চি ঠি প ত্র

ফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিই

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। ফুল হচ্ছে শুভ্রতা, শান্তি ও ভালোবাসার প্রতীক। একটা সময় ছিল যখন বৈশাখে রাস্তায় বের হলেই দেখা যেত থোকা থোকা লাল কৃষ্ণচূড়া মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, শেষ বিকেলের নরম রোদ ঝরে পড়া কৃষ্ণচূড়ার পাপড়িতে প্রতিফলিত হয়ে যেন রাজপথ রঞ্জিত করে আছে। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি সোনালু এবং জারুল যেন পথিককে স্বাগতম জানানোর জন্য অপেক্ষায় আছে। ভোরের শিশির যুক্ত সরষে ফুল এবং সন্ধ্যার ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার সঙ্গে গাঁদা ফুলের সুঘ্রাণ ছাড়া যেন একরকম অসম্পূর্ণই থেকে যেত শীতকালটা। আগে আগে ফাগুন এলেই সঙ্গে নিয়ে আসত হাজারো প্রজাতির ফুলের সমাহার। অজস্র রকমের রঙিন সেই ফুলের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠত রঙিন প্রজাপতি ও ভ্রমরের দল। মাঠেঘাটে দেখা মিলত বিরল প্রজাতির অসংখ্য ফুলের। সন্ধ্যা হলেই সৌরভ ছড়াতে শুরু করত বেলি ফুলের দল এবং রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুবাস ছড়াত হাসনাহেনা আর ভোর হতে না হতেই সারা উঠান শিউলি ফুলের গন্ধে ম ম করত। কাঁঠালিচাঁপার সম্মোহনী গন্ধে সকাল-সন্ধ্যা মৌমাছির গুনগুন শোনা যেত। বর্ষা এলেই ছেলেপেলেরা দল বেঁধে বিলে যেত শাপলা ও পদ্ম কুড়াতে।

কোথায় গেল সেইসব দিন! আজও প্রকৃতিতে বর্ষা আসে, ঋতুর পালাবদলে শীত, গ্রীষ্ম, ফাগুন সবই আসে; কিন্তু রংবেরঙের সেই ফুলগুলো! তারা তো সবাই আসে না! অনেক প্রজাতির ফুলই প্রকৃতি থেকে হয়েছে বিলুপ্ত এবং অনেক প্রজাতির ফুলের সংখ্যা দিনের পর দিন কমে আসছে। যার ফলে আজকাল আগের মতো সেই অজস্র ফুলের সমাহার আর চোখে পড়ে না। ফুল যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভূমিকা রাখে, তেমনি মানুষের মনকেও করে স্নিগ্ধ। কিন্তু আজকাল শহরে তো দূরের কথা গ্রামেই আগের মতো তেমন একটা ফুলের গাছ চোখে পড়ে না। এর ফলে ব্যাপক অর্থে দায়ী আমরা মানুষরাই। অতিমাত্রায় বৃক্ষনিধনই বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বিলুপ্তির প্রধান কারণ।

আসুন আমরা সবাই বেশি বেশি করে ফুলের চারা ও বীজ বপন করি এবং ফুলকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করে পৃথিবীব্যাপী এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিই। পৃথিবী হোক ফুলের, পৃথিবী হোক মানুষের। আসুন আমরা সবাই মিলে সেইসব দিনগুলোকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসি, যেই দিনে বর্ষা এলেই সঙ্গে নিয়ে আসবে গুচ্ছ গুচ্ছ কদমফুল, শিমুলের লালে রঞ্জিত হবে ফাগুন এবং গ্রীষ্মের তীব্রতায়ও শুভ্রতা ছড়াবে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল।

মো. হাসিবুল হাসান হিমেল

শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ