শিক্ষাদীক্ষা

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষার অবস্থান কোথায়?

মাছুম বিল্লাহ, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, [email protected]

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

গোটা বিশ্বের চ্যালেঞ্জিং অথনীতির মুখে আমাদের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে বাজেট করা একটি দুরূহ ব্যাপার, অত্যন্ত কঠিন কাজ। অথর্নীতির প্রচলিত নিয়মে এটি বাঁধা যায় না। যে হারে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, বাড়ছে এবং বাড়বে তা কোনো অর্থনৈতিক নিয়ম মেনে হচ্ছে না। এটি কার বা কাদের নিয়ন্ত্রণে সেটিও বলা মুষ্কিল। তবে, জনগণ রাষ্ট্রের কাছেই দাবি করবে- এটিই স্বাভাবিক। তারা রাষ্ট্রকে কেউ কেউ সাধ্যমতো, অনেকেই সাধ্যের বাইরে ট্যাক্স প্রদান করছেন। যদিও যাদের ট্যাক্স প্রদান করার কথা অনেক, যেটি করতে পারলে সাধারণ জনগণ তথা রাষ্ট্র প্রকৃত অর্থেই উপকৃত হতো, সেটি রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করতে পারছে না বরং বিভিন্ন অজুহাতে ও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে এসব ধনিক শ্রেণি বরং রাষ্ট্র থেকে আরও গ্রহণ করছে, যার জের বহন করতে হচ্ছে জনগণকে। তাই বলা হয়ে থাকে যে, বাজেট একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং বাজেট প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক মীমাংসার ধারাবাহিকতা দ্বারা নির্ণীত হয়। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের কর্মসংস্থান, আয় ও সঞ্চয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। নতুন দরিদ্র তৈরি হচ্ছে। দারিদ্র্যসীমার নিচের অর্ধেক বা ৯ শতাংশ তথা দেড় কোটি মানুষ নতুন দরিদ্র। আনুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থানের অনুপস্থিতিতে টিকে থাকতে, আত্মকর্মসংস্থানে বাধ্য হচ্ছে। বিআইডিএসের জরিপ অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে দরিদ্রদের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের হার ২০২২ সালে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষই আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছে না। বেঁচে থাকার তাগিদে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছে। তাদের ঋণের বোঝা বাড়ছে। মোট কথা, বাংলাদেশের মানুষের অর্থনীতি ও জনজীবন ভয়ংকর এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। এই সংকটকালের বাজেটে শিক্ষার অবস্থান কোথায় হবে, সেটি সহজেই অনুমেয়।

এই অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষা খাতে টাকার অঙ্কে মোট বরাদ্দ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য আসন্ন অর্থবছরে মোট ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরে ছিলো ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। জিনিসপত্রের চড়ামূল্য, সাধারণ বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির কারণে এক বছর থেকে আরেক বছর স্বাভাবিকভাবেই খরচ বেড়ে যায়, এটি নতুন বা উল্লেখ করার মতো কোনো সংবাদ নয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য এবার ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি চলতি অর্থবছরে ছিল ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এই বাজেটকে ‘শিক্ষা ধ্বংসের বাজেট’ বলেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা। তারা বলছেন, জিডিপির অনুপাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্ত জনগণকে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত। জিডিপির অনুপাতে বাজেটে কম বরাদ্দ শিক্ষার প্রতিটি স্তরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। জনগুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে যেমন বাজেট কমেছে তেমনি শিক্ষা খাতেও কমেছে। ইউনেস্কোর মতে, কোনো দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা দরকার। সেখানে এ বছর শিক্ষা খাতে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত বাজেটে এটি ছিল ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এটি ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। নতুন অর্থবছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষার জন্য মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা শিক্ষা খাতে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ২০২৩-২৪ সালের উন্নয়ন বাজেট মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ১১ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। সবই নিম্নমুখী। শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার এবং মানবিক অধিকার। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার শিক্ষা সংকোচনের পথে হাঁটছে, অপরদিকে শিক্ষার অধিকার থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য যে চ্যালেঞ্জগুলো শনাক্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো- সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ, লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতি উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, রিজার্ভ বাড়ানো, অপরিশোধিত তেল সংগ্রহ এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ও আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে শিল্প ও ব্যবসায় কম সুদে ঋণ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে শিল্প ও ব্যবসায় কম সুদে ঋণ প্রদান, সামাজিক মুদ্রা সরবরাহ নিশ্চিত করা। বৈদেশিক খাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। শিক্ষার সমস্যার জন্য কোন চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় নেই বাজেটে। অথচ আমরা অর্থনীতি নিয়ে, কর্মসংস্থান বাড়ানোর কথা বলি, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আসার কথা বলি- এর সবগুলোই কিন্তু শিক্ষাবিষয়ক কথা। শিক্ষার গোড়ার বিষয়গুলো চিন্তা করলে, কারিগরি শিক্ষাকে প্রকৃত অর্থে অগ্রাধিকার দিলে জাতীয় অর্থনীতি তার সুফল পেত; কিন্তু এ সব কোনো বিষয় কিন্তু বাজেটে আসেনি।

বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্নভাবে অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এখানেও জনগণ আশা করতে পারে যে, এটি রাষ্ট্রের হাতে থাকতে হবে। সেটি তারা দেখতে পাচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষার কী হবে? অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব যেভাবে জনগণের জীবনকে নাকাল করে ফেলেছে, সেখানে শিক্ষা নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? তবে, অদ্ভুত দু-একটি বিষয় যেটি বাজেট সংক্রান্ত তবে শুধু ২০২৩-২৪ সালের বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, দীর্ঘদিনের বাজেটের সঙ্গে সংযুক্ত। যেমন, প্রতি জেলায় একটি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। এই ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা যুক্তিসংগত সেটি ভেবে দেখা প্রয়োজন। কারণ বিশাল জনসংখ্যার জন্য উচ্চশিক্ষার পুুরো দায়িত্ব রাষ্ট্রকে কেন নিতে হবে? প্রথমত, সব নাগরিকের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাষ্ট্র সেখানে একটি বিশাল সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ ৬৫ হাজার ৬২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি রাষ্ট্র পরিচালিত। এটি একটি চমৎকার বিষয়; কিন্তু মানের দিক থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান তলানিতে। এটি নিয়ে রাষ্ট্রকে প্রচুর কাজ করতে হবে। তারপর আসে মাধ্যমিক শিক্ষা। সেটি আছে হযবরল অবস্থায়। মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ন্ত্রিতই হচ্ছে বেসরকারি পর্যায়ে। বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। এটি না সরকারি, না বেসরকারি। সেনাশাসিত সরকার একটি দ্রুত সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বেসরকারি শিক্ষকদের রাষ্ট্র থেকে প্রণোদনার বিষয়ে। সেটি দেখা যাচ্ছে একটি দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্র থেকে তাদের অনুদান দেওয়া হতো তিন মাস পর পর, যেটি প্রতিমাসে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো এবং এই বিষয়টিই মোটামুটি একটি স্থায়ী পদ্ধতি হিসেবে ‘এমপিও’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেল। এটি মাধ্যমকি শিক্ষা পরিচালনার বিষয়ে প্রকৃত সমাধান নয়, এটি ছিল দ্রুত ও আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত। অথচ এ নিয়ে শিক্ষক নেতারাও তেমন কিছু বলছেন না। মাধ্যমিক শিক্ষাটা পরিচালিতই হচ্ছে এই এমপিও নামক রাষ্ট্রীয় সহায়তার মাধ্যমে, যেটি কোনো স্থায়ী পদ্ধতি হতে পারে না। তার পরও হাজার হাজার বেসরকারি শিক্ষক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন তাদের বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হবে, তাদের অর্থনৈতিক টানাপড়েন অনেকটাই কমবে, তারা শিক্ষাদানে অধিকতর মনোনিবেশ করতে পারবেন। কিন্তু প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ অথবা এমপিওভুক্তির কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না। মাধ্যমিকের বিশাল শিক্ষা ব্যবস্থাটি এই ধরনের একটি অস্থায়ী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, মান তলানিতে অথচ রাষ্ট্রীয় টাকায় আমরা এত এত বিশ্ববিদ্যালয় বানাচ্ছি। বেসরকারি ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়ায় শিক্ষার মানের অধোগতি রোধ করার কথা চিন্তা না করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করা কেমন সিদ্ধান্ত তা আমাদের বুঝে আসে না। এখানে মানসম্মত শীক্ষার্থী আসবে কোথা থেকে? তারা পাস করে সবাই বিসিএস পরীক্ষার জন্য লাইন দিবে; অথচ দেশের মানুষ চিকিৎসা করাতে যাবে দেশের বাইরে, দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ করানোর জন্য ভারত, শ্রীলঙ্কা আর উন্নত দেশ থেকে প্রযুক্তি আমাদানি করতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সব লাঠিয়ালদের দখলে, এখানে নেই কোনো আবিষ্কার, নেই প্রকৃত গবেষণা। শিক্ষার্থী যারা পড়াশোনা করছে, তারা প্রশাসনিক ক্যাডার হওয়ার জন্য মরিয়া, আর যারা পড়াশোনা করছে না, তারা রাজনৈতিক ক্যাডার হওয়ার প্রতিযোগিতায় ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করছে প্রতিদিন। আর যাদের একটু সাধ্য আছে তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে, সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে প্রচুর ডলার। ডলার দেশে আনার প্রকৃত পরিকল্পনা এই শিক্ষার মাধ্যমে নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যদি লাঠিয়াল বাহিনীমুক্ত করে প্রকৃত পড়াশোনার জায়গা বানানো যেত তাহলে আমরা প্রচুর বিদেশি শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করতে পারতাম, যা আমাদের অর্থনীতিকে সবল করত।

বাজেটে বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এটি আরও বাড়িয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখে উন্নীত করা হবে। ১০৯টি হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ লাখ তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হাইটেক ২০৪১ সালের মধ্যে ২ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বর্তমানে ১৭৬ দেশে ১ কোটি ৪৯ লাখ কর্মী কাজ করেন। নতুন বাজার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। নতুন বাজার খোঁজা মানে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে আর সেজন্য দরকার শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানো। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি প্রয়োজন। কিন্তু স্মার্ট নাগরিক তৈরির পূর্বশর্তই হচ্ছে শিক্ষা; অথচ জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে শিক্ষার অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে সুকৌশলে। যারা সংসারের অন্যদিকের খরচ কমিয়েও ভাবতেন যে, তাদের সন্তানরা লেখাপড়া করুক সেটি আরও কঠিনতর হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে শিক্ষা উপকরণের দামও যেভারে বেড়েছে, সেটিও ভীষণ বিপদে ফলেছে জনগণকে। যে বঞ্চনার জন্য আমরা স্বাধীন হয়েছি, শিক্ষা ক্ষেত্রে সেই বৈষম্যের রেখা যেন ইচ্ছে করেই স্ফীত করা হচ্ছে। যত ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা তা পাবেন মুষ্টিমেয় কিছু সরকারি শিক্ষকরা, আর বেসরকারি শিক্ষকেেদর কিছুই বাড়ছে না। যদিও রাষ্ট্রের শিক্ষার বিশাল অংশের দায়িত্ব তারাই পালন করছেন। শিক্ষার এই বৈষম্য আর কতকাল থাকবে? কোনো বাজেটই কি এর প্রকৃত সমাধান বাতলাবে না?