ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদ্যুৎচালিত যানবাহন

যথাযথ প্রস্তুতি দরকার
বিদ্যুৎচালিত যানবাহন

তেল-গ্যাসের অধ্যায়ের মধ্যে এখন এসেছে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি চালানোর প্রক্রিয়া। এটা পরিবেশসম্মত ও সাশ্রয়ী হিসাবেও পরিগণিত। তথ্যানুযায়ী, এক দশক ধরে বৈশ্বিক পরিবহন খাতের অন্যতম আলোচিত ইস্যু বিদ্যুৎচালিত গাড়ি। পরিবহন ব্যবস্থাকে কার্বনমুক্ত করতে বিভিন্ন দেশ এখন জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মনোযোগী হয়েছে। এতে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চীন।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ৫৮ শতাংশই বিক্রি করেছে চীন। প্রতিবেশী ভারতও বিদ্যুৎচালিত গাড়ির প্রসারে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, চার্জিং অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা, শুল্কছাড়ের মতো সুবিধা দিয়ে আসছে। এর সুফলও পেয়েছে তারা। ভারতের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির সংখ্যা ১৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এদিকে দেশে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির প্রসার ঘটাতে চাইছে সরকার। এজন্য ‘?বিদ্যুৎচালিত গাড়ি উৎপাদন’ এবং ‘?নিবন্ধন ও চলাচলের’ জন্য নীতিমালা করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক যান চার্জিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে নির্দেশিকা। রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) মাধ্যমে ১০০ বিদ্যুৎচালিত বাস আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতকেও বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বাজারে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এটি ইতিবাচক সংবাদ।

প্রকাশতি তথ্য অনুযায়ী, সরকার চাইছে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের সড়ক পরিবহন খাতে ব্যবহৃত অন্তত ৩০ শতাংশ মোটরযান বিদ্যুৎচালিত হিসেবে রূপান্তর করতে। তবে এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারের প্রস্তুতিতে ঘাটতি দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, লক্ষ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি খাতে ব্যাপক হারে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। কিন্তু প্রণোদনার পদ্ধতি নির্ধারণ এবং প্রণোদনার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেনি।

এখন পর্যন্ত দেশে ‘ফোর হুইলার’ যানবাহনের জন্য কোনো চার্জিং স্টেশন তৈরি হয়নি। আর বাণিজ্যিক বা ব্যক্তিগত যে উদ্দেশ্যেই কেনা হোক, গাড়ি নিয়ে দেশের সম্ভাব্য সব গন্তব্যে যেতে না পারলে মানুষ কেন বিদ্যুৎচালিত গাড়ি কিনবে? অর্থাৎ প্রযুক্তিগত উন্নয়নে আগে উদ্যোগ দরকার। পাশাপাশি বিদ্যুৎচালিত গাড়ি উৎপাদন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বাজারে পিওর ইলেকট্রিক বা প্লাগইন ইলেকট্রিক যেসব বিদ্যুৎচালিত যানবাহন আছে, সেগুলোর দাম জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত যানবাহনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বরং দাম আরও বেশি। ব্যাটারির দাম অনেক বেশি। রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেশি। এ বিষয়গুলো বিদ্যুৎচালিত গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে মানুষকে নিৎসাহী করে। সুতরাং লক্ষ্য বাস্তবায়নে এ নিয়ে আরও ভাবনার দরকার। এ বিষয়ে দেশের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত