ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাজেট পর্যালোচনা

জিডিপি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে

মো. মাঈন উদ্দীন, অর্থনীতিবীদ, [email protected]
জিডিপি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে

‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেট নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট- দেশের অর্থনীতিতে যখন চলছে নীরব মন্দা ডলার সংকট, আমদানি ও রপ্তানিতে নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীর গতি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তীব্র লোডশেডিং এ জনগণ দিশেহারা এমন প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবিত বাজেট অনেকগুলো চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যেখানে রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এত সামগ্রিক ঘাটতি হবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ঘাটতির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বাকি ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নিতে হবে সরকারকে। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রির মতো ব্যাংকবহির্ভূত ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে বাকি ২৩ হাজার কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের মূল বাজেট ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এটি সংশোধন করে ১৭ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার গত অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড়। বাজেট জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। সরকার মূল্যস্ফীতি লাগাম ৬ শতাংশের মধ্যে টেনে রাখতে চায়।

প্রস্তাবিত বাজেটে যেমন কিছু ভালো দিক আছে, তেমনি আছে কিছু অসংগতি, আছে চ্যালেঞ্জ এবং উচ্চাভিলাষিতাসহ বাস্তবসম্মত নয় এমন বিষয়ও। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা বললেও অগ্রযাত্রার রূপরেখার কথা বলেননি। বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বেড়েছে। এ সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে সাধারণ কর দাতাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাজেটে সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি উৎসাহজনক। বাজেটে দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে আগের উদ্যোগগুলো অব্যাহত রাখা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও যা কোনো অবস্থায় অর্জন সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ মাত্র ১ বছরের ব্যবধান ব্যক্তির খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। প্রস্তাবিত বাজেট গরিবদের জন্য ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ভালো উদ্যোক্তা। তবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কীভাবে এ জায়গায় আসবে, সেই নির্দেশনা নেই। মূল্যস্ফীতির মাসের পর মাস ৯ শতাংশের ওপরে। ডলারের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। রিজার্ভের পরিমাণ না বাড়লে শিল্পে কাঁচামালের আমদানি ঘাটতি অব্যাহত থাকলে উৎপাদন বিঘ্ন হতে থাকবে, ফলে মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্য ৬ শতাংশের ঘরে আনা উচ্চভিলাষী চিন্তা। মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান-এর একটি উক্তি : উল্লেখ করা যেতে পারে। ১৯৮১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন ডোনাল্ড রিগ্যান। সেই সময়ের মূল্যস্ফীতি দেখেই তিনি বলেছিলেন মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ছিনতাইকারীর মতো হিংস্র, সশস্র ডাকাতের মতো ভয়ংকর এবং খুনির মতোই প্রাণঘাতী। উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে বাঁচতে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক কৌশল হিসেবে পণ্যের চাহিদা কামানোর কৌশল গ্রহণ করে। বাড়ায় নীতি-নির্ধারণী সুদ হার এবং মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে দেয়। তাই জনগণকে মূল্যস্ফীতির অব্যাহতি বৃদ্ধির আজাব থেকে মুক্ত করতে বাজেটে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপকে নির্দেশনা থাকা উচিত। সাধারণ মানুষ চায় একটু স্বস্তিতে জীবন কাটাতে। তারা চায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, যাতে তাদের আয় অনুসারে সাধ্যের মধ্যে কিনতে পারে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা ইত্যাদির দাম যদি লাগামহীন হারে বাড়তে থাকে, তাহলে বাজেটের আকার কি হলো তা জনগণের কাছে গুরুত্বহীন। বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে কর রাজস্ব ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৫০ হাজার ও বৈদেশিক অনুদান থেকে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। মোট করের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) উৎস থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি ও নন এনবিআর থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যদিও চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে এনবিআর। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় ৬টি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করলে তা থেকে উত্তরণের সুস্পষ্ট নির্দেশনা উল্লেখ করেননি। বাজেটের মাধ্যমে সুসময়ে ফেরার ব্যবস্থা নেই। নেই তেমন কোনো চমক, বাজেটের ব্যয় বাড়ানোর বড় ব্যবস্থা থাকলেও আয় বাড়ানোর বড় ব্যবস্থা নেই। বাজেটে মুদ্রা বিনিময় হার সমন্বয়, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, কৃচ্ছ্রসাধন, নীতি সুদ হার বৃদ্ধি, কৃষি ঋণ ইত্যাদি বিষয়ে বলা হলেও এসব পদক্ষেপের কারণে মানুষের সামগ্রিক জীবনযাত্রার ব্যয়ের ইতিবাচক প্রভাব পরবে কি-না তার নিশ্চায়তা দেয়া হয়নি।

বাজেটে পুঁজি বাজার উন্নয়নের কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূলধনের জোগান শুধু ব্যাংকের উপর নির্ভর না করে পুঁজি বাজারকে শক্তিশালী করা উচিত। অথচ বাজেটে পুঁজি বাজারের উন্নয়ন নীতিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বাজেটে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা উল্লেখ নেই। অথচ রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষিত শ্রমিক বিদেশে পাঠানো, কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা বাজেটে থাকা উচিত ছিল। বাজেটে কিছুটা স্বস্তি পাবে মধ্যবিত্ত করদাতারা। যার অনেক দিন পরে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে, তবে আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে সরকারের কতগুলো সেবা নিতে গেলে রিটার্ন জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এখানে প্রশ্ন যার আয়কর কর যোগ্য নয়, তার কাছ থেকে কোন যুক্তিতে কর নেয়া হবে। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ বাজেটের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যার প্রায় ৪০ শতাংশই খরচ হবে ৩টি খাতে। সুদ বাবদ, নিরাপত্তা ও জনপ্রসাশন খাতে সুদ পরিশোধে যাবে ১১.৯ শতাংশ স্তরে ১২.৪ শতাংশ। তাছাড়া ডলারের দর বাড়লে তা আরও বেশি হতে পারে। জনপ্রশাসনিক ১৯.৯ শতাংশ স্থলে ২২ শতাংশ। বাজেটে ব্যাংক খাতকে স্বস্তি দেয়ার মতো কোনো নির্দেশনা দেখা যায়নি। ২০০৯ সালে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে খেলাপি ঋণ আদায় ও ব্যবসায়ীদের নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরও খেলাপি ঋণের এ ঊর্ধ্বমুখিতা ব্যাংক খাতের জন্য অশনিসংকেত। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রাহকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ঋণের বিপরীতে আদায়ের হার কমে যাচ্ছে। তাই অর্থঋণ আইন ২০০৩-কে আরও শক্তিশালী করা দরকার এবং আইনের প্রয়োগ দীর্ঘসূত্রিতার স্থলে দ্রুত ঋণ আদায়ের হার বাড়ানো যেতে পারে। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা দীর্ঘদিন থেকে একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের কথা বললেও তার ব্যাপারে বাজেটে কোনো ঘোষণা নেই। বাজেটে রাজস্ব আয় বাড়নোর জন্য একাধিক গাড়িতে পরিবেশ সারসার্জের কথা বলা হয়েছে। এটি ভালো উদ্দ্যোগ। তবে ভ্রমণ কর বাড়ানো ঠিক হয়নি, এতে বিদেশগামী কর্মীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাজেটের সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়ানো হয়েছে। তবে বাজেটে ৫০ টাকা বাড়ানো প্রস্তাব খুবই নগণ্য। বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রায় সময় ৩০-৩৫ শতাংশ অনিয়ম দেখা যায়। এই অনিয়ম দূর করতে পারলে এ খাতের আওতায় উপকারভোগীদের সংখ্যাও আরও বাড়ানো যেত। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়। অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে মানুষের মাথাপিছু বরাদ্দ ৪৪ হাজার ৮৬৩ টাকা। এ হিসেবে ঋণ মাথাপিছু বরাদ্দের প্রায় আড়াইগুণ। বিশ্লেষকদের মতে, সরকার কর আদায় করতে না পারায় ঋণের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা ও খাদ্যপুষ্টির মান বৃদ্ধি ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অর্থনীতিতে কৃষির বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ টাকার অঙ্কে বাড়লেও খাত ওয়ারী শতকরা দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে। কৃষি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের শতকরা ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এ বরাদ্দ ছিল ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। তবে অর্থমন্ত্রী কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন কোনো পরিকল্পনার কথা বলেননি।

নতুন অর্থবছরে কৃষি খাতে কৃষি উপকরণের জন্য সহায়তার কথা বলা হয়েছে। সব কৃষককেই স্মার্টকার্ড দেয়ার উদ্যোগের কথা বলা হলেও, তবে কাগজে কলমে কৃষকদের নানা সহায়তার কথা বলা হয়েছে। সরেজমিনে সত্যিকার কৃষকরা এসব সুযোগ-সুবিধা ঠিকভাবে পাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ আছে। নানা অনিয়ম ও মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবের কারণে মাঠপর্যায়ে কৃষকরা-এর সুফল পেতে অনেকটা বঞ্চিত হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলার সংকট নিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য খুব বেশি সুখবর না থাকলেও করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করায় কিছুটা স্বস্তি দেবে বটে; কিন্তু আবার সরকারি-বেসরকারি ৪৪ সেবা পেতে ২ হাজার টাকা কর প্রদান করতে হবে। বাজেটের আকার যাই হোক না কেন, বাজেট বাস্তবায়ন করাই মূল বিষয়। এটা নির্ভর করবে প্রশাসনিক দক্ষতা, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও সর্বোপরি দেশপ্রেমের ওপর। বাজেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হ্রাস, মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা, মধ্যবিত্তদের জীবনযাত্রা স্বস্তি ফিরে আসুক, এটাই সবার প্রত্যাশা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত