ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পবিত্র ঈদুল ফিতর

সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বিরাজ করুক
পবিত্র ঈদুল ফিতর

এক মাসের সংযম ও ত্যাগের সাধনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতর সমাগত। বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে ঈদুল ফিতর অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হয়। এ দিনটি সাম্য, সৌহার্দ্য, ভালোবাসা ও মিলনের মহিমা নিয়ে উপস্থিত হয়। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে শাওয়ালের একফালি উদিত চাঁদ যেন বিপুল খুশির বার্তা হয়ে ধরণিতে আনন্দের ফল্গুধারা বইয়ে দেয়। রমজান মাসে ফিতরা প্রদান, জাকাত আদায় ও শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদের নামাজের ভেতর দিয়ে এমন কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়, যার প্রভাব ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে সুদূরপ্রসারী। বন্ধুত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের জন্য রমজানের শিক্ষা তাৎপর্যমণ্ডিত। বছরজুড়ে নানা প্রতিকূলতা, দুঃখ-বেদনা সব ভুলে ঈদের দিন মানুষ সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলিত হয়। ঈদগাহে কোলাকুলি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করে। লক্ষণীয়, এবার ঈদুল ফিতর এসেছে প্রকৃতির রুদ্র প্রতাপের মধ্যে, স্মরণকালের ভয়াবহ উষ্ণপ্রবাহে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। এর মধ্যে রোজা রেখেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রোজাদাররা এভাবে সংযম ও কষ্টসহিষ্ণুতার চরম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার নজির স্থাপন করেছেন। পবিত্র এ দিন উপলক্ষে আলোকিত বাংলাদেশের লেখক-পাঠক-শুভাকাক্সক্ষী ও বিজ্ঞাপনদাতাদের প্রতি রইল ঈদ মোবারক। সবার জীবন আনন্দময় হোক।

রমজানের বড় শিক্ষা সংযম। হিংসা ও বিভেদের দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সংযম ও পরিমিতিবোধ। বাস্তবতা হলো, সারা বিশ্ব আজ খুব অস্থির সময় অতিক্রম করছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। মানবতা আজ চরমভাবে পর্যুদস্ত। বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ অনেক ক্ষেত্রে বিপর্যস্ত ও নির্যাতিত। এ অবস্থা কিছুতেই প্রত্যাশিত নয়। রমজানের শিক্ষা আমাদের মানবিক হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কারণ রোজা আত্মিক বিশুদ্ধতা অর্জনের পথ দেখিয়ে দেয়। একই সঙ্গে ঈদুল ফিতরের উৎসব শুধু ভোজনের মাধ্যমে ইন্দ্রিয় তৃপ্তির উৎসব নয়, আধ্যাত্মিক সৌন্দর্য অর্জনের মাধ্যমে জীবনকে নতুনভাবে সাজানোর অঙ্গীকারও বটে। ঈদের আনন্দবার্তার মর্মমূলে রয়েছে শান্তি ও ভালোবাসা। ঈদ পারস্পরিক হৃদ্যতা ও শুভবোধের বার্তাবহ। রমজান ও ঈদের সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য ধারণ করে শান্তিময় বিশ্ব গড়ে তুলতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে। এই বিষয়টি অন্তত প্রতিটি মুসলমানের স্মরণে রাখতে হবে এবং যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।

ঈদ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ বড় শহরগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে যায়। এরই মধ্যে নাড়ির টানে নিজ নিজ জন্মস্থানে ফিরছে মানুষ। তাদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক হোক। ঈদের খুশি সবাই যেন সমানভাবে উপভোগ করতে পারেন, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া আমাদের সবার কর্তব্য। পৃথিবী সব ধরনের হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানিমুক্ত হোক! ধর্মীয় চরমপন্থা ও সন্ত্রাসের বিভীষিকা দূর হোক। আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে বন্ধন দৃঢ়তর হোক! আগামী দিনগুলো সুন্দর ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হোক। হাসি-খুশি ও ঈদের আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটি প্রাণ। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সংযম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পরিবেশ পরিব্যাপ্তি লাভ করুক- এটাই হোক ঈদ উৎসবের ঐকান্তিক কামনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত