ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পর্যালোচনা

কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে

আফতাব চৌধুরী, সাংবাদিক ও কলামিস্ট, বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত
কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে

বি শ্বায়নের এ সময়ে শুধু বাজার দখল নয় কৃষিযোগ্য ভূমি দখলের এক গোপন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বহুজাতিক বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো বিশ্বময় চরে বেড়াচ্ছে কম পুঁজি খাটিয়ে স্বল্পমূল্যে শ্রম ক্রয় করে কিভাবে তাদের মুনাফা আরো বাড়ানো যায় সে ফন্দিতে। বিশ্বব্যাঙ্ক, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা ইত্যাদি আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থাগুলো এখন বহুজাতিক বাণিজ্য সংস্থাগুলোর পথ প্রশস্ত করতে তৃতীয় বিশ্ব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেদার ঋণদানের বদান্যতা দেখাচ্ছে। ঋণদানের শর্তগুলো পর্যালোচনা করলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় তাদের বদান্যতার পেছনে রয়েছে এমন কিছু উদ্দেশ্য, যাতে রাঘববোয়াল বাণিজ্য সংস্থাগুলোর ঋণ গ্রহীতাদের অঞ্চলে প্রবেশের পথ কণ্টকশূন্য হয়। এর আগে এসব বাণিজ্য সংস্থা পুঁজি ও প্রযুক্তি শুধু নিজ দেশে সীমিত রেখে উৎপাদিত উপাদানগুলো বিশ্ববাজারে সরবরাহ করত। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেখা গেল এ ব্যবস্থায় তাদের মুনাফার পরিমাণ ক্রমে কমে আসছে এবং উৎপাদিত সামগ্রীর কাটতি হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে কাঁচামাল সংগ্রহের ব্যয়বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তারা এখন নিজেদের পুঁজি ও প্রযুক্তি উভয় নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে, যেখানে কাঁচামাল ও বাজারের বিস্তৃতি বেশি, একই সঙ্গে শ্রমমূল্য তুলনামূলকভাবে কম।

বিষয়টি খুব সহজে বোঝা যাবে একটিমাত্র দৃষ্টান্ত দ্বারা। কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ট্রান্সক্রিপ্ট রচনার ক্ষেত্রে মার্কিন মুলুকে সে দেশীয় একজন কর্মীকে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয় সে কাজটি বাংলাদেশ বা তৃতীয় কোনো দেশে কোনো কম্পিউটার কর্মীকে দিয়ে করে নেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করায় অর্ধেক খরচ পড়ে। অর্থাৎ অর্ধেক শ্রমমূল্য দিয়ে আমেরিকার কোনো কোম্পানি অনায়াসে এ অঞ্চল থেকে কাজ করে নিয়ে মুনাফার অনুপাতকে বাড়িয়ে নিতে পারে। শিল্পের ক্ষেত্রে একই কথা বলা চলে। পর্যাপ্ত কাঁচামাল যেখানে রয়েছে তার ধারে-কাছে যাতায়াত সুবিধাযুক্ত কোনো স্থানে শিল্পকারখানা গড়ে এবং সস্তা স্থানীয় শ্রমকে কাজে লাগিয়ে বেশি লাভের কড়ি গোনা যায়। জমি সংগ্রহ করে দেয় নির্দিষ্ট দেশের সরকার আর পুঁজি ও প্রযুক্তি নিয়ে গেঁড়ে বসে বহুজাতিক বাণিজ্য সংস্থা। আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থাগুলোর শর্তাবলি রক্ষাকবচ রূপে কাজ করে এসব বাণিজ্য সংস্থাগুলো। বর্তমানের উদার অর্থনীতির এটি হলো মূল তত্ত্ব।

ইদানীং উন্নত দেশগুলোর প্রচণ্ড মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে জ্বালানি তেল। জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ভান্ডার মধ্যপ্রাচ্যে। সে ভান্ডার যত কমে আসছে উত্তোলন ক্ষেত্রে তত নিয়ন্ত্রণ আসছে, মূল্যও বাড়ছে। শিল্পে উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের জ্বালানির চাহিদা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে চাহিদা মিটাতে প্রত্যেক দেশকে প্রভূত অর্থ-ব্যয় করতে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহে। এর ফলে এসব দেশকে এখন বিকল্প জ্বালানির কথা ভাবতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারগুলো উৎসাহিত করছে পরনির্ভরতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য। দূষণ ও বিপদ হ্রাসের জন্য কয়লা, খনিজ তেল, পরমাণু ইত্যাদির পরিবর্তে বায়ু, পানি, জৈব পদার্থ ইত্যাদি থেকে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশেষভাবে জোর দেয়া হচ্ছে। জৈব পদার্থ থেকে বিকল্প জ্বালানির সন্ধান গুরুত্ব পাওয়ার ফলে কৃষি ভূমির ওপর চাপ বাড়ছে।

এক্ষেত্রে বর্তমান আমেরিকার কথা ধরা যাক। সংগৃহীত তথ্য এ কথা বলছে, সে দেশে তরল জ্বালানির ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার জন্য বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ইথানলকে কাজে লাগানো হচ্ছে। ইথানল তৈরি হচ্ছে ভুট্টা থেকে। ভুট্টা সে দেশের এক প্রকার খাদ্য উৎস। এটি থেকে মার্কিনিদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার বহু উপকরণ তৈরি হয়। ক্যান্ডি, চিপস, পানীয় ছাড়া এক ধরনের সিরাপ তৈরি হয় ভুট্টা দিয়ে, যা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য তৈরিতে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভেড়া, শূকর, মোরগ ইত্যাদি প্রাণীর খাদ্যে ভুট্টা অপরিহার্য। সুতরাং সে দেশে ইথানল তৈরিতে বেশি পরিমাণে এ শস্য ব্যবহৃত হওয়ার ফলে মানুষ ও পশু-পাখির খাদ্য টান পড়া শুরু হয়েছে। যদিও ভুট্টা ছাড়া বার্লি, গম, গাছ, ঘাস ইত্যাদি এমনকি বর্জ্য পদার্থ থেকে ইথানল তৈরি সম্ভব। সে দেশে ভুট্টা চাষ বেশি হওয়ায় এটির ওপর বেশি চাপ পড়ছে ইথানল তৈরিতে। অন্যদিকে ইথানল ও গ্যাসোলিন মিলিয়ে যে জ্বালানি তৈরি হচ্ছে, সেটির জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে, কারণ এটির দূষণ যেমন কম হয়, তেমনি এতে জ্বালানি খরচও কম।

অন্যদিকে সে দেশের মধ্য অঞ্চলে ইথানল শিল্প-কারখানা ছড়িয়ে পড়ছে দারুণভাবে। চাষিরা অন্য ফসল বাদ দিয়ে নগদ অর্থলাভের জন্য কৃষিজমিতে ভুট্টা চাষ বাড়িয়ে চলছে। ফলে একদিকে যেমন অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমে আসছে, তেমনি খাদ্য হিসেবে ভুট্টার পরিমাণ চাহিদার তুলনায় কম পাওয়া যাচ্ছে। চাষিরা তাদের উৎপাদিত ভুট্টার অধিকাংশ বাজারজাত করার পরিবর্তে ইথানল কারখানাগুলোতে সরবরাহ করছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, এরই মধ্যে মেক্সিকোতে ব্যাপক আন্দোলন হয়ে গেছে। সেখানকার অন্যতম প্রধান খাদ্য ভুট্টাজাত দ্রব্য। সেগুলোর দাম বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, তা স্বল্পবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। শস্য উৎপাদন ক্ষেত্রে এখন যদি চাহিদা মেটাতে ভুট্টা চাষ বাড়িয়ে দেয়া হয়, তবে অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমে যাবে। অথচ খাদ্যশস্য হিসেবে সেগুলোর প্রয়োজন রয়েছে। এর মধ্যে সে দেশে ভুট্টা থেকে ইথানল উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি মার্কিন নাগরিকের খাদ্য বাবদ ব্যয় বেড়ে গেছে। সমীক্ষা বলছে, আগামী ছ’বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ দানাশস্য উৎপাদিত হবে তার অর্ধেকের বেশি চলে যাবে ইথানল তৈরিতে। ফলে খাদ্যশস্যের প্রভূত অভাব দেখা দেবে এবং অধিক মূল্যে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে অন্য দেশ থেকে।

এ বাস্তব অবস্থা থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। কৃষি উৎপাদন ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া আবশ্যক। ভারতে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। সম্প্রতি ভেরেন্ডা বা জ্যাট্রোফা থেকে ডিজেল তৈরির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। ফলে বহুজাতিক বাণিজ্য সংস্থাগুলোর দৃষ্টি পড়েছে সেসব বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের কৃষিজমির ওপর। বিভিন্ন কোম্পানি সরাসরি সরকার বা চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করছে বীজ সরবরাহ ও ক্রয়ের এবং ব্যাংকের সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে চাষের প্রয়োজনে সহজ ঋণ গ্রহণের জন্য। কোম্পানির কাজ হবে বীজ বা চারা বিক্রয় ও প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে কৃষকদের সাহায্য করা এবং একটি নির্দিষ্ট মূল্যে ফসল কিনে নেয়া।

বহুজাতিক কোম্পানি আমাদের দেশের কৃষিজমি যেনতেনভাবে তাদের দখল নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যেমন- মঙ্গাপীড়িত নীলফামারী অঞ্চলের এক সময়ের অনাবাদি জমি বহুজাতিক কোম্পানির লোকেরা সল্পমূল্যে ক্রয় করে বেশিরভাগ জমি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমি সংগ্রহে অন্যান্য জেলাতেও তারা তৎপর রয়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো শস্য ক্ষেত্রে অধিক উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে একদিকে উৎপাদিত পণ্য বিষাক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আবাদি জমির গুণগত মান হ্রাস পাচ্ছে। এসব নানা কারণে কৃষকরা স্থানীয় পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনে মার খাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে একদিকে কমছে আবাদি জমি, অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্য উদারীকরণ। সার, বীজ, কীটনাশক এবং কৃষি উপকরণের ওপর বহুজাতিক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ দেশের সার্বিক কৃষিব্যবস্থাকে নাজুক অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন-হুমকি দেখা দিচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তনে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পাল্টে যাচ্ছে ফসল, ফসলের বীজ, চাষাবাদ, সংরক্ষণ, সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি। নতুন হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন হচ্ছে। আবার বীজ থেকে শুরু করে সার প্রয়োগ পদ্ধতি, কীটনাশক ওষুধ- সবই নিয়ন্ত্রণ করছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এ মহাপ্রলয় থেকে রক্ষা পেতে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের দেশের মাটি, পানি ও আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে হতে হবে অধিক সজাগ ও সচেতন- অন্যথায় পরিস্থিতির উন্নয়ন আশা করা যায় না।

এক্ষেত্রে অন্য আরো একটি দিকে কৃষককুলকে প্রখর দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা দেখছি, কিছু সংখ্যক বীজ উৎপাদনকারী বহুজাতিক বাণিজ্যিক সংস্থা এদেশে ধান, গম, তুলা, পাট ইত্যাদির উন্নত ফসলের নামে এক ধরনের জৈব প্রযুক্তিতে পরিবর্তিত বীজের ব্যবসায় খুব আগ্রহী হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের বীজ ব্যবহার আইন করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এদেশে সরকারি নিষেধাজ্ঞা বহাল করা হয়েছে। ফাঁকফোকর দিয়ে এসব বীজ দেশে চালাবার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এ বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো। তারা বিভিন্নভাবে বুঝাতে চাইছে যে, এসব বীজে ফসল উৎপাদন ভালো হয় এবং কৃষকদের যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা হাইব্রিড নামে বিভিন্ন ধরনের তরিতরকারি পাচ্ছি, যেগুলোর মৌলিক স্বাদ-গন্ধ সব বদলে গেছে। এগুলো আমাদের শরীরে কতটুকু উপযোগী এবং আগের প্রাকৃতিক সবজির কতটুকু খাদ্যগুণ এতে রয়েছে, সেটি আজো পরীক্ষিত হয়নি। ফলে এগুলো আমাদের শরীরে কী ধরনের বিক্রিয়া ঘটাচ্ছে, সে সম্পর্কে আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছি।

বহুজাতিক সংস্থাগুলো যে বীজ আমাদের দেশে চালু করতে চাইছে, সেগুলো একবার মাত্র ফসল দিতে সক্ষম। ধানের কথা ধরা যাক। এ সংস্থাগুলোর জৈব প্রযুক্তিতে উৎপন্ন বীজ প্রথমবার বপনের পর যে ধান পাওয়া যাবে, তা থেকে চাল তৈরি হলে পরবর্তী ফসলের জন্য এ ধান বীজরূপে রাখলে তা থেকে আর ধান উৎপন্ন হবে না। আরো মারাত্মক ব্যাপার, এ ধানের ফুলের রেণু বাতাসে বাহিত হয়ে যেসব ধান ক্ষেতে পড়বে, সেগুলোর দ্বিতীয়বারের জন্য বীজরূপে ব্যবহারের সম্ভাবনা নষ্ট করে দেবে। এর অর্থ হচ্ছে, একবার কোনো উপায়ে এসব বহুজাতিক বীজ বাণিজ্য সংস্থাগুলো যদি এ দেশের কৃষিক্ষেত্রে প্রবেশ করাতে পারে, তবে প্রতিবছর ফসল উৎপাদনের জন্য নতুন করে বীজ কিনতে হবে কৃষককুলকে। অর্থাৎ কৃষকদের ভান্ডারে নিজস্ব বীজ বলে যেমনি কিছু থাকবে না, তেমনি এদেশে যে বিভিন্ন ধরনের ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপন্ন হয়, তার বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। কৃষককুলের হাত থেকে তখন বীজ সংরক্ষণের সম্পূর্ণ অধিকার চলে যাবে এবং এসব বাণিজ্যিক সংস্থার ওপর ফসল উৎপাদনের জন্য আমাদের সম্পূর্ণ নির্ভর করতে হবে।

এ অবস্থায় আমাদের কৃষককুলকে শুধু সতর্ক থাকলে চলবে না, প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ফসলের আদিম বীজ নিজেদের স্বার্থে সংরক্ষণ করতে হবে এবং হাইব্রিডের মোহ থেকে মুক্ত হয়ে দেশীয় বিভিন্ন আদি ফসল ও সবজির বীজ সংরক্ষণ চালু রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকার কারণ এটাও যে, উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বা ব্যবসা করার মতো জমি নেই। তাছাড়া দীর্ঘমেয়াদি এ ধরনের প্রকল্প থেকে কোনো লাভ হবে- এমন ধারণা তাদের নেই। সে জন্য বহুজাতিক সংস্থাগুলো এখন ছুটে বেড়াচ্ছে অন্য দেশের জমি গ্রাস করার উদ্দেশ্যে। তারা কৃষককুলকে নানা ধরনের রঙিন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে কোনোভাবেই এদের ফাঁদে পা দেয়া উচিত নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত