ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নিরাপদ হোক ঈদযাত্রা

সাকিবুল হাছান
নিরাপদ হোক ঈদযাত্রা

ঈদ মনকে দেয় আনন্দ। বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় ভালোবাসা-প্রীতি। আত্মীয়দের প্রতি তৈরি করে সহানুভূতি। মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। তবে বাংলাদেশের ঈদের সঙ্গে আসে ভোগান্তি। ঈদে মানুষের বাড়ি ফেরার ভোগান্তি দেখা খুবই দুঃখজনক। ঈদের আনন্দ করার অধিকার বুঝি সবার নেই! ঈদে বাড়ি ফেরার যে দুর্ভোগ, তা কিন্তু হঠাৎ করে বা এক-দুদিনের নয়। বছরের পর বছর একই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি হয়। কিন্তু কারও যেন কিছু যায়-আসে না।

আমাদের দেশের বেশির ভাগ যাত্রী সড়কপথে বাড়িতে আসা-যাওয়া করে। তাই যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য, সড়কপথে ফিটনেসবিহীন বাস, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া বাস বা অন্য কোনো যানবাহন চালাতে না পারে সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতা করে কেউ যেন যানবাহন না চালায়, এ ব্যাপারে চালকদের সর্বোচ্চ সতর্ক করে দিতে হবে।

ঈদ এলে দেখা যায় ট্রেনের টিকিট না পেয়ে যাত্রী ছাদে উঠে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটলে দায়ভার রেল বিভাগের ওপর পড়ে। তাই কেউ যাতে ট্রেনের ছাদে উঠতে না পারে বা ঝুলে যেতে না পারে সেদিকে কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। নদীপথে ঈদের সময় ফিটনেসবিহীন লঞ্চ যেন নামতে না পারে কিংবা লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী যেন না ওঠানো হয়, সেদিকেও কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি রাখতে হবে।

সবাই চায় ঈদের আনন্দটা প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে। কিন্তু এই আনন্দটুকু পেতে আমাদের যে লম্বা দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তার দাম অনেক বেশি। তারা জানেন বাড়ি ফেরার আনন্দের মূল্য আসলে কত। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট পাওয়া আর লটারির টিকিট পাওয়া সমান কথা। ঈদের আগে ট্রেন, বাস কাউন্টারগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়; কিন্তু অনেকেই তাদের কাঙ্ক্ষিত টিকিট পান না যা খুবই হতাশাজনক। সরকারের কাছে আবেদন, ঈদ সামনে রেখে গাড়ির টিকিটের মূল্য দ্বিগুণ করা হয়, এই বিষয়ে কঠোর নজরদারির প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ছোট একটি দেশ। জনসংখ্যার চাপে এই দেশটিকে আরও অসুস্থ মনে হয়, কারণ বাংলাদেশের সবকিছু ঢাকা কেন্দ্রিক। কাজের খোঁজে, ভাগ্য বদলাতে ঢাকায় ছুটে আসা মানুষের শেকড় থাকে গ্রামে, যেখানে তাদের নাড়ি পোঁতা। তাই সুযোগ পেলেই তারা ফিরে যেতে চান গ্রামে। ঈদে সবাই যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে এবং উৎসব শেষে কর্মস্থলে ফিরতে পারে, সেজন্য দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে যাত্রীরা যদি একটু সতর্ক থাকে, তাহলে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হতে পারে। এই ঈদে সড়কপথে যাতে যাত্রীদের কোনো বিড়ম্বনার শিকার হতে না হয় সে বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে। তাই আমাদের ঈদ যেন শুধু আনন্দই নিয়ে আসে, দুর্ভোগ নয়।

শিক্ষার্থী

ঢাকা কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত