ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাইবার বুলিং রোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা

মাহমুদুল হক হাসান
সাইবার বুলিং রোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা

বিশ্বায়নের ছোঁয়ায় আমাদের জীবনে যুক্ত হয়েছে কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও হাতের মুঠোয় স্মার্টফোনের ছড়াছড়িতে যখন তথ?্য-প্রযুক্তির জয়জয়কার, ঠিক তখনই তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারে সৃষ্টি হচ্ছে নানা রকমের বিড়ম্বনা ও সাইবার বুলিংয়ের মতো বেদনাদায়ক আতঙ্ক ও অস্থিরতা।

বর্তমানে অপরাধ জগতে এক নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এই সাইবার বুলিং।

সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করেছে এ ভয়ংকর অপরাধ তথা সাইবার বুলিং। সম্প্রতি যেসব অপরাধ ভয়ংকর রূপে দেখা দিয়েছে তার মধ্যে সাইবার বুলিং অন্যতম। সাধারণত ‘বুলিং’ বলতে বুঝায়, কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে হেনস্তা করা, হেয় অপদস্থ করে মজা করা, তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা বা অতিরিক্ত মাতামাতি করা ইত্যাদি। মানুষ সাধারণত ৪ ধরনের বুলিংয়ের শিকার হয়ে থাকে। যেমন শারীরিক, মৌখিক, সামাজিক এবং সাইবার। এদের মধ্যে সাইবার বুলিং খুবই ভয়ংকর। ‘সাইবার বুলিং’ বলতে মূলত অনলাইন ব্যবহার করে বা অনলাইনের মাধ্যমে কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে হেয় অপদস্ত করা বা হেয় করার উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত বা জনসম্মুখে কটাক্ষ করা, কারও গোপন তথ্য, ব্যক্তিগত ফটো বা ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশ করা, আক্রমণাত্মক ব্যবহার, অযথা ভয় দেখানো বা প্রাণনাশের হুমকি প্রদান ইত্যাদি।

বতর্মান সময়ের অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী ও নারীরাই সবচেয়ে বেশি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সাইবার বুলিংয়ের সর্বোচ্চ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন নারীরা।

স্ট্যটিস্টা তথ্যমতে, বাংলাদেশের শতকরা ৭৬ শতাংশ নারী বিভিন্ন সময়ে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে।

সাইবার বুলিং রোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে ২০১২ সালের ১৭ জুন প্রথমবারের মতো ‘Stop cyberbullying day’ উদযাপন করা হয়। পরবর্তী সময়ে এটা জুন মাসের তৃতীয় শুক্রবারে প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। সভ্য ও উন্নত দেশগুলো বুলিংয়ের ব্যপারে বেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ সরকার সাইবার বুলিং প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১) ক ধারায় প্রথমবার সাইবার বুলিংয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৩ বছরের জেল ও ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে।

এছাড়াও অনলাইনে সহিংসতা, হুমকি, হয়রানি সর্বোপরি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে আইনি সহায়তা পেতে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যশনাল ক্রাইম ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, হ্যালো সিটিআ্যপ, রিপোর্ট টু র‌্যাব আ্যপ এবং ৯৯৯-এ অভিযোগ করে জরুরি সহযোগিতা করা হচ্ছে। সর্বোপরি বুলিং প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে বুলিং প্রতিরোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।

লেখক ও সংগঠক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত