ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে চীন আমেরিকা ও ইউরোপ দ্বন্দ্ব

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে চীন আমেরিকা ও ইউরোপ দ্বন্দ্ব

হাজার বছরের পুরোনো নগরী কিয়েভ এক সময় ছিল রুশ সাম্রাজ্যের অখণ্ডিত রাজধানী। সে কারণেই ঐতিহাসিকরা বলেছেন, কিয়েভান রুশ। ১১৬৯ সালে বহিঃশত্রুর আক্রমণে কিয়েভ পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হলে রুশ সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তরিত হয়েছিল ভ্লাদিমিরে। এর আগে ১০ থেকে ১২ শতাব্দী ছিল কিয়েভের স্বর্ণযুগ। দীর্ঘ যুগের সেই ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি-সংস্কৃতি রুশ কিংবা ইউক্রেনের অনেকে এখনো ভুলতে পারেনি। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের জন্ম হলে ক্রমে ক্রমে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দেখা দেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও বিরোধিতা। ইউক্রেন স্বাধীন হলেও রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন এখনো মনে করেন, এ দুটি দেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নগুলো এক ও অভিন্ন। ধারাবাহিক পশ্চিমা কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের কাছে তা যেন বিপন্ন না হয়। এ অবস্থায় ইউক্রেনে রুশ সেনার ধীর ও সমস্যাসংকুল অথচ পরিকল্পিত আক্রমণের মুখে পশ্চিমা শক্তি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের কোথাও সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। তাদের উদ্দেশ্য ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে বিপর্যয়ের পর জেলেনস্কির নেতৃত্বে একটি প্রবাসী সরকার গঠন করে চলমান প্রতিরোধ সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে সম্ভবত একটি দীর্ঘস্থায়ী গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশগুলো বিশাল অঙ্কের অর্থছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রচলিত সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের সঙ্গে ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে তারা। ন্যাটোভুক্ত পোল্যান্ড থেকে তা সরবরাহ করা হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এর মধ্যে ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। সে ক্ষেত্রে কোথা থেকে বিমান হামলা পরিচালনা করবে ইউক্রেন? ন্যাটো বাহিনীর বর্তমান অবস্থান থেকে আরো পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ রাশিয়ার নিরাপত্তা কিংবা অস্তিত্বের জন্য এক বিরাট হুমকি।

যুক্তরাষ্ট্র নব্বইয়ের দশকজুড়ে বিভিন্ন সময় বলে এসেছে ন্যাটো আর পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে না। এর পর থেকে ন্যাটোকে পাঁচবার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। পূর্ব দিকে অর্থাৎ পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর আরো বিস্তৃতি রাশিয়ার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়- বলেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। সে ক্ষেত্রে কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী একটি নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কীভাবে আগ বাড়িয়ে তাদের ডেকে আনছে? এ প্রশ্নও রুশ প্রেসিডেন্টের। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য চেষ্টা করছে বেইজিং। একই সঙ্গে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে বেইজিং এই ধারণা দিতে চায় যে, মস্কো ইউক্রেনের স্বাধীনতা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টায় নেমেছে, তাতে সহযোগিতা করছে না চীন। সি জিন পিং ও জেলেনস্কির মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর ১৪ মাস পর অনুষ্ঠিত হলো। এ যুদ্ধ চলাকালে চীন ঘোষণা করেছে রাশিয়ার সঙ্গে বেইজিংয়ের বন্ধুত্বের কোনো সীমা নেই। চীনের একজন শীর্ষ কূটনীতিক ও ফ্রান্সে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লু শায়ে সম্প্রতি বলেছেন, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া সাবেক সোভিয়েত রিপাবলিকের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর আদৌ কোনো সার্বভৌমত্ব নেই। তাঁর এ বক্তব্যে চীন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। লু শায়ের মন্তব্যে ইউরোপীয়দের ভেতরে ভয়ানক যে প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, তাতে ভূত দেখতে শুরু করেছেন সি জিন পিং। এর ফলে এক ধাপ পেছনে যেতে বাধ্য হয়েছে চীন। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বেশ বেমানান একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, বাল্টিক দেশগুলোর বৈধতার কোনো সংকট নেই। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং ঘোষণা দেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্তির পর রাষ্ট্রগুলোর পৃথক সার্বভৌম-অস্তিত্ব রয়েছে। রাষ্ট্রদূত লু শায়ের তাঁর বিবৃতিতে বলেন, তাঁর এই মন্তব্য ব্যক্তিগত মতামত, এটা চীনের নীতি নয়। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র ও কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস বলে, ইউরোপ সামান্য বিষয় বড় করে তুলছে।

এত কিছুর মধ্যে চীনের একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হুমকির মুখে পড়ল। চীন চায় যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে যেন দূরত্ব থাকে। ব্রাসেলসভিত্তিক সেন্টার ফর রাশিয়া ইউরোপ এশিয়া স্টাডিজের পরিচালক থেরেসা ফালন বলেছেন, ন্যাটো জোটের প্রতি সি জিন পিংয়ের কৌশল দুর্বল হয়ে পড়ল। এটা নির্ধারণ করা সি জিনের জন্য সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত সেটা নির্ধারণ করতে হবে। ইউরোপীয়দের বিশেষ করে বাল্টিক দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট যে, তারা চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছে। চীনের যুদ্ধনীতি সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের অবস্থান প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তাঁর প্রশাসন চীনের যুদ্ধনীতির স্বাদ পেয়েছিলেন। ২০২১ সালে চীনের শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতি কর্মকর্তা ইয়াং লিছি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই বলে দোষ দেন যে, ওয়াশিংটন চীনের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। গত ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড্ডয়নরত চীনের গোয়েন্দা বেলুন ভূপাতিত করার পর বেইজিংয়ের তরফ থেকে একই আচরণের নজির দেখতে পায় ওয়াশিংটন। বাল্টিক-কাণ্ড ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁও যে সস্তা মূল্যে ইউরোপকে ওয়াশিংটন পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল, তাঁর সেই অবস্থানের ওপরও চপেটাঘাত। গত মাসের শুরুতে বেইজিং সফরের সময় মাখোঁ এ ধারণা প্রচার করেছিলেন যে, ইউরোপের পররাষ্ট্রনীতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিন্ন। কিন্তু বাল্টিক-কাণ্ডে ইউরোপের নেতারা যুদ্ধকালে চীন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে যে সমর্থন দিয়ে আসছে, সেটার প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাতে শুরু করেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, ইইউ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে চলমান ইউক্রেন সংকট প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।

সি জিন পিং ও জেলেনস্কি ফোনালাপের কথা যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, জেলেনস্কি যেখানে এটাকে অর্থপূর্ণ বলে অভিহিত করছেন, সেখানে চীন শান্তি ও সংলাপ শুরুর ক্ষেত্রে মূল অবস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। সি বলেন, সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার প্রতি যৌথ সম্মানের বিষয়টি চীন-ইউক্রেন সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি। এ ছাড়া সি আবারও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা করেন। এর পর চীনের ইউক্রেন যুদ্ধনীতির মূল্যায়নের জন্য কিছু কূটনৈতিক কসরত প্রয়োজন হবে। বেশ কিছু বিষয়ে চীন রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে। কখনোই তারা আগ্রাসনকে মস্কোর সুরে সুর মিলিয়ে যুদ্ধ বলেনি। এর পরিবর্তে বেইজিং অপেক্ষাকৃত নরম শব্দগুচ্ছ বিশেষ সামরিক অভিযান ব্যবহার করেছে। তবে রাশিয়ার আক্রমণকে বেইজিং আগ্রাসনও বলেনি। বরং ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের দায়ী করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিংবা ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধান ভলোদিমির জেলেনস্কির বর্তমান চলমান পরিস্থিতিতে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাটি বুঝতে হলে একটু পেছন ফিরে তাকাতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট সোভিয়েত রিপাবলিক (ইউএসএসআর) ভেঙে ১৫টি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পর কেউই আর সমাজতান্ত্রিক নীতি কিংবা আদর্শে পরিচালিত হয়নি। সেই পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভের গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রাইকার সময়। অনেকের মতে, মূলত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্ররোচনায়। পাশাপাশি রাশিয়া, চীনসহ বন্ধু ভাবাপন্ন রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে একটি বিকল্প বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিকল্প মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকল্পনা পুতিনের রয়েছে। রাশিয়ার হাতে এখন বিভিন্ন ধরনের ছয় হাজার ৮০০টির বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ৭০০টি বেশি।

তবু গত বছর জেনেভায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় তিনি একমত হয়েছেন যে, পারমাণবিক যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। সে কারণে পুতিন বিশ্বশান্তি নিশ্চিত করতে চান। তার পাশাপাশি রাশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ কোথায় নিয়ে যাবে তাকে? এরই মধ্যে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইউক্রেন আক্রমণ এবং তাতে এ পর্যন্ত যে সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তাকে কি গণহত্যা বলা যায়? এ ছাড়া রুশ বোমা ও আর্টিলারি গোলায় যেসব স্থাপনা ধ্বংস কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার জন্য রাশিয়ার কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে অনেক রুশ সেনা নিহত এবং এমনকি কয়েকটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। সুতরাং সেই যুদ্ধ কি একেবারেই একতরফা ছিল? সেসব নিয়ে চুলচেরা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ হবে। তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ একটি যুদ্ধবিরতির জন্য বারবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করে ব্যর্থ হয়েছেন। সে জন্য যুদ্ধ চলাকালীন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছেন অনেকে। এ কথা ঠিক যে, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা বিশ্বসহ অনেকে রাশিয়া ও তার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, নিন্দা জানিয়েছেন। পুতিন এ যুদ্ধের একটা শেষ দেখতে চান। এ ছাড়া জ্বালানি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ইউক্রেন সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ অবস্থায় রাশিয়ার নিকটতম প্রতিবেশী ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা এ অঞ্চলের সার্বিক ভারসাম্য বিনষ্ট করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বিরাট হুমকির সৃষ্টি করবে বলে পুতিন মনে করেন। কিন্তু ইউক্রেন নেতা জেলেনস্কির সামনে ছিল পশ্চিমা রোমাঞ্চ ও তথাকথিত মুক্ত বিশ্বের হাতছানি। ইউক্রেনের জনগণও সেই দোলাচলে দুলছিল অগ্রপশ্চাৎ ও চূড়ান্ত পরিণতির কথা না ভেবে।

এদিকে যুদ্ধ চালিয়ে নেওয়ার জন্য পশ্চিমারা ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের আধুনিক সমরাস্ত্র ও নগদ টাকা দিচ্ছে। কেননা, তাদের আবার আশঙ্কা হলো, রাশিয়া ইউক্রেন দখল করতে পারলে এরপর ইউরোপের অন্যান্য দেশের ওপর চড়াও হবে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সংঘাত এবং এক পর্যায়ে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। য্দ্ধু মানে ধ্বংস। যুদ্ধে কাউকে পরাজিত করতে গেলে নিজের পরাজয়ও কম হয় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারকে পরাজিত করতে গিয়ে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের তদারকি শেষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত ব্রিটেন ও ফ্রান্স ছিল বিশ্বের মোড়ল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার পরাজিত হলো। কিন্তু ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পরিবর্তে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের নতুন মোড়ল হয়। ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে যদি আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ বেধে যায়, তাহলে পশ্চিমাদের মোড়লগিরি শেষ হতে পারে। তখন চীন একক বিশ্বশক্তি, একক বিশ্ব মোড়ল হয়ে দাঁড়াতে পারে। যাইহোক, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা সময়ই বলে দেবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত