ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চলমান বিশ্ব

বৈশ্বিক জোট গঠনের খোঁজে বাইডেন ও শি জিন পিং

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
বৈশ্বিক জোট গঠনের খোঁজে বাইডেন ও শি জিন পিং

চীনের সামরিক শক্তি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভূরাজনীতির নতুন বিন্যাস হচ্ছে। এটিকে অনেকে নতুন ঠান্ডাযুদ্ধ বলে অভিহিত করছেন। এ মুহূর্তে দুটি ভিন্ন ত্রিপক্ষীয় জোটের জন্ম হতে দেখা যাচ্ছে। দুটি জোটই অদূর ভবিষ্যতে চীন যদি তাইওয়ানে আগ্রাসন শুরু করে, তাহলে বেইজিংকে কীভাবে সম্মিলিতভাবে বাধা দেয়া যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সেই কৌশলের অংশ হিসেবে জন্ম হয়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া তাদের অকাস (এইউকেইউএস) জোটের কার্যক্রম অবধারিতভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সম্প্রতি জোটটি যৌথভাবে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আগামী ৫ বছরের জন্য পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী পার্থে পারমাণবিক সাবমেরিনগুলো নোঙর করার আশা করছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ভার্জিনিয়া-ক্লাস সাবমেরিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অকাস সাবমেরিন চুক্তি ইংরেজিভাষী তিন জোটকে ইন্দো-প্যাসিফিকে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে বড় ধরনের সহায়তা করবে। বিশেষ করে, চীনের তথাকথিত ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইনে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা তৈরি হবে। পূর্ব চীন সাগর থেকে তাইওয়ান প্রণালি ও দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত অঞ্চল এই ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইনের আওতাধীন। অন্যদিকে জাপান-ফিলিপাইন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জেএপিএইচইউএস নামে আরও একটি ত্রিপক্ষীয় জোট গঠনের জন্য দর-কষাকষি চলছে। ত্রিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা রূপরেখার মধ্য দিয়ে জোটের কার্যক্রম প্রথম দৃশ্যমান হয়েছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ান ও ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইনে চীনকে রণকৌশলগতভাবে বাধা দেয়ার ক্ষেত্রে জোটটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। দক্ষিণ চীন সাগরের বেশির ভাগ এলাকায় চীন এমন রূঢ় ও অত্যুগ্রভাবে নিজের সার্বভৌমত্ব দাবি করে থাকে, যা তার প্রতিবেশীদের কোণঠাসা করে ফেলে।

এটি গোটা অঞ্চলে নৌচলাচলের স্বাধীনতা, বিতর্কিত দ্বীপের মালিকানা ও জ্বালানি সংস্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব উসকে দিয়েছে। তাইওয়ানকে চীনের নিরবচ্ছিন্ন ভীতি প্রদর্শন, বেইজিংয়ের দ্রুত বিশাল সামরিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, মহামারি মোকাবিলায় অন্য দেশগুলোকে যথার্থ সহযোগিতা না দেয়া এবং রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধকে সমর্থন দেয়া চীনের অহংকারী ও আধিপত্যবাদী আচরণকে খোলাসা করেছে। প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং প্রায়ই সরল সোজা ভাষায় বলে থাকেন, চীনের শুধু চাওয়া এমন একটি স্থিতিশীল ও উন্নত বহুমুখী বিশ্ব, যেখানে দেশগুলো বাইরের কারও হুমকি-ধুমকির তোয়াক্কা না করে নিজ নিজ নিয়মকানুন অনুযায়ী চলবে এবং যে বিশ্ব হবে পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া সংজ্ঞার ‘সর্বজনীন’ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ধারণা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। শি এসব কথা মুখে বললেও বাস্তবে চীন যে আমেরিকাকে সরিয়ে বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গায় নিজেকে বসানোর তালে আছে, তা অনেকটাই স্পষ্ট। ফিলিপাইনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার সম্পর্ক গভীরতর করার প্রয়াসে গত সপ্তাহে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তিটিকে ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সামরিক সম্প্রসারণবাদ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের বাধাদানের একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় জোট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাফল্য থাকলেও এ মুহূর্তে এ অঞ্চলে বেইজিংয়ের প্রভাব বিস্তার নিয়ে অন্য দেশগুলোর মধ্যে যে উদ্বেগ ও চিন্তা আছে, তা প্রশমনে বাইডেনকে আরও বেশি কিছু করতে হবে। হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা বলছেন, অবকাঠামো এবং অন্যান্য কারিগরি সাহায্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে চীন যেভাবে তাদের প্রভাব বলয় বাড়াচ্ছে তার মোকাবিলায় বিকল্প অভিন্ন একটি কৌশল নিতে নতুন একটি পশ্চিমা জোট তৈরির প্রস্তাব দেবেন বাইডেন।

গত তিন দশকে চীন তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় বিশ্বের একশটিরও বেশি দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে- যা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে আমেরিকা, উদ্বিগ্ন। তাদের ভয়, গত কয়েকশ’ বছর ধরে উন্নয়নশীল বিশ্বে তাদের যে প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে তা হুমকিতে পড়ছে। বিবিসির উত্তর আমেরিকাবিষয়ক সম্পাদক জন সোপেল বলছেন, আমেরিকার বর্তমান সরকার তার মিত্রদের বলতে চাইছে যে, পশ্চিমা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের শ্রেষ্ঠত্ব বাকি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। বাকি বিশ্বকে বলতে হবে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে আখেরে তাদের বিপদে পড়তে হবে, চীন মানবাধিকারের তোয়াক্কা করে না, সুস্থ প্রতিযোগিতার ধার ধারে না। জন সোপেল বলছেন, আমেরিকান কর্মকর্তারা বলতে চেয়েছেন যে, এটা চীনের সঙ্গে টক্কর দেয়ার কোনো বিষয় নয়, বরঞ্চ চীনের একটি ‘ইতিবাচক বিকল্প ‘বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। কিন্তু বিশ্বের অবকাঠামোর প্রয়োজন মেটাতে পশ্চিমা দেশগুলো কতদিনে কত অর্থ বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত তা নিয়ে হোয়াইট হাউস এখনও অস্পষ্ট। তবে একটা বিষয় খুব পরিষ্কার যে আমেরিকা মনে করে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় পশ্চিমা বিশ্বকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, চীনকে আটকাতে আমেরিকার সঙ্গে জোট বাঁধতে এখন কতটা উৎসাহী হবে ইউরোপ? সাম্প্রতিক সময়ে, শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিম ইস্যুতে আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে চীনের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজন চীনা কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর বেশি আর কতদূর এগুতে সম্মত হবে ইউরোপ। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার বর্তমান যে চিত্র তাতে চীনের সঙ্গে খোলাখুলি বড় কোনো বিবাদে জড়িয়ে যাওয়া, তাদের জন্য কষ্টকর হবে বলে অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করেন।

চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান বাণিজ্য সহযোগী দেশ। ইইউ এবং চীনের মধ্যে গত বছর বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭০ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। চীনে ইইউ জোটের দেশগুলোর রপ্তানি ছিল ২০ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।

ইউরোপের শিল্পোন্নত কয়েকটি দেশের সঙ্গে, বিশেষ করে জার্মানি এবং ইটালির সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বছরে বছরে বাড়ছে। জার্মানির বড় বড় অনেক শিল্পের প্রধান বাজার এখন চীন। এ কারণে, গত ৭ বছর ধরে দেন-দরবারের পর চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে কয়েক মাস আগে দীর্ঘমেয়াদি একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি হয়েছে, যদিও উইঘুর ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা পাল্টা-নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ওই চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন স্থগিত হয়ে রয়েছে। যদিও চীনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক এখন ততটা স্থিতিশীল নয়, কিন্তু গত ১০ বছর ধরে চীন আলাদা আলাদাভাবে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে। চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের বিআরআই-এর আওতায় ইতালি, গ্রিস, হাঙ্গেরি এবং সার্বিয়ায় অনেক বিনিয়োগ করেছে। ফলে, চীনের ইস্যুতে ইউরোপে ঐক্যবদ্ধ কোনো অবস্থান এখন আর নেই। একেক দেশের দৃষ্টিভঙ্গি এককে-রকম। আমেরিকা চীনকে যতটা হুমকি হিসেবে দেখছে, যতটা প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে, ইউরোপের অনেক দেশ সেভাবে দেখছে না, ভাবছে না। চীনকে দেখে নিতে আমেরিকার যতটা একরোখা, ইউরোপের বহু দেশই তা নয়। গত কয়েক বছর ধরে চীনকে নিয়ে আমেরিকায় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং প্রতিরক্ষাবিষয়ক যেসব সরকারি নথিপত্র তৈরি হয়েছে, তাতে পরিষ্কার যে তারা চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য একটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কিন্তু ইউরোপ এখনও সেভাবে ভাবছে না। তারপরও চীন বিশ্বাস করে আমেরিকা এখন তাদের যে চোখে দেখে, ইউরোপের দৃষ্টিভঙ্গি ততটা কট্টর নয়।

চীনের ব্যাপারে তাদের উৎকণ্ঠা রয়েছে, কিন্তু আমেরিকার মতো তাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি এখনও নেই। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা ভুল করে শি জিন পিংকে কৌশলগত মাস্টারপ্ল্যানের দিক থেকে বিশাল প্রতিভাধর নেতা বলে অভিহিত করে থাকেন। আদতে সে ধরনের প্রতিভা তার মধ্যে নেই। এ কারণেই তিনি বড় ধরনের ভুল করতে থাকেন। তার নীতিগুলো বেসরকারি ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণকে প্রসারিত করে দেশটির সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় অদূরদর্শী লকডাউন এবং আবাসন বাজারের ঋণ সংকটও ছিল তার নিজের হাতের বানানো সংকট। সর্বোপরি সি একজন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ, যিনি সব সময় নিজের ক্ষমতার ওপর দৃষ্টি মেলে রাখেন। তিনি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ‘সুরক্ষাবাদ’ বলে যে নতুন কথাটি বারবার বলে থাকেন, সেটি আসলে তার নিজের এবং দলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী আধিপত্য ধরে রাখার বিষয়ে জোর দিতে গিয়ে বলে থাকেন। শির আক্রমণাত্মক কূটনীতি তার বড় ভুলগুলোর একটি। বিশ্বকে চীনের ‘যুদ্ধংদেহী’ ভাব দেখানোর জন্য তার নির্দেশমতো চীনা কূটনীতিকরা কখনও মৌখিকভাবে, এমনকি কখনওবা শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, যা চীনের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে সাংঘাতিকভাবে ক্ষতি করেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা দুর্বল হয়ে পড়া, বাণিজ্য উত্তেজনা এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন শি গত শরৎ মৌসুমে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করার পর নিজের কূটনীতিকদের চড়া গলাকে আগের চেয়ে খানিকটা নমনীয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও শির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং আক্রমণাত্মক কূটনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে চুক্তি করেছেন, তার বলে যুক্তরাষ্ট্র এখন ফিলিপাইনে চারটি সামরিক ঘাঁটি গড়তে পারবে।

এটি চীনের ক্ষোভকে বাড়িয়ে দিয়েছে। মারকোস আসলে মারামারিতে লিপ্ত দুই শিশুর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য করতে চান। সেই সুবাদে গত জানুয়ারিতে মারকোস বেইজিং সফর করেছেন। ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো ফিলিপাইনও চীনের আধিপত্যের ভয়ে থাকে। এ অঞ্চলে দল ভারী করতে দুই পরাশক্তি ছোট ছোট দেশগুলোকে টানছে। এতে এই দেশগুলো সংকটে পড়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এই গোটা অঞ্চলে অবরুদ্ধ দ্বার উন্মুক্ত করতে চান। সেই সূত্রেই গত এপ্রিলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভিয়েতনামের নেতাদের উষ্ণ অভিবাদন জানিয়েছেন। এ মাসেই বাইডেন হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেয়ার পর কোয়াডের বৈঠকে যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া সফর করেন। ভারত ও জাপানকে অন্তর্ভুক্ত করা এই কোয়াড গঠনের মূল উদ্দেশ্যই চীনের প্রভাবের রাশ টেনে ধরা। চীনও বলছে, এ অঞ্চলে তারা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে চায়। কিন্তু অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলো এক পরাশক্তির পক্ষ নিয়ে অপর পরাশক্তির রোষানলে পড়তে চায় না। ঐতিহ্যগতভাবেই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো জোট গড়েনি, এমন ছোট দেশগুলোর অনেক নাগরিক এই দুই পরাশক্তির দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়ে চিড়ে-চ্যাপটা হওয়ার আশঙ্কা করছেন এবং সম্ভবত তারা চান তাদের সরকারগুলো কোনো পক্ষের সঙ্গে গাঁটছড়া না বাঁধুক। কারণ, প্রশান্ত মহাসাগরের দখল নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান প্রতিযোগিতা তাদের কাছে শীতল যুদ্ধের সময়কার অস্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত