ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চিনি নিয়ে নয়ছয়

কঠোর তদারকি দরকার
চিনি নিয়ে নয়ছয়

কম-বেশি সব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে অস্থিরতা, আরও স্পষ্ট করে বললে দীর্ঘদিন ধরে কারসাজি চলছে। তবে সয়াবিন, চিনি, ডিম-মুরগি এবং চিনি নিয়ে বাড়াবাড়িটা একটি বেশি মাত্রায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। চিনির দাম নিয়ে ইদানীং যা হচ্ছে, তাতে ভোক্তাদের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। চিনির দাম নিয়ে বাজারে যথেচ্ছাচার হচ্ছে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি দাম বাড়িয়ে নতুন করে চিনির মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। যদিও আগে থেকেই নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এখন বাড়ানোর পরেও নির্ধারিত দর মানছে না তারা। অতিরিক্ত দামেই চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ১১ মে কেজিতে ১৬ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনি ১২০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে আগে থেকেই বাজারে নির্ধারণ করে দেয়া দামের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে চিনি বিক্রি করেছে ব্যবসায়ীরা। এখনও সেই বাড়তি দামেই চিনি কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। তথ্য অনুযায়ী, সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসেবেই দেখা যায়, গতকাল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়েছে প্যাকেটজাত ও খোলা চিনি। যা গত এক বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ এবং গত মাসের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। যদিও গতকাল খুচরা বাজারে এর চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজধানীর কাওরান বাজার, ইব্রাহিমপুর বাজারে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত চিনি বিক্রি হয়েছে।

প্রকাশ, গত মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, এক-দুই দিনের মধ্যে চিনির দাম কমবে। দাম নির্ধারিত করে দেয়ার পরও যারা বেশিতে চিনি বিক্রি করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেন মন্ত্রী। বাজারে চিনির দাম লক্ষ্য করে বলা যায় মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সম্ভবত অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্ণগোচর হয়নি। বিষয়টি পরিতাপেরই বলতে হবে। সূত্রমতে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সরকার বাজারে চিনির দাম কয়েক দফা নির্ধারণ করে। এরমধ্যে পাঁচ দফায় চিনির দাম বেঁধে দেয়া হলেও একবারও চিনির সরকারি মূল্য কার্যকর হয়নি। এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৫ শতাংশ আরোপিত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, পরিবহন ও পরিশোধন খরচ যোগ করে প্রতিকেজি চিনির মোট খরচ পড়ে ৯০ টাকা। সেই হিসাবে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১০০ টাকায়। কিন্তু রমজানের শেষ সময় হতে বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। যদিও এতদিন সরকার নির্ধারিত পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল ১০৪ টাকা। এটা কি করে সম্ভব হল? বাজারে পণ্য-দামের নয়ছয়ে সর্বদা সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। প্রশ্ন হলো, সিন্ডিকেটে জড়িতরাও তো আকাশ থেকে আসে না? তাদের কেন চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয় না? এখানে কি রহস্য রয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।

বিভিন্ন সময়ে লক্ষ্য করা যায়, ব্যবসায়ীদের আবদারে কর্তৃপক্ষ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তা কোনো মানদণ্ডের ভিত্তিতে করা হয় তা আমাদের অজানা। তবে কখনও কখনও দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে। যেমন চিনির ক্ষেত্রে ওয়াকেবহালমহল বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারের চিনির বর্তমান বুকিং দর এবং দেশীয় বাজারের বিক্রয় মূল্যে যথেষ্ট ফারাক রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের মনিটরিং প্রয়োজন। সংগত কারণেই এ বিষয়ে সরকারের মনিটরিং প্রয়োজন। আর পণ্যমূল্যের দাম বাড়ানোর আগে অবশ্যই ভোক্তার সুবিধার কথা ভাবতে হবে। সর্বোপরি বাজার ব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত