ডেঙ্গু কর্নার ও ওয়ার্ড চালুর নির্দেশনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় এমন কোনো মানুষ নেই, যার কোনো না কোন আত্মীয়স্বজন কিংবা পরিচিতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হননি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এই রোগের চিকিৎসাপ্রাপ্তি সহজতর করার জন্য সরকার একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা অপ্রতুল ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় সরকার দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পৃথক ডেঙ্গু কর্নার চালু করার নির্দেশনা দিয়েছে। সেই সঙ্গে মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। তবে ওই দিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ২৩৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৭৫৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪৮৩ জন ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গু সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গত ১০ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে ও আগের দিন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভাগুলোতে বেশ কয়েকটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসব সিদ্বান্তের মধ্যে উল্লেখিত নির্দেশনাটি অত্যধিক গুরুত্ব পায়। অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গু রোগীর রোগ নির্ণয়ের সুবিধার্থে সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু টেস্ট ১০০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকা নির্ধারণ, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, টিভিতে স্ক্রল, রেডিও বার্তা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা বৃদ্ধি, ঢাকা শহরে ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গু রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে মহাখালীর ৮০০ শয্যাবিশিষ্ট ডিএনসিসি হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা, সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যু কমাতে আপডেটেড ডেঙ্গু চিকিৎসা গাইডলাইন সরবরাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কন্ট্রোল রুম খোলা এবং জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা পেতে ১৬২৬৩ হটলাইন সেবা চালু।

ওই দিন দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার ৬৯ জন ভর্তি ছিল। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে মোট ভর্তি ২ হাজার ৭০৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ভর্তি রোগী ১ হাজার ৩৬১ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ভর্তি হয় ১৭ হাজার ৩৮২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ১১ হাজার ৭৫৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫ হাজার ৬২৫ জন। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯৩ জনের। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ হাজার ২২০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।