ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভোটকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে চিঠি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগমনি বার্তা
ভোটকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে চিঠি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের তালিকা দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের। এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপন কমিটির আহ্বায়ক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে সময় সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার ৬৫৭টি। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৪০ হাজার ১৯৯টি কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়।

বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮। এক্ষেত্রে এবার কেন্দ্র আরো বাড়বে। নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপনের যে নীতিমালা করেছে সেখানে জেলা পর্যায়ে ডিসিকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিট্রন পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অথবা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে। অপরদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে উপজেলা পর্যায়ে করা হয়েছে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি। এতে সদস্য হিসেবে রয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে তালিকা করতে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ইসি। এতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য ১৬ আগস্ট, সেই তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি নেওয়ার শেষ সময় ৩১ আগস্ট, দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ সময় ১১ সেপ্টেম্বর ও খসড়া ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছ। আর খসড়া ভোটকেন্দ্রে চূড়ান্ত তালিকা ইসি সচিবালয়ে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। এরইমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আর নির্বাচন হবে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগের ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে হয়। হাতে সময় রয়েছে তিন মাসের মতো। তাই এখন থেকেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম হাতে না নিলে সময় সংকুলান হবে না। নীতিমালা অনুযায়ী- যাতায়াতের সুবিধা, ভবনের আয়ুষ্কাল, ভোটার বৃদ্ধি, সরকারি ভবনকে প্রাধান্য দেওয়া, প্রভাবাধীন বা উন্মুক্ত নয় এমন স্থানে ভোটকেন্দ্র না করা, রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র না করা, শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ভোটগ্রহণ স্থাপন প্রভৃতি বিষয় আমলে নিতে হবে।

এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হলে যে কোনো ভোটার দাবি-আপত্তি জানাতে পারবে। ভোটকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে ইসির চিঠি পাঠানোর অর্থ হচ্ছে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগমনি বার্তা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা সময়সূচির ধারণা দিয়েছেন। এরইমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। রাজপথের বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আন্দোলনে মাঠে রয়েছে। তারা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কোনো নির্বাচনের যাবে না বলে শর্তারোপ করলেও তারাও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনি প্রস্ততি নিচ্ছে। বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব না থাকায় তারা রাজনীতিতে অনেক পিছিয়ে গেছে। বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দল সংসদের বাইরে থাকায় তাদের নেতাকর্মীরা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন যদি তারা বর্জন করে তা হলে দল হিসেবে বিএনপির টিকে থাকা কঠিন হবে। সংবিধান অনুসারে ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে কেবল রুটিং দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধাানিক ক্ষমতাবলে নির্বাচন পরিচালনা করবে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশের সংবিধান সমুন্নত থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত