ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ন্যাটোর ক্ষমতায়ন ও বাস্তবতা

রায়হান আহমেদ তপাদার, প্রাবন্ধিক
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ন্যাটোর ক্ষমতায়ন ও বাস্তবতা

গেল ১১ ও ১২ জুলাই ২০২৩ লিথুয়ানিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এবারের ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন। ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ ৪০টি দেশের শীর্ষ নেতারা যোগ দিয়েছেন। তাদের নিরাপত্তায় রীতিমত দুর্গ বানিয়ে ফেলা হয়েছিল ভিলনিয়াসকে। রাশিয়া থেকে মাত্র ১৫১ কিলোমিটার এবং রুশ মিত্র বেলারুশ সীমান্ত থেকে ৩২ কিমি. দূরে হতে যাওয়া সম্মেলন ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে লিথুয়ানিয়ায় এক হাজার সেনা পাঠিয়েছে ন্যাটোভুক্ত ১৬টি দেশ। বাল্টিক দেশটিতে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও পাঠানো হয়েছে। বাল্টিক দেশ লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া এবং লাটভিয়া একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল। এখন দেশগুলো একই সঙ্গে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। প্রতিটি দেশ তাদের বাৎসরিক বাজেটের ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে- যা ন্যাটোভুক্ত অনেক দেশের তুলনায় বেশি। বিভিন্ন কারণে এবারের সম্মেলন আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। এতে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ ও নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের এই জোটে অন্তর্ভুক্তি ঘিরে এবারের সম্মেলন আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। সম্মেলনে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ন্যাটো জোটের সদস্য হতে কিয়েভের নেওয়া পদক্ষেপের অজুহাতে গত বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভিলনিয়াসে অনুষ্ঠিত সম্মেলন থেকে এই স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হবে যে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হলে ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে ইউক্রেন। ন্যাটো সম্মেলনে যাই হোক, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ বেশ ঘোলাটেই থাকছে; যেহেতু রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রতিপক্ষ নিরুৎসাহিত হচ্ছে। কিয়েভের গুজব অনুসারে, সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছে সুপারিশ করেছেন। বর্তমান মাসব্যাপী ইউক্রেনের সামরিক আক্রমণ অপ্রতিরোধ্যভাবে শক্তিশালী রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে টেকসই নয় এবং এটি বন্ধ করা উচিত। যদিও ?ইউক্রেন যুদ্ধ বর্তমানে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। সবার চোখ এখন ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে। লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে অনুষ্ঠিত দুই দিনের এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো, বাইডেন এরই মধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছেন। তুরস্কের সমর্থনে ন্যাটোতে যুক্ত হচ্ছে সুইডেন। ভিলনিয়াসে এরদোয়ানের সঙ্গে বাইডেনের একের পর এক বৈঠকের আগে তুরস্কের এই অবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, যা অনিবার্যভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রেও ন্যাটোর ঐকমত্য তৈরিতে তার হাতকে আরও শক্তিশালী করবে। জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি ইউরো-আটলান্টিক এলাকায় প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তুরস্কের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। এরদোয়ান তার দেশের জন্য এমন চুক্তি করেছেন, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তুরস্ক সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকসের বাইরে গিয়ে নতুন যে গতিপথ ধরেছে, সেটি কৃষ্ণ সাগরে শক্তির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে, যা ভবিষ্যতে রুশ সামরিক হামলার বিষয়কে সংকটে ফেলবে। বর্তমানে ক্রেমলিনের যুদ্ধচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা ভাবছে ন্যাটোর মিত্ররা। কিন্তু এটা বলা দরকার, স্পষ্টতই ক্রেমলিনের দেয়ালে কোথাও কোনো ফাটল দেখা যায় না। পুতিন দৃঢ়ভাবে দায়িত্বে রয়েছেন এবং মাসব্যাপী ইউক্রেনীয় আক্রমণ মোকাবিলায় তার সামরিক অভিযান আশাতীত সফল হচ্ছে। রাশিয়ার অস্ত্রশস্ত্র কিংবা দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্প সম্পর্কে আমেরিকার কোনো ধারণা নেই। রাশিয়ার মানুষও পুতিনের পক্ষে, সেখানে গড়ে ৮০ শতাংশ মানুষের শক্তিশালী সমর্থন তার পক্ষে রয়েছে, যা বাইডেন থেকে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। অপরদিকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে রাশিয়ার। এ নিষেধাজ্ঞা বরং ইউরোপের অর্থনীতিকে শেষ পর্যন্ত ধ্বংস করে দেবে। প্রাসঙ্গিকভাবে বলা দরকার, বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে কৌশলগত যোগাযোগ অব্যাহত থাকার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ১০ জুলাই চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে রাশিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার ভ্যালেন্তিনা মাতভিয়েঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন শি জিনপিং। ন্যাটো সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে মাতভিয়েঙ্কোর সঙ্গে শির বৈঠক সময়োপযোগী, যার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। মনে রাখতে হবে, মাতভিয়েঙ্কো পেশায় কূটনীতিক এবং রাশিয়ার রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মধ্যে পুতিনের পর তার অবস্থান দ্বিতীয়। এ বৈঠকের খবর চীনের পিপলস ডেইলিতে গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, তা যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন। ইউক্রেনের যুদ্ধ রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করেছে এমন নয়। বরং বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশে মস্কোর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের কক্ষপথকে শক্তিশালী ও প্রসারিত করতে সাহায্য করেছে। একই সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রেও রাশিয়াকে পরাজিত করার যে আশা ন্যাটো দেশগুলোর ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। ন্যাটোর ভিলনিয়াস শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চয় তারা এ বিষয়গুলো পর্যালোচনা করবে। ইউক্রেনে সরবরাহের জন্য পেন্টাগনের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেছে। তাদের অস্ত্র উৎপাদনে সক্ষমতা না বাড়ালে ইউক্রেনকে তা পাঠানো যাবে না। বিকল্প হিসেবে বাইডেন তাই ক্লাস্টার বোমা ইউক্রেনে সরবরাহ করেন, যা আন্তর্জাতিক আইনে জাতিসংঘ কর্তৃক নিষিদ্ধ। ধীরে ধীরে এটি স্পষ্ট হচ্ছে, ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর সদস্যপদ থাকবে না; এখন বা কখনোই না। মূলকথা হলো, ভিলনিয়াস সম্মেলনে বিউগল বাজবে এটা জানাতে-ইউক্রেন থেকে সুশৃঙ্খল ন্যাটো প্রত্যাহার তাদের আলোচনার মধ্যে রয়েছে। তবে আফগানিস্তানে ব্যর্থ হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিঃসন্দেহে মিত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন থাকবে। যেহেতু তারা প্রাথমিকভাবে ইউরোপীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পরিস্থিতি আফগানিস্তান বা ভিয়েতনামের মতো আরেকটি বিশৃঙ্খল পশ্চাদপসরণ চায় না। এর পরিবর্তে নিরঙ্কুশ ন্যাটো ঐক্যের দাবি। এদিকে রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটের সামরিক সহায়তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিন এ মন্তব্য করেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ। এ সম্মেলনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইরত ইউক্রেনকে আরো সামরিক ও আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। পাশাপাশি ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টিও সম্মেলনে আলোচিত হচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মেদভেদেভ মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেন, ন্যাটোর এই সহায়তা ইউক্রেনে রাশিয়ার লক্ষ্য অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। মেদভেদেভ বলেন, পুরাই উন্মত্ত পশ্চিমারা অন্য কিছু বয়ে আনতে পারেনি। আসলে, এটা একটি শেষ পরিণতি। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমাদের জন্য এসবের অর্থ কী? সবকিছুই স্পষ্ট। বিশেষ সামরিক অভিযান একই লক্ষ্যে এগিয়ে চলবে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এই পদক্ষেপকে রাশিয়া বিশেষ সামরিক অভিযান বলছে। কিয়েভ ও তার মিত্ররা বলছে, ভূমি দখলসহ প্রতিবেশীর ওপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিনা উসকানিতে রাশিয়া এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর স্পেনের মাদ্রিদে ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এশিয়া প্যাসিফিক-এর দেশগুলোকে টেবিলে নিয়ে আসা এবং ইমার্জিং অ্যান্ড ডিসরাপ্টিভ টেকনোলজিস-এ বর্ধিত বিনিয়োগ ছিল গত বছরের শীর্ষ সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু। সম্মেলনে জোট গ্রহণ করেছে স্ট্র্যাটেজিক কনসেপ্ট ২০২২, একটি নথি যা ন্যাটোর মূল্যবোধ এবং উদ্দেশ্যকে পুনরায় চিহ্নিত করেছে।

নোটটি শীতল যুদ্ধের পর থেকে প্রতি ১০ বছর অন্তর হালনাগাদ করা হয়েছে নিরাপত্তা পরিবেশগত মূল্যায়নের প্রতিফলন ঘটাতে এবং সামরিক ও রাজনৈতিক ঘটনাবলির মধ্যে পথপ্রদর্শন করতে। এ পরিবর্তনগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল চীনের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা ও মার্কিননির্ভরতা হ্রাস করার পাশাপাশি কীভাবে ন্যাটো দেশগুলো তাদের বৈচিত্র্যময় অংশীদারি ও সামরিক শক্তির উচ্চ লক্ষ্যগুলো অনুসারে কাজ করবে এবং তাতে সংযুক্ত হবে তার রূপরেখা অঙ্কন। এমনকী ন্যাটো জোট পূর্ব সীমান্তে তার সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি। ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গের মতে, এই বৃদ্ধি হলো ঠান্ডাযুদ্ধের পর থেকে যৌথ প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধের ‘সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের অংশ। তার উপর ন্যাটো রাশিয়া ও চীনের দ্বারা বিনিয়োগ ও দ্বৈত ব্যবহার্য প্রযুক্তি মোতায়েনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে সংকট প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা, কার্যকরী বাধা ও প্রতিরক্ষা, এবং সহযোগিতামূলক নিরাপত্তার জন্য বিমান, সমুদ্র, স্থল, সাইবার ও মহাকাশজুড়ে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে এগোনোর চেষ্টা করছে। বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্পেন, তুর্কিয়ে ও ব্রিটেন ন্যাটোর উদ্ভাবন তহবিলের জন্য প্রতিশ্রুতি দলিলে স্বাক্ষর করেছে। এটি একটি ব্যতিক্রমী ধরনের বহু-সার্বভৌম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড।

যা ২২টি অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে ১ মিলিয়ন ইউরো তুলে তা দিয়ে সামরিক ও অসামরিক উদ্দেশ্যে দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য উদীয়মান প্রযুক্তি বিকাশকারী স্টার্টআপ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডগুলিকে সমর্থন করবে। এ তহবিলটি পরিপূরক হবে ডিফেন্স ইনোভেশন অ্যাকসেলারেটর ফর দ্য নর্থ অ্যাটলান্টিক-এর, যা গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিটি মিত্রের জন্য আন্তঃকার্যযোগ্যতা ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা উন্নত করতে সহায়তা করে। ১৫ বছরের সময়সীমার এ ব্যবস্থাটির লক্ষ্য নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থার মৌলিক রূপান্তর। যাই হোক, কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য ন্যাটোর অংশীদারি ও সামরিক সরঞ্জামের বৈচিত্র্যের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে সারগর্ভ আলোচনা। কারণ তা না হলে এই লম্বাচওড়া লক্ষ্যগুলো প্রতিপক্ষের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এই আলোচনা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মার্কিন তহবিল ও আদর্শের উপর অত্যধিক নির্ভরতা যেমন সবসময়ই জোটের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, তেমনই প্রতিপক্ষেরও বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসম বোঝা বহন করে কৌশলগতভাবে ন্যাটোর কর্মসূচিতে আধিপত্য বিস্তার করে এবং তার প্রতিফলন ঘটতে পারে যুদ্ধক্ষেত্রে ইডিটি ব্যবহারের জবাবদিহিতা ও দায়িত্ব নির্ধারণের অভিন্ন মান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এবং আরো নানা বিষয়ের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে এবং জাতীয় উদ্দেশ্য ও পদ্ধতির সমন্বয়ের ক্ষেত্রে।

ন্যাটো যেহেতু তার আর্টিফিশিয়াল ইনট্যালিজেন্স স্ট্র্যাটেজিক বর্ণিত নীতিগুলোেক কার্যকর করার চেষ্টা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়িয়ে কোয়ান্টাম ও বায়োটেকনোলজির মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তাই নিয়ন্ত্রক পদ্ধতির ব্যবহারকে শুধু সামরিক উদ্দেশ্যে নয়, মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার উপর ফোকাস রাখতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত