তীব্র দাবদাহ কমাতে পারে গাছ!

তরিকুল ইসলাম

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বেশ কিছুদিন ধরে তীব্র দাবদাহ চলছে। সামান্য বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। প্রচণ্ড এ দাবদাহের কারণে সারাবিশ্বের তাপমাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ৫৮ বছরের ইতিহাসে দেশে এবারের তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ। তাপমাত্রার এই অতিরিক্ত বৃদ্ধির প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। কয়েকদিন আগেই খুব দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। আশঙ্কাজনক হারে এ তাপামাত্রা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে নগরায়ন, শিল্পায়ন, দূষণ, কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ, ক্লোরা ফ্লোরো কার্বন নিঃসরণ ও অতিরিক্ত বননিধন। যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে এখনই যদি উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে পৃথিবীতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই অতিরিক্ত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও বননিধন বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। গাছ ক্ষতিকর কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে নেয় এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে। ফলে উষ্ণায়নের গতি কিছুটা ধীর থাকে। আমরা জানি, কোন দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় বনভূমির পরিমাণ অনেক কম। প্রায় ১৫ শতাংশের মতো, যা দিন দিন কমছেই। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও উষ্ণতা দিনি দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে দেখা দিচ্ছে খরা, ঘূর্ণিঝড় ও প্রচণ্ড দাবদাহের মতো প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ। এসব দুর্যোগ থেকে বাঁচতে সামনে গাছ লাগানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বায়ুমণ্ডল থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো উচিত। ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক বনায়নের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা, যতবেশি গাছ লাগানো হবে, ততবেশি কার্বন শোষিত হবে। সামনে গাছ লাগানোর মৌসুম আসছে, তাই এখনই প্রস্তুতি নিন, কে কয়টি গাছ লাগাবেন? গাছ লাগানোতে প্রতিযোগিতা শুরু করা উচিত। কে কয়টি গাছ লাগাতে পারে! তবেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি মরুভূমি হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। শুধু নিজে একটি বা দুইটি গাছ লাগালেই হবে না, গাছ লাগানোর এ মানসিকতা ছড়িয়ে দিতে হবে সব জায়গায়, তৈরি করতে হবে জনসচেতনতা, উদ্বুদ্ধ করতে হবে তরুণ সমাজকে। আসুন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সবাই গাছ লাগাই।

আউশনারা, মধুপুর, টাংগাইল