ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জ্বলছে সুদান

মাছুম বিল্লাহ, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, [email protected]

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সুদানের রাজধানী খার্তুম ছেড়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে ঈদ আনন্দ তো দূরের কথা, মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মানুষ তাদের প্রিয় রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছে। কারণ সিটিতে গ্যাস নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে খার্তুম। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, শুধুই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব যা একটি সিটিকে, পুরো দেশকে নরক বানাতে পারে তার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে সুদান আর সুদানের রাজধানী। এক কথায় বলা যায়, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জ্বলছে সুদান। এ দ্বন্দ্ব ক্রমেই সংঘাতে রূপ নিয়ে চলছে যুদ্ধ, তুমুল লড়াই তবে বিদেশি কোনো দেশের সঙ্গে নয়, নিজেরাই নিজেদের মধ্যে চালাচ্ছে এ যুদ্ধ। ১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি গ্রেট ব্রিটেন ও মিশরের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সুদান কয়েক দফা বিদ্রোহ ও গৃহযুদ্ধের মুখে পড়েছে। রাজনৈতিক মেরুকরণের কারণে সেখানে সংঘাত-সংঘর্ষ এবং আদিবাসী ও উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিবাদ বেড়েছে। সম্পদের দখল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা-মারামারি সামরিক সংঘাতে রূপ নিয়েছে এবং সেটি পুরোনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্বকে জাগিয়ে তুলেছে। রাজধানী খার্তুমে ১৫ এপ্রিল ২০২৩ থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছে, সেটি দেশটির ৭০ লাখ মানুষকে সংঘাতপূর্ণ বাস্তবতার মুখে ঠেলে দিয়েছে। জনাকীর্ণ নগরগুলো এখন মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বিশেষ করে এর মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থা একেবারে স্থরিব হয়ে পড়ার অবস্থায় চলে গেছে। পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং বাইর থেকে খাদ্যপণ্য শহরে প্রবেশ করানো বেশ দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজধানী খার্তুমসহ আশপাশের কয়েকটি নগরীতে বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ এবং ছোট ছোট ভারি অস্ত্র নিয়ে তুমুল লড়াই চলছে। উভয়পক্ষই রাজধানী খার্তুমের দখল নেয়ার দাবি করছে।

সংঘাতের পেছনের ইতিহাস : ২০০৩ সালের আগে সুদানের দারফুর এলাকার বিদ্রোহ দমন করার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আল বশিরের সরকার যতগুলো সশস্ত্র উপজাতি গোষ্ঠীকে মাঠে নামিয়েছিল, তার একটার নেতৃত্বে ছিলেন মুসা হিলাল নামের এক যুদ্ধবাজ নেতা। তিনি দারফুরে তার গ্রুপের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ হামদান ‘হেমেদতি’ দাগালোকে। অল্প সময়ের মধ্যেই হেমেদতি নির্দয় ও নিষ্ঠুর জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেন এবং তারই নিয়োগদাতা হিলালের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে পড়েন।

২০১৩ সালে হিলাল বশির সরকারের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদ করার পর প্রেসিডেন্ট বশির একটি ডিক্রি জারি করে সব কয়েকটি সরকারপন্থি মিলিশিয়া গ্রুপকে এক করে আরএসএফ (র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস) গঠন করেন এবং তার প্রধান হিসেবে হেমেদতিকে নিয়োগ দেন। প্রেসিডেন্ট বশিরের পতন সংকট কাটানোর বদলে তাকে আরও ঘনীভূত করেছে। বশিরের পতনের পর ২০১৯ সালে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌম পর্ষদ শাসনক্ষমতা নেয়। হেমেদতিকে এ পর্ষদের উপপ্রধান অর্থাৎ কার্যত ভাইস প্রেসিডেন্ট করা হয়। এটি হেমেদতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও বাড়িয়ে দেয়। তিনি আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলেন। তিনি খার্তুম ও ১৭টি প্রদেশে শিবির গড়ে সেখানে প্রায় ১ লাখ সেনার অবস্থান ঘটান। তার পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনা ছিল মেরোই বিমানবন্দর দখল করে সেখানে বিমানঘাটি গড়া। কয়েক বছর ধরে হেমেদেতি সেনাবহিনীর আদলে অস্ত্রাগার গড়ে চলেছেন। তার অধীন পাইলটদের বিদেশে জঙ্গি বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি তার বাহিনীতে ফাইটার জেট যুক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তার সর্বশেষ লক্ষ্য ছিল সুদানের সশস্ত্র বাহিনী করায়ত্ত করা। ২০১৫ সালে সুদানের সবচেয়ে বড় বাহিনী হিসেবে আরএসএফ সৌদি আরবের হয়ে ইয়েমেনে যুদ্ধ করতে যায়। ওই যুদ্ধে আরএসএফ ও সৌদির মধ্যে যে কর্মকর্তারা মধ্যস্থতা করছিলেন, তিনিই হলেন আজকের সুদানি সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান। তিনি এর আগে দারফুরে দীর্ঘ সময় হেমেদতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাব কাজ করেছেন। হেমেদতি এবং বুরহান দু’জনেই সৌদি ও আমিরাতের নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এবং ইয়েমেনে লড়াইরত নিজের মিলিশিয় বাহিনীর কারণে হেমেদতির ভাগ্য খুলে যায়। ২০১৭ সালে সেনাবহিনীর আনুষ্ঠানিক উপাদান হিসেবে আরএসএফকে স্বীকৃতি দিয়ে সুদানে একটি আইন পাস করা হয়। সে আইনে বলা হয় যে, আরএসএফ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত একটি বাহিনী হিসেবে কাজ করবে। বাহিনীটি সরাসরি প্রেসিডেন্টের আদেশাধীনে থাকবে। এর কিছু দিন পরই সেনাবাহিনীর কাছে দুর্নীতি ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বশির অবিশ্বস্ত হয়ে ওঠায় তিনি খার্তুমে আরএসএফকে একটি সেনাঘাটি গড়তে অনুমতি দেন। ওই সময় থেকে হেমেদতি তার ক্ষমতা ও সম্পদ কুক্ষিগত করতে থাকেন এবং অচিরেই সুদানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হন। দুর্নীতির পেছনে ক্ষমতা আর রাজনীতি- এ খেলা যেন বিশ্বের সর্বত্র একই।

চলমান সংঘাতের একপক্ষে রয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপরপক্ষে আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। এ দুই জেনারেল ২০২১ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানের ক্ষমতা দখল করেছিলেন। সুদান দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিকভাবে দুর্বল কাঠামোতে ছিল। ওমর আল-বশির শাসনের পতনের মাধ্যমে দেশটি নতুন করে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে। বশিরের পতনের পর আবদুল্লাহ হামদুক প্রধানমন্ত্রী হলে দেশটিতে ফের গণতন্ত্রের চর্চা শুরু হয়। কিন্তু আল বুরহান ও হামিদতি দু’জনে মিলে তাকে প্রধানমন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেন। ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। সুদান সেনাবাহিনী দেশের আধাসামরিক বাহিনীকে বিলুপ্ত করে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। এতে হামিদতির ক্ষমতা খর্ব হয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আল বুরহানের ক্ষমতা পাকাপোক্ত হবে। দু’জনের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে দেশটিতে এ যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।

২০১৯ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের শাসনের পতনের পর সুদান ইস্যুতে আমেরিকার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ২০২১ সালে সার্বভৌমত্ব কাউন্সিলের মাধ্যমকে হামদুককে অপসারণের ফলে আমেরিকা নিরাশ হয়। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে ওয়াশিংটন সুদানে ২৫ বছর পর জন গডফ্রেকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে। আগে দেশটিতে রাশিয়া ও চীনের প্রভাব থাকায় তখন ওয়াশিংটন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়নি। সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যুদ্ধ বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। বহু বছর পর সুদানের প্রতি ওয়াশিংটনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন নতুন বার্তা বহন করে। কারণ যেখানে সুদান রাষ্ট্রটি আমেরিকার উদ্বেগের উৎস ছিল। সেখানের আমেরিকার বর্তমান তৎপরতা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়ক বলে মনে করা যেতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতি : আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় সুদানে যুদ্ধরত সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাতকে জাতিসংঘ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এ ছাড়াও দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তিন কর্মকর্তা সংঘাতে নিহত হয়েছেন, ফলে সংস্থাটি তার কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সংঘাতে দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি নিহত ও প্রায় তিন হাজার আহত হয়েছেন। টানা তিন থেকে চারদিন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দুইপক্ষ যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়েছিল। প্রস্তাব প্রথমে আসে আরএসএফের পক্ষ থেকে। বাহিনীটির প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরয়ে হেমেদতি জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এতে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ছিল। তবে আরএসএফের প্রস্তাবে শুরুতে সেনাবাহিনী রাজী হয়নি, কারণ তারা মনে করে, যুদ্ধবিরতির আড়ালে নিজেদের সংঘটিত করবে আরএসএফ। পরে সামান্য সময়ের জন্য যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে সুদানের যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি আরও কথা বলেছেন সার্বভৌমত্ব পরিষদের প্রধান এবং সেনা কমান্ডার আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের কমান্ডার মুহাম্মদ হামদান দাগালোর সঙ্গে। দুই পক্ষকেই চাপ প্রয়োগ করছেন যুদ্ধ বন্ধের। যুদ্ধ বিরতির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সুদনা রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রটির সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সম্ভব। যুদ্ধবিরতিতে দুইপক্ষ রাজিও হয়েছিল; কিন্তু সেভাবে এখনও কোনো পক্ষই যুদ্ধবিরতি মানছে না অর্থাৎ কার্যকরী কিছু হচ্ছে না এবং কোনো পক্ষই নমনীয় ভাব প্রদর্শন করছে না।

দুই জেনারেলের অনুগত বাহিনী সুদানের রাজধানী খার্তুমের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে। তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের দায় একে অপরের ওপর চাপাচ্ছে। সেনাবাহিনী ও এর প্রতিপক্ষ আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফ আলাদা বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতির প্রতি সম্মান না জানানোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনেছে। সিএনএন জানিয়েছে সুদানের যুদ্ধরিতি হট্টগোলে ভেস্তে গেছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন নিউইয়র্কে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে, এরকম কোনো ইংগিত পাইনি।’ সেনাবাহিনীর হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা রাজধানী ও অন্যান্য অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে অভিযান অব্যাহত রাখবে। এ পাল্টাপাল্টি ও দ্বন্দ্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় দেশটিতে গণতান্ত্রিক ও বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল খালেদ আল-আকিদা গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। কিন্তু আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফ কাউকে সম্মান করে না। বোঝা যাচ্ছে, কেউ কাউকে প্রকৃত অর্থে সম্মান প্রদর্শন করছে না।

এ সংঘাতের সম্ভাব্য ফল : এ সংঘাতে যদি একজন জেনারেল পরাজিত না হন, তাহলে সুদান রাষ্ট্রটি বিচ্ছিন্নতা এবং বিভক্তির পথে এগিয়ে যাবে। দেশের নিরীহ জনগণকে ভোগ করতে হবে তার ফল। এ সংঘাতে তাদের কোনো অংশগ্রহণ নেই অথচ ফল ভোগ করতে হবে তাদেরই। সুদানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাই বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে। কয়েকমাস ধরে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তারা আরএসএফের আগ্রাসী আচরণে উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তারা সেটি তাদের বিদেশি মিত্রদের জানিয়েও রেখেছিলেন। এখন দেখা যাচ্ছে, তাদের সেই উদ্বেগ মোটেও অমূলক ছিল না। মিলিশিয়া বাহিনীর জন্ম হয়েছে, একটি যুদ্ধবাজ পরিবারের মধ্যে থেকে এবং যারা আইন আদালতের কোনো তোয়ক্কাই করে না, তাদের গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের অন্তর্বর্তী পর্ষদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। যার পরিণাম আজ সুদানকে ভোগ করতে হচ্ছে। এটি না করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় যদি একটি বেসামরিক পর্ষদ গঠন করে তার অধীনে সেনাবাহিনী ও আরএসএফকে একীভূত করে রাখা হতো, তাহলে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ সুদানের পক্ষে অনেক সহজ হতো। অন্তত আজকের এ সংকটে দেশটিকে পড়তে হতো না। একটি কুখ্যাত মিলিশিয়া বাহিনীকে ক্ষমতার উচ্চস্তরে অন্তর্ভুক্ত করা রাষ্ট্রের অখণ্ডতার সঙ্গে আপস করার শামিল। এটি দেশটির অস্থিতিশীলতার গতিকে বাড়িয়ে তুলেছে। পরিণামে অরাষ্ট্রীয় সামরিক শক্তি তাদের আধিপত্যকে মজবুত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকেই শেষ পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ করে বসেছে। জনগণের ভাগ্যে কী আছে, তা দেখার জন্য বিশ্ববাসীকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এ থেকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শিক্ষা নিতে হবে।