টিসিবির পণ্যে এবার চাল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তার ফসল

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরা এখন থেকে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে চাল কেনারও সুযোগ পাচ্ছেন। রোববার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। টিসিবির মাধ্যমে চাল বিতরণ কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর চিন্তার ফসল। কেননা প্রধানমন্ত্রীই জনসাধারণের জন্য টিসিবি থেকে তেল, ডাল, চিনির মতো নিত্যপণ্য সুলভ মূল্যে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। খাদ্য মানুষের প্রধান মৌলিক অধিকার। দরিদ্র জনগোষ্ঠী সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির চাল কিনতে পেরে স্বস্তি বোধ করছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার জনবান্ধব চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে চাল সংযোজন করা হয়েছে। সারাদেশের মানুষ তেল, চিনি ও ডালের সঙ্গে এখন জনপ্রতি পাঁচ কেজি চালও কিনতে পারছেন। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরা এই সুযোগ পাচ্ছেন।

টিসিবির এই কর্মসূচিতে ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবার যুক্ত হয়েছে। তাদের ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির ডিলাররা নির্ধারিত দিন ও সময়ে এই বিতরণ কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছেন। ফলে একজন কার্ডধারী ২০০ টাকায় দুই লিটার সয়াবিন তেল, ১২০ টাকায় দুই কেজি মসুর ডাল, ৭০ টাকায় এক কেজি চিনি ও ১৫০ টাকায় পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের অভিঘাত শেষ হতে না হতে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে দানাদার খাদ্য আমদানি সীমিত হয়ে যায়। ফলে সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। ফলে আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে সীমিত আয়ের মানুষ। তাদের এই দুর্ভোগ লাগবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তা-চেতনার ফসল হিসেবে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য এক কোটি পরিবারের মধ্যে স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সেই সঙ্গে সরকারের খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের মতো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময়টিতে দরিদ্র জেলেদের খাদ্যের চাহিদা পূরণে সহায়তা করতে তাদের জন্য বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। বছরে সাধারণত টিসিবির মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। সেই সঙ্গে এক কোটি টিসিবির কার্ডধারী বছরে ছয় লাখ টন চাল পাচ্ছে। এসব খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বাস্তবায়নের ফলে বাজারের ওপর চাপ কমবে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারায় নিম্ন আয়ের মানুষ আর্থিকভাবে লাভবান হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান টিসিবির কার্যক্রম এক সময় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিসিবিকে ফের চালু করায় সাধারণ মানুষ যথেষ্ট উপকৃত হচ্ছে। তবে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় সে জন্য কঠোর মনিটরিং দরকার।

অভিযোগ রয়েছে, অনেকে ব্যক্তিগত প্রভাব কাজে লাগিয়ে টিসিবির কার্ড সংগ্রহ করেছে এবং ট্রাক সেলের মাধ্যমে একই ব্যক্তি একাধিকবার পণ্য কিনে তা বাইরে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। একই ব্যক্তি যাতে একাধিকবার সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কেনার সুযোগ না পায় সে জন্য একটা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় প্রকৃত অর্থে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারের ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করা এসব পণ্য পৌঁছবে না। ফলে সরকারের এই মহতি উদ্যোগটির উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে।