ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বৃক্ষনিধন রোধ করুন

সাকিবুল হাছান
বৃক্ষনিধন রোধ করুন

আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৃক্ষের অবদান অভাবনীয় ও অনস্বীকার্য। বিজ্ঞানের দ্বারা প্রমাণিত, বৃক্ষ আমাদের অক্সিজেন দেয় এবং আমাদের থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড নেয়। বৃক্ষ আমাদের খাদ্য দেয়, কাঠ দেয় এবং বৃক্ষ মাটির ক্ষয়রোধ করে। বৃক্ষ আমাদের পরিবেশকে সজীব ও সতেজ রাখে।

পৃথিবীকে বাসযোগ্য করেছে এ বৃক্ষ। বৃক্ষরোপণ করে লাভবান হয়নি, এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। আমরা যে অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে আছি তা বৃক্ষের কাছ থেকে পাই। এ ছাড়া বৃক্ষের কাছ থেকে খাদ্য পাই, আশ্রয়ের জন্য বাসস্থান পাই, জ্বালানি পাই, বিদ্যুতের খুঁটি পাই, নৌকার কাঠ পাই, বৈচিত্র্যপূর্ণ আসবাবপত্র পাই।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এ উপকারী বৃক্ষকেই আমরা কেটে ফেলছি। প্রতিনিয়ত বাসস্থানের জন্য গাছপালা কাটা হচ্ছে। বর্তমানে মানুষের চলাচলের রাস্তা ও পাকাকরণের তাগিদেও রাস্তার ধারের গাছপালা কাটা হচ্ছে। কিন্তু এভাবে গাছপালার বিস্তার কমিয়ে আনলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।

একটি দেশের ভৌগোলিক পরিবেশের জন্য দেশের আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা আবশ্যক। কিন্তু বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৬ শতাংশ। কিন্তু কেন এই বেহাল দশা? বৃক্ষনিধন করে ইটভাটা, মিল-কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে আর নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করছে। এই অপরিকল্পিত শিল্প-কারখানা ও নগরায়নের কারণেই মূলত নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করা হচ্ছে। এভাবে বৃক্ষনিধনের ফলে পৃথিবী যেভাবে উষ্ণ হয়ে উঠছে, তাতে অবাধে সবুজ ধ্বংস হবে। এখনই সময় এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার।

গাছপালা তো কাটা হচ্ছে আবার শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য,ে ধোঁয়ায় নিকটবর্তী গাছপালা ধ্বংস হচ্ছে। শিল্প-কারখানারও প্রয়োজন আছে। তবে তা বৃক্ষমুক্ত এলাকায় গড়ে তোলা উচিত। একটি গাছ কাটলে দুটি গাছের চারা রোপণ করতে হবে, এমন স্লোগান থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই।

সুন্দরবনেও বনদস্যুরা গাছ কেটে বিদেশে পাচার করছে। ফলে বন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক দামি ও পুরোনো গাছ, যা পরিবেশের জন্য বড় হুমকিস্বরূপ।

আমাদের একদিকে বৃক্ষনিধন বন্ধ এবং অন্যদিকে বেশি বেশি বনায়নের জন্য সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়োপযোগী। কেউ যাতে বৃক্ষ উজাড় করে অপরিকল্পিত মিল-কারখানা গড়ে না তোলে, সেদিকেও নজর দেয়া আমাদের কর্তব্য।

প্রথমত, সরকারকে সরকারি বৃক্ষনিধন ও পাচার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অতঃপর জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাড়ির আঙিনার বৃক্ষগুলো অযথা না কাটার পরামর্শ দিতে হবে। প্রাণী জগতের টিকে থাকার জন্য বৃক্ষের উপস্থিতি অনস্বীকার্য।

ঢাকা কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত