বিশ্ব রাজনীতির হালচাল এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পরাশক্তি হিসেবে গণচীনের উত্থানের সমূহ সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া বেশ আগেই শুরু হয়েছে। আর এ সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে একটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত লক্ষণীয়। স্নায়ু যুদ্ধকালীন সময়ে ভারত সোভিয়েত পরাশক্তিরই তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু ১৯৯০ সালের সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ভারত তাদের বৈশ্বিক অবস্থান পরিবর্তন করেছে। তারা আর পতিত পরাশক্তির শবদেহ বহন করতে চায়নি।কারণ দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা। মূলত,পশ্চিমা রাষ্ট্র গুলোর সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছে রাশিয়ার সিরিয়ায় বোমা হামলাকে কেন্দ্র করে। সিরিয়ায় রয়েছে রাশিয়ার একমাত্র নৌ-ঘাঁটি।মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে থাকা সাগরেও ন্যাটো ও রাশিয়া নৌসেনা মোতায়েন করেছে। রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছিল।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার নামে ইরাক,আফগানিস্তানের পর ইসলামিক স্টেট সিরিয়ার বিরুদ্ধে সমরে নেমেছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে উন্নত দেশগুলো। আমেরিকা, ব্রিটেন,অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ অলিখিত ভাবেই ন্যাটোর সাথে জুটে কোয়ালিশন গঠন করে যুদ্ধকামি এক পক্ষ হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের সামরিক জবাব দেওয়ার জন্য রাশিয়া, চীন,ইরান,দক্ষিণ কোরিয়াসহ সামরিক হামলার জবাব দিতে সক্ষম আর কয়েকটি দেশ বিরোধী পক্ষে প্রস্তুত। চায়না যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট ন্যাটোর নেংটামো দেখছে রাশিয়ার সঙ্গী হবে আমেরিকাকে রুখতে। ভারতের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক-ছিল সহোদরের; ইসরায়েলের বুদ্ধিতে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ চীনাদের শায়েস্তা করবে বলে ভারতের সাথে কোলাকুলি করেছিল।

ওদিকে ইসরাইল চায় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে। রাশিয়ার কাছথেকে ভারতকে দুরে সরিয়ে দিয়ে; আমেরিকার সহযোগিতায় সেই ভারত কে দিয়েই ইসরাইলদের আরেক শত্রু চায়নার মুন্ডুচ্ছেদ করতে। এরকম অনেক অনেক উদাহরণ রয়েছে বিশ্ব রাজনীতিতে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীতে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। পশ্চিম ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন বিত্তশালী অঞ্চলে সাধারণ মানুষের গড় আয় ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলার হলেও তারা সর্বহারা মানুষের দলেই রয়েগেছে। ধনতন্ত্রী দেশগুলিতে মানুষের জীবনের গুন বাড়েনি, বরং কমে গেছে। সুবিধাবাদীর রাজনৈতিক বাতাবরণে কখনোই জন-দরদী গণতান্ত্রিক মতাদর্শের জন্ম হয়না। কারণ জনগণের চেতনার গলাটিপে ধরে আখের সিদ্ধি এধরনের রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য যা সারা পৃথিবী জুড়ে চলছে। আবহমান কাল থেকেই শোষিত নিপীড়িত মানুষ জাতিধর্ম ভৌগলিক স্থানাঙ্ক নির্বিশেষে এই ভূধরায় একি আকাশের তলায় অবস্থান করছে। নৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অবক্ষয়ের মধ্যে অনিশ্চিত জীবনে রোজ মরছে যারা তাদের সবকিছুকে গোল পাকিয়ে দিয়ে তৈরি হচ্ছে দেশের মধ্যে দেশ। বাংলাদেশের রাজনীতি যেভাবে ক্রমে দেশপ্রেম নির্বাসন দিয়ে গোষ্ঠীপ্রেমকে সামনে নিয়ে আসছে তাতে অগ্রগতির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যি পৌঁছানো সুকঠিন। দেখে মনে হয়, দেশের উজ্জ্বল ঐতিহ্য ও ইতিহাস পাঠবিমুখ আমাদের রাজনীতির মানুষেরা। তাই এদেশের সরকারি ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের কোনোপক্ষই ঐতিহ্য থেকে প্রাণিত হন না। এভাবে তাদের অধিকাংশই এখন আর দেশকল্যাণে ব্রতী নন। ভুলে গেলে চলবে না, অনেক চড়াই উৎরাইয়ের পর আজ আমরা এসে দাঁড়িয়েছি এক কঠিন বাস্তবতায়। নানা নৈরাজ্যের ঘূর্ণিপাকে ঐতিহ্য ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে প্রজন্মের সামনে। অথচ বাংলার মানুষ ঐতিহ্যিক প্রণোদনা বিচ্ছিন্ন হয়নি কোনোদিন।

স্বার্থপরতা ও গোষ্ঠীপ্রিয়তার চেয়ে দেশপ্রেমকে সবার ওপরে স্থান দিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। না-হলে ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার শক্তি পেয়েছিল কোথা থেকে! ভাষা আন্দোলনের গৌরবগাঁথা রচনা করার সাহস এসেছিল কীভাবে! আর মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে আনার উদ্দীপনাই বা পেয়েছিলেন কেমন করে! এতসব ঐতিহ্যের শক্তি স্বাধীন বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে পারতো অন্য এক উচ্চতায়। কিন্তু উলটে গেল সব হিসাবনিকাশ। যেখানে টগবগে ঘোড়ার শক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে কোনো এক অশুভ শক্তি বাংলাদেশের পায়ে যেন ভূতের পা লাগিয়ে দিল। মালোয়েশিয়া যা পেরেছে তার চেয়ে অনেক বেশি পারার কথা ছিল বাংলাদেশের। সাড়ে সাত কোটি জনসম্পদ নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সে সম্পদ বেড়ে এখন সতেরো কোটি পেরিয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও খুব কষ্টের সঙ্গে ভাবতে হতো কী হতে পারতো এদেশ আর কী হচ্ছে এখন চারপাশে! অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা ও শ্রমে অন্তত অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত দিক থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে বাংলাদেশ। কিন্তু চলমান রাজনৈতিক-সংকট আমাদের আতঙ্কমুক্ত করতে পারছে না। আমাদের দেশের রাজনীতি যেভাবে ক্রমে দেশপ্রেম নির্বাসন দিয়ে গোষ্ঠীপ্রেমকে সামনে নিয়ে আসছে তাতে অগ্রগতির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সুকঠিন। দেখে মনে হয়, দেশের উজ্জ্বল ঐতিহ্য ও ইতিহাস পাঠবিমুখ আমাদের রাজনীতির মানুষেরা। তাই এদেশের সরকারি ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিকদের কোনোপক্ষই ঐতিহ্য থেকে প্রাণিত হন না। এভাবে তাদের অধিকাংশই এখন আর দেশকল্যাণে ব্রতী নন। ক্ষমতার মসনদে টিকে থাকা বা মসনদ দখল করার কুটিল অভিপ্রায়ে দেশ ও জনগণকেই জিম্মি করে ফেলছে।তাদের এমন মনোভাব বিভক্ত করে ফেলছে দেশের মানুষকে। বিভ্রান্ত করে ফেলছে তরুণ প্রজন্মকে।

না-হলে মুক্তিযুদ্ধ-পূর্বকালে যে দেশের তরুণ সমস্ত প্রলোভনকে পায়ে মাড়িয়ে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে প্রাণশক্তির সঞ্চার করত আজ তাদেরই উত্তর পুরুষ চাঁদাবাজ, টেণ্ডারবাজ, ধর্ষক, সন্ত্রাসী ও খুনি হিসেবে পরিচিত হচ্ছে। নষ্ট রাজনীতি সবার শুভ-চিন্তা ও চেতনাকে গ্রাস করছে। তারুণ্য নির্লোভ শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হচ্ছে না। তারুণ্যের শুভ্র সৌন্দর্যকে ভূলুন্ঠিত করে চাঁদাবাজ দখলবাজ আর সন্ত্রাসী হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করছে। রাজনীতিকদের সমালোচনা করলে তারা অস্বস্তিতে ভোগেন। বলেন, সমাজের অন্য শ্রেণি পেশার মানুষ অনাচার করে দেশকে কি পিছিয়ে দিচ্ছে না? কথা সত্য। তবে তারচেয়ে বড় সত্য অধিকাংশ অনাচারকারীর শক্তির খুঁটি সেই রাজনীতি অঞ্চলই। টেলিভিশন টকশোতে খুব হতাশার সঙ্গে লক্ষ করতে হয় প্রবীণ, আধাপ্রবীণ থেকে নবীন সাংবাদিক যাদের রাজনৈতিক পরিচয় কমবেশি জানা; তারা কীভাবে অন্ধত্ব দিয়ে যার যার দলের পক্ষে সাফাই গাইতে থাকেন। নিজ দলের চোর বদমাশদের সুপথ না দেখিয়ে- যৌক্তিক সমালোচনা না করে মাথায় তুলে রাখেন। অন্যপক্ষের মু-ুপাত করেন। কারণ, নষ্ট রাজনীতি তো তাদের বুকের ভেতরের মুক্তচিন্তার জায়গাটির মৃত্যু ঘটিয়েছে অনেক আগেই। আইনজীবীরা দেশ ও সমাজে আইনের শাসন সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন এটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু এ অঞ্চলেও রাজনীতিকরণ সম্পন্ন হওয়ায় মুক্ত বিবেক নির্বাসিত হয়েছে। সাংস্কৃতিক অঞ্চলের মানুষদের প্রতি একধরনের আস্থা ছিল বহুকাল ধরে। একটি নির্লোভ অবস্থানে থেকে তারা দেশের মানুষের মনোভূমিতে সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধনে নিবেদিত থাকেন। কিন্তু এসব অঞ্চলের ক্ষমতাবানরাও এখন নানা রাজনৈতিক অঞ্চলে বিভক্ত। দলীয় তল্পিবাহকের ভূমিকা তাদের আত্মশক্তি বিকাশের সম্ভাবনা ক্রমে নিষ্প্রভ করে দিচ্ছে।

ইতিহাস বলছে, পাকিস্তান আমল থেকে যেকোনো অধিকার আদায়ের আন্দোলনে মুক্ত বিবেক হিসেবে আবির্ভূত হতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। রাজনীতি বিদদের পাশাপাশি তারা ছিলেন আন্দোলনকারীদের গাইড-ফিলোসফার। কিন্তু এখন পালটে গেছে বিশ্ব বিদ্যালয়ের চরিত্র। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দু’ধরনের শিক্ষকের বাস। ক্ষমতাশালী দলটি শিক্ষক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন। আর অন্যদলটি শিক্ষক রাজনীতির বলয় বিচ্ছিন্ন। তাদের পরিচয় ‘সাধারণ শিক্ষক’ নামে। সাধারণ শিক্ষকরা মুক্ত ভাবনায় কণ্ঠ চড়ালেও তা ঢাকা পড়ে যায় রাজনীতির শিক্ষকদের দাপটে। তারা নিজেদের চিহ্নিত করেন নানা রঙে। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত থেকে তারাও অনেক সময় অন্যায় অনাচার বৃত্তে নিজেদের যুক্ত রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নের চিন্তার বদলে নিজেদের স্বার্থচিন্তা এবং নিজদলীয় জাতীয় নেতা-নেত্রীদের আজ্ঞা বহনেই তাদের অধিকাংশ ব্যস্ত থাকেন।এভাবে নষ্ট রাজনীতির ঘুণপোকা সমাজের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকেই ঝাঝরা করে দিচ্ছে। হতাশা বাড়াচ্ছে মানুষের মধ্যে। তারপরেও আশাবাদী মানুষ ইতিহাসের অমোঘ নিয়মের সূত্রে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খোঁজে।

তবে ভরসা এই যে, প্রয়োজনীয় সময়ে ইতিহাস ঠিকই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে। জয় হবে মুক্তচিন্তার মানুষের এবং দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্মের। আজ যারা রাজনীতির স্বার্থচর্চা করতে গিয়ে জাতিকে চরম অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন হয় তারা আত্মচৈতন্যে ফিরে এসে মানবিক হবেন এবং দেশপ্রেমের টান অনুভব করবেন বুকের ভেতরে, দলের চেয়ে সত্যিই দেশকে বড় ভাববেন অথবা দেশপ্রেমিক মানুষের ইচ্ছেশক্তির জোয়ারে দিশেহারা হয়ে পায়ের নিচের মাটি হারাবেন। প্রত্যাশা করি রাজনীতির মাঠে সকল পক্ষের যত আস্ফালনই থাকুক, শেষ পর্যন্ত ইতিহাসের সত্যকে অস্বীকার করার উপায় দেখাবেন না।

১৯৭১ সাল এবং এরপর দীর্ঘ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার পেক্ষাপটে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করেছে। ১৯৭৫ সালের আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে মার্কিন সামরিক সহায়তা শুরু হয়। এই বছরগুলোতে বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়নও পাকিস্তানের মনভাবের সঙ্গে মিল ছিল। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন নীতির তিনটি পরিবর্তন আসে, তা হলো গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং সন্ত্রাসবাদের দমন। কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং গণতন্ত্রের শীর্ষ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়। এটি যদি বৃহত্তর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার দিকে এগিয়ে যায় তবে তা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাকে প্রভাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যদি যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো মার্কিন মিত্ররাও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যোগ দেয় তবে তা হবে ভয়ংকর।

এই পদক্ষেপ ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থবহ। কারণ এটি বাংলাদেশের ওপর চীনের ক্রবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধির কারণে হয়েছে বলে মনে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ও চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গ্রহণীয় নয়। রাজনীতিতে অংশ্রগ্রহণকে উৎসাহিত করার মধ্য দিয়ে রাজনীতির উৎকর্ষ বৃদ্ধি পায় এবং নতুন নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু সেই পথ হতে হবে সুনির্দিষ্ট ও গণতান্ত্রিক পন্থায়। বঙ্গবন্ধু এক দিনে নেতা হননি। ধাপে ধাপে, শিখে শিখে তিনি বড় মাপের নেতা হয়েছেন। তাঁকে কাজ করে মানুষের মন জয় করে নেতা হতে হয়েছে। কিন্তু আজকে খুব সহজেই নেতা হওয়া যায়। আর এটাই বাংলাদেশের সুস্থ রাজনীতির অন্তরায় বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।