দেশের উন্নয়নে নিজের সচেতনতা জরুরি

মানুষ এক সময় বর্বরতার মধ্যে বসবাস করলেও, সময়ের পরিক্রমায় নিজের প্রয়োজনে একত্রিত হয়ে গড়ে তুলেছে সুশীল সমাজের। মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই সচেতন। যার ফলে গড়ে উঠেছে আজকের দিনের সভ্যতা। আমরা মানুষ জাতি, বিশেষ করে বাঙালি- কারণে অকারণে নিজের দোষ অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে পছন্দ করি। নিজের ভুলভ্রান্তি একেবারেই স্বীকার করতে চাই না। এর জন্য কালক্রমে অন্য সব জাতি দ্রুত অগ্রসর হলেও আমরা আজও অনেক পিছিয়ে। আমাদের মাঝে আছে একরাশ অসচেতনতা আর নিজের দোষ অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণিত প্রবণতা। আমরা যদি আমাদের রাষ্ট্রের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলি। তবে প্রথমেই দৃষ্টি দিতে হবে আমলাতন্ত্রের দিকে। আচ্ছা মানলাম তাদের একটা ধরাবাধা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আপনার কি কোনো দায়িত্ব, কর্তব্য নেই? সরকার বলছে দেশে কয়লার জোগান কম। তাই বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করতে হবে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংকট দেখা দিচ্ছে। আপনার কি উচিত ছিল না বিদ্যুতের অপচয় রোধ করা? কয়জন বা করেছেন? আপনার বাসা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিংবা বাণিজ্যিক কর্মসংস্থানের অপ্রয়োজনীয়ভাবে চলমান ফ্যান, বাল্ব, মেশিনের সুইচ বন্ধ করতে কি সরকার যাবে না লোক রেখে দেবে। আপনার বাসার গ্যাসের চুলা ইচ্ছে মতো জ্বালিয়ে রাখবেন। আর সংকট দেখা দিলেই দোষ চাপাবেন সরকারের ওপর। আঞ্চলিক একটা কথা আছে ‘আমরা হচ্ছি হুজুগে বাঙালি’। কোনো কিছুর দাম বৃদ্ধি পাবে শুনলেই হয়, সত্য-মিথ্যা যাচাই করার দরকার নেই। মজুত করতে শুরু করে দিই বিক্রেতা থেকে শুরু করে দেশের সর্বস্তরের ক্রেতা। আপনার টাকা আছে, ক্ষমতা আছে- আপনি চাইলেই পেয়ে যাচ্ছেন বিদ্যুৎ, গ্যাস, বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার, বিনোদনমূলক দ্রব্য সামগ্রী। অন্যজন চড়া মূল্য পরিশোধ করেও পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দেখা। তাই রাষ্ট্রের উন্নয়নে, কল্যাণে, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে, পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে চাই ব্যক্তিগত সচেতনতা। জনগণ দিয়েই সরকার। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া কখনোই সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। তাই আসুন আমরা সবাই হাতে হাত রেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ। ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে উন্নতির চরম শিখরে।