ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিরাজ করুক

মাহমুদুল হক আনসারী, সংগঠক, গবেষক, কলামিস্ট, [email protected]
রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিরাজ করুক

প্রিয় মাত্রভূমি শান্ত থাকুক। জনগণ সুস্থ ও নিরাপদে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করুক। রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিরাজ করুক। মানুষে মানুষে জনে জনে দলে দলে আন্তরিক ভালোবাসা তৈরি হোক। বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। আমার দেশের মানচিত্র প্রতিষ্ঠা করতে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন, সংগ্রাম এবং জীবনযুদ্ধ করে আজকের বাংলাদেশের জন্ম। আমার দেশের মানচিত্র। স্বাধীনতা, প্রাপ্তি এত সহজ কথা নয়। সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে যাদের ত্যাগ, অবদান, জীবন বিসর্জন তাদের সবার প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধা এবং স্মরণ করে বলছি। সংবিধান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সবাইকে রক্ষা করতে হবে। জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুসংহত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ধারা আন্দোলন অব্যাহতভাবে রাখতে হবে। যে গণতন্ত্রের চর্চায় বাংলাদেশ জন্ম হয়েছে, সেই গণতন্ত্র চর্চার রাজনীতি দেখতে চাই।

স্বৈরশাসন, ক্ষমতার শক্তি প্রদর্শন, বিরোধী পক্ষের উপর জুলুম ব্যভিচার, মামলার, নির্জাতন হামলা, গুম খুন, এ সব জঘন্য চরিত্র গণতন্ত্রের জন্য বিপরীত, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণতন্ত্রের চর্চা এবং বাধা প্রাপ্তির যথেষ্টভাবে সমালোচনা হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলন রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের চর্চার রাজনীতি ত্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। ফলে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদী চরিত্রের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। প্রকাশ্যে রাজনীতির কার্যক্রম অবাধভাবে চালু না থাকলে জঙ্গি তৎপরতা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উৎপাদন পরিচালনা বাড়তে থাকে। রাজনীতির মাঠ-ময়দান, ভাষণ, জনসভা সীমিত হলে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় আন্দোলনের জন্য। দমন নিপীড়ন কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক চরিত্র হতে পারে না। ক্ষমতার পালাবদল গণতান্ত্রিক পন্থায় ভোটের মাধ্যমে আসুক। ষড়যন্ত্র কালোটাকা পেশি শক্তির যেকোনো পন্থার ব্যবহার জনগন কামনা করে না। বাংলাদেশের জনগণ ভাত, মাছ, তরিতরকারি খেতে অভ্যস্ত। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ইচ্ছে মতো প্রার্থীকে রায় প্রদানে খুশি। নিজের পছন্দের নেতা নির্বাচনকে তাদের অন্যতম খুশির কাজ। বিপরীতভাবে অন্য পথে অগণান্ত্রিক যে কোনোভাবে ক্ষমতা গ্রহণ এ দেশের জনগণ মোটেও সহ্য করে না। বরং কঠোরভাবে এসব কার্যক্রমকে ঘৃণা করে এবং প্রত্যাখ্যান করে। এটি বাংলাদেশের জনগণের একটি মৌলিক চরিত্র বলা যায়।

স্বাধীন বাংলাদেশের এ পর্যায়ে বাস্তব গণতন্ত্র চর্চা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। ভিন্নমত পোষণকারীর প্রতি সদাচরণ এখন রাজনীতিতে দেখা মিলছে না। দিন যত আসছে এর চর্চা রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। যে দলই ক্ষমতায় আরোহণ করে, সে দল আর ক্ষমতার চেয়ার সহজেই ছাড়তে চায় না। সারা জীবনই ক্ষমতার চেয়ার আলিঙ্গনে রাখতে চায়। সে জন্য দমন-নিপীড়নে চরম পথ ও পন্থা অবলম্বন করে। এটি মোটেও গণতন্ত্রের স্বভাব ও চরিত্র হতে পারে না। এসব চরিত্র মোটেও এদেশের সহজ সরল মানুষ পছন্দ করে না।

এদেশ গণতান্ত্রিকভাবে লাখো শহীদের তরতাজা রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের চিন্তা-চেতনা ভোটাধিকার মানবাধিকার সেটি জনগণ কানায় কানায় চায়। জনধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ দলে দলে মিছিলে মিছিলে আন্দোলন সংগ্রামে বিশ্বাসী। তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে-ময়দানে আন্দোলন করতে চায়। বাস্তবে এসবই হচ্ছে গণতন্ত্রের কর্মসূচি রাজনীতি চর্চা এখন এক প্রকার গৃহবন্দি। মন খুলে জনগণ তার ভাব প্রকাশ করতে পারছে না। তাদের কণ্ঠ চিপে ধরে রাখা হয়েছে। বর্তমানে অবাধ গণতন্ত্র বাকস্বাধীনতা মত প্রকাশ একটি জায়গা থেকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। সংবাদপত্র সেটি এখন প্রায় বিজ্ঞাপন সেন্টারে পরিণত স্বাধীন মত জনগণের মনের কথা তুলে ধরতে পত্রিকার পাতায় সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো একটি সেন্টার থেকে স্বাধীন সংবাদপত্রের বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। মনে হয় দিন দিন মগের মুল্লুকের জুলুমের দিকে ধাবিত হচ্ছি। যেভাবেই হোক দেশের জনগণ নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চায়। যার যার ধর্ম মুক্ত স্বাধীনভাবে চর্চা করতে চায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাত বিষয়ে নিশ্চয়তা চায়। শিক্ষিত যুব সমাজ উপযুক্ত কর্মসংস্থান চায়। দুর্নীতির চরিত্র থেকে চিরজীবনের জন্য মুক্তি চায়। দেশের অর্থ-সম্পদ পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনের ব্যবহার চায়। দেশ এবং স্বাধীনতাবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র জনগণ প্রয়োজনে আরেকটি যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিহত করবে। বাংলাদেশ এদেশের জনগণের চিন্তা-চেতনায় চলবে। যে কোনো শক্তি পরাশক্তির ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা জনগণ প্রতিহত করবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে গণতন্ত্রের চর্চার উন্নয়ন দেখতে চাই। আমাদের দেশ এবং সরকার দেশের জনগণের মতামতে চলবে। বাংলাদেশ এবং এদেশের জনগণ সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং পারস্পরিক বন্ধুত্বের মাধ্যমে চলবে। কারো হস্তক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না। জনগণের প্রত্যাশা সব দলের অংশগ্রহণ ও সহাবস্থানের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী কার্যক্রম ও রাজনীতি পরিচালিত হোক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত