ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বৃদ্ধি পাক বৃক্ষরোপণ হোক জলবায়ু প্রশমন

আলী আহসান
বৃদ্ধি পাক বৃক্ষরোপণ হোক জলবায়ু প্রশমন

সুজলা সুফলা এই বাংলাদেশের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য ষড়ঋতু। বারো মাসের আবর্তনে আমাদের রক্তমাংসের এই শরীরে ছয় রকম অনুভবের সৃষ্টি করে করে ছয়টি ঋতু।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঋতুর পালাবদল ঘটে। বিশেষ করে আমাদের কাছে তিনটি (গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল ও শীতকাল) ঋতু প্রকটভাবে দৃশ্যায়িত হয়ে থাকে।

গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল ও শীতকাল আমাদের শরীরে গরম ও ঠান্ডার অনুভূতি দেয়। তবে বর্তমানে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে অতি গরম থাকে অন্যদিকে শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা অতি ঠান্ডা হয়ে যায়। বাংলাদেশে ষড়ঋতুগুলো সময়ের বিবর্তনে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলাচ্ছে। মৌসুমি সময়ে বৃষ্টির নিয়মিত দেখা এখন আর পাওয়া যায় না।

সমগ্র বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। একটা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে বর্তমান পৃথিবীর তাপমাত্রা এখন ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে।

ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে ও বিভিন্ন এলাকায় অসময়ের বন্যার দেখা মিলছে।

এছাড়া বায়ুমণ্ডলে অন্যতম একটি উপাদান গ্রিন হাউস গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ঊনবিংশ শতকের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত দুই দশকে বেড়েছে ১২ শতাংশ, যা প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য হুমকি স্বরূপ দেখা দিচ্ছে।

বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণেও বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বাড়ছে। গাছপালা কার্বন ধরে রাখে। ফলে, সেই গাছ যখন কাটা হয় বা পোড়ানো হয়, সঞ্চিত সেই কার্বন বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত হয়।

সম্প্রতি জলবায়ু রক্ষার্থে এক অভিনব ও অনবদ্য উদ্যোগ নিয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। তথ্য মতে, ২০২৩ আইপিএল এর প্লে অফের প্রতিটি ম্যাচে প্রতি ডট বল পিছু ৫০০টি করে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই।

ভারতবাসীর কাছে আইপিএল নিঃসন্দেহে বিনোদনের সেরা একটি মাধ্যম। আর এর মধ্যে এরূপ মহৎ উদ্যোগ ভারতবাসীর আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলেছে। আইপিএলেও নতুন মাত্রা যোগ দিয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে বিনোদন ও জলবায়ু রক্ষা এ যেন একের মধ্যেই দুই।

এই রকম বিভিন্ন উদ্যোগ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশেও নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করি। বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে গাছপালা লাগানো হোক। অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় আমাদের দেশে বিভিন্ন কিছুর শুভ উদ্বোধন করতে বিভিন্ন আয়োজনের স্মৃতি হিসেবে বৃক্ষরোপণ করা হয়ে থাকে, যা নিঃসন্দেহে এক মহৎ কাজ।

বৃক্ষরোপণ বাড়াতে সরকার প্রতিনিয়ত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২১’-এর উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন,

‘আজকে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমি নিজে বৃক্ষরোপণ করলাম। সেই সঙ্গে সব দেশবাসীকে আহ্বান জানাব, যার যেখানে যতটুকু জায়গা পান, গাছ লাগান।’

এছাড়া সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল পুষ্পকানন’ গড়ে তোলার প্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা আমাদের দেশে সূর্যের লাল আভায় সবুজের শীতল হাওয়া ছড়িয়ে দেবে বলেই আশাবাদী। এভাবেই ‘বাড়ুক বৃক্ষরোপণ, হোক জলবায়ু প্রশমন’।

এজন্য গাছ লাগানোটা যেমন জরুরি, তার থেকেও বেশি জরুরি গাছ না কাটা। একটা গাছ লাগিয়ে যদি ২টা গাছ কেটে ফেলি তবে দেখা যাবে হিতে বিপরীত হবে। আর জন্য আমাদের ব্যক্তিপর্যায়ে বেশি সচেতন হতে হবে।

শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত