়ে জড়িতদের বিচারের জন্যও একটি সংস্থা গঠিত হয়েছিল।

এখন দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) এবং দি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস (আইসিজে) যুদ্ধের নিয়মাবলী সমুন্নত রাখতে সক্রিয়। আইসিজে বিবদমান রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে কাজ করে। তারা কোনো ব্যক্তির বিচার করতে পারে না। ইউক্রেন সেখানে আগ্রাসনের দায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলার কাজ শুরু করেছে। আইসিজের রুল বা নির্দেশ যদি রাশিয়ার বিপক্ষে যায়, তাহলে সেই নির্দেশনা কার্যকরের দায় বর্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের ওপর। কিন্তু রাশিয়া নিজেই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। তারা সেখানে ভেটো দিতে পারে। আর আইসিসি সাধারণত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ইত্যাদি অপরাধের জন্য দায়ীদের অভিযুক্ত করে থাকে। এর একটি উদাহরণ নুরেমবার্গ ট্রায়াল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের বাহিনী পরিকল্পিতভাবে যে ভয়ংকর গণহত্যা চালিয়েছিল, তার মূল নায়কদেরই মূলত নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে বিচারের আওতায় আনা হয়। বিশ্বের ইতিহাসে এত বড় আকারে যুদ্ধাপরাধের বিচার ছিল এ প্রথম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত