ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ হবে কবে?

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]
শিশুশ্রম পুরোপুরি বন্ধ হবে কবে?

বাংলাদেশে শিশুদের অধিকার সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। বাংলাদেশে শিশু অধিকার সংরক্ষণের জন্য স্বাধীনতা লাভের পরপরই ১৯৭৪ সালে পাস করা হয় শিশু আইন-১৯৭৪। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী প্রথম রাষ্ট্রগুলোর একটি। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়াসে প্রণয়ন করা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, জাতীয় শিশুশ্রম নিরোধ নীতিমালা-২০১০, জাতীয় শিশু নীতিমালা-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫। জাতীয় শিশুনীতি ২০১১ সালে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান, শিশু আইন ও আন্তর্জাতিক সনদগুলোর আলোকে শিশু অধিকার নিশ্চিত করা হবে। আরো বলা হয়েছে শিশুর সার্বিক সুরক্ষা ও সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিতকরণের কথা, শিশুর প্রতি সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্য দূরীকরণের কথা। কিন্তু এসব নীতি ও আইনের বাস্তব প্রয়োগ দৃশ্যমান হয় কোথায়? ২০১৩ সালে শিশু আইন প্রণয়নের পর আজ পর্যন্ত কোনো বিধিমালা আসেনি। ফলে আইন বাস্তবায়নে দেখা দিচ্ছে প্রতিবন্ধকতা এবং উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে শিশু নির্যাতন। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ প্রতি বছর আসে ও যায়। এবং বলা হয়- ‘আজকের শিশু আনবে আলো, বিশ্বটাকে রাখবে ভালো’। যে দেশে শিশুরা ঝুঁকির মধ্যে বেড়ে ওঠে, সে দেশের শিশুরা ভবিষ্যতের জন্য আলো নিয়ে আসবে কী করে, সেই প্রশ্ন মনকে বিচলিত করে। যে দেশে বছরের প্রথম নয় মাসের মাথায় ৬০০ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, সে দেশে তাদের শৈশব আর যা-ই হোক, আলোকিত হতে পারে না। ভয়ে মোড়ানো অন্ধকারাচ্ছন্ন শৈশবের পথ বেয়ে আলোকিত ভবিষ্যতের দেখা মেলে কি? উল্লেখ্য যে, মাত্র দুই বছরের মধ্যে দেশ থেকে সব ধরনের শিশুশ্রম নির্মূল করার অঙ্গীকার আমাদের আছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের আট দশমিক সাত নম্বরে সেটিই বলা হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংশ্লিষ্ট কনভেনশন ১৩৮ এবং জাতিসংঘের শিশু অধিকারসংক্রান্ত কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেছে সরকার। এসব কনভেনশনে শিশুকে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত রাখার কথা বলা হয়। এসব প্রতিশ্রুতি ও বাধ্যবাধকতার আলোকে শ্রম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো খেটে খাওয়া শিশুদের নিয়ে তাদের এক অন্তর্বর্তীকালীন জরিপের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। এই জরিপের নাম দেওয়া হয়েছে শিশুশ্রম জরিপ ২০২২। এর আগে ২০১৩ সালে একই শিরোনামে আগের জরিপটি করা হয়েছিল। জরিপে দেখা যাচ্ছে, শিশুশ্রমিকের সংখ্যা গত ১০ বছরে না কমে বরং বেড়েছে। তবে কিছুটা হলেও কমেছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা। শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের তথ্য জানতেই জরিপটি পরিচালনা করা হয়। সারা দেশের ৩০ হাজার ৮১৪ খানা থেকে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পাঁচ থেকে শুরু করে ১৭ বছর বয়সিদের জরিপে শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী, দেশে পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিশুর সংখ্যা তিন কোটি ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার। এর মধ্যে শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭। শিশুশ্রমে নিয়োজিত ছিল ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন।

বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধিত-২০১৮) অনুযায়ী, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে শ্রমে নিযুক্ত করা যাবে না। তবে ১৪ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সীরা ঝুঁকিপূর্ণ নয়, এমন হালকা কাজ করতে পারবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং ইউনিসেফ পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, দেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০০ ধরনের অর্থনৈতিক কাজে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ৭০৯টি কারখানার মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, সেখানে মোট ৯ হাজার ১৯৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ৪১ দশমিক পাঁচ শতাংশ, অর্থাৎ তিন হাজার ৮২০ শিশু।

দুঃখজনক হলেও সত্য, এই শিশুশ্রমিকদের অধিকাংশেরই বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। শ্রম আইন সেখানে কেবলই কিছু কাগজ। শিশুশ্রম নিরসনে বাংলাদেশ সরকার ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমকে নির্ধারণ করে ২০২৫ সালের মধ্যে সেগুলোকে বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছে। এ বিষয়ে ২০১৩ সালে গেজেট প্রকাশ করা হয়। গত বছর (২০২২) আরো পাঁচটি কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে, তবে সেগুলো নিয়ে কোনো নতুন গেজেট প্রকাশিত হয়নি। ৪৩টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করলে শিশুদের নিউমোনিয়া, কাশি, আঙুলে দাদ, দুর্ঘটনাজনিত দৈহিক ক্ষত, ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ, হাঁপানি, যকৃতের দুরারোগ্য ব্যাধি, মূত্রাশয় ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। বাংলাদেশের ঝালাই, সড়ক ও পরিবহন, যন্ত্রাংশ নির্মাণ কারখানা, তামাক কারখানা, ব্যাটারি ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ খাতে শিশুদের নিয়োজিত থাকার ব্যাপারে জাতিসংঘের শিশু অধিকার বিষয়ক কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে অনেক দিন ধরে। বিবিএস তাদের জরিপে গেজেটের বাইরে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোকে আমলে নেয়নি। নিলে হয়তো ফলাফলে আরো বাস্তব অবস্থার ছবি পাওয়া যেত। নানা ফোরামে শিশু গৃহকর্মীদের অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কথা তুলে ধরা হলেও আমলকারীরা বিষয়টিকে পাত্তা দিতে চান না। এবারো জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এবং চারদেয়ালের ভেতরে যে শিশুশ্রম হয়, তাদের বের করে আনতে হবে। বাসাবাড়িতে অনেক বাচ্চা শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ আমরা সবাই জানি, শিশুরাই দেশ ও জাতির কর্ণধার। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজকের শিশুরাই আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনার সুমহান দায়িত্ব হাতে নেবে। এজন্য শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক।

পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও মেধার বিকাশের জন্য নানা ধরনের পরিচর্যা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে শিশুরা অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। অভাবের কারণে জীবনের শুরুতেই তারা বিভিন্ন শ্রমের পেশায় জড়িত হতে হচ্ছে। আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, দেশের প্রাণশক্তি। এ বিপুল পরিমাণ জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে না পারলে আমাদের সার্বিক উন্নতি মুখ থুবড়ে পড়বে। কেননা আজকের যারা শিশু, যারা নবীন তাদের উপরই আগামীর দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। শিশুদের শ্রম থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে দুরন্ত শৈশব, করে তুলতে হবে শিক্ষার আলোয় আলোকিত। শিশুশ্রম বন্ধে প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবধর্মী কার্যকর পদক্ষেপ। সর্বোপরি শিশুশ্রম বন্ধে এবং শিশুদের অধিকার রক্ষায় আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আমাদের দেশের বাস্তবতায় শিশুশ্রম হচ্ছে, জুতা পালিশ, কাগজ কুড়োনো, বনজঙ্গল থেকে জ্বালানি সংগ্রহ, জিনিসপত্র বিক্রির মতো কাজে যুক্ত শিশুদের অবস্থা তো মন্দের ভালো। স্বনিযুক্ত শ্রমিক হিসেবে কিছুটা স্বাধীনতা অন্তত ভোগ করে। কিন্তু আপনারা কি জানেন, কলকারখানায়, কুটিরশিল্পে আরো কত বেশি সংখ্যক শিশুকে অক্লান্ত শ্রমের শৃঙ্খলিত জীবনযাপন করতে হয়? শিশুশ্রম কত শিশুর নিষ্পাপ শৈশব কেড়ে নিয়েছে? সংখ্যাটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। পৃথিবীর প্রতি ছয়টি শিশুর মধ্যে একটি শিশুশ্রমিক। এদের দুর্দশা জানলে আপনি আরো একটু সহানুভুতিশীল হবেন, আশা করা যায়। শিশুশ্রম আমার আপনার সবার জন্য লজ্জার। তার সঙ্গে অমানবিকও বটে। যা চলমান সভ্যতার গায়ে কলঙ্কের দাগ। আমরা সবাই মিলে এই কলঙ্ক বহন করে চলছি উন্নত সভ্যতার চূড়ায় দাঁড়িয়েও। নইলে চাঁদে, মঙ্গলে যাওয়া মানুষের সন্তান কেন দুটি অন্নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য হবে?

জীবনে একবারই আসা শৈশবটাকেই বেঁচে খেতে হবে কেন? হ্যাঁ, পৃথিবীর ২৪ কোটি ৬০ লাখ শিশু শ্রমিকের মধ্যে সাত কোটি ৩০ লাখ, যাদের বয়স ১০ বছরের কম। আমার আপনার নিজের সন্তান, শিশুটি যখন আদরে আদরে দ্রবিভূত, তখন বছরে ২২ হাজার শিশু মারা যায়।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আইএলও’র হিসাব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে বাংলাদেশ কার্পেট শিল্পে ২০০০ শিশুর রক্ত, ঘাম মিশছে ১২ ঘণ্টা ধরেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে ১৫ লাখ শিশু ক্রীতদাসের মতো গৃহস্থালির কাজে নিযুক্ত আছে। আর অন্য নানা ক্ষেত্রে আছে আরো তিন লাখ এ ধরনের শিশুশ্রমিক। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশুশ্রমিক আছে আমাদের মতো এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সি প্রায় ১২ দশমিক সাত কোটি অর্থাৎ বিশ্বের শিশু শ্রমিকের ৬০ শতাংশ কাজ করে হোটেল রেস্তোরাঁয়, সাত শতাংশ গৃহস্থ বাড়িতে পরিচালক-পরিচারিকা হিসেবে, চার শতাংশ আছে পরিবহন-যোগাযোগ ক্ষেত্রে, তিন শতাংশ নির্মাণশিল্প, খনিতে পাথর কাটার কাজে। তবে আইএলও এ তথ্যও জানিয়েছে যে, বিশ্বে শিশু শ্রমিকের ৮০ শতাংশই নিযুক্ত পুরোনো সেই কৃষিক্ষেত্রেই। তার মানে চাষবাসে ফসল উৎপাদনে, প্রাণিপালনে, শিকারে, মাছ ধরায়। পরস্পরাগতভাবে এ কাজ তারা করেই চলেছে। একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, পৃথিবীর শিশু শ্রমিকদের মাত্র এক শতাংশ আছে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে। এই তথ্য থেকে আমরা খুব সহজেই শিশুশ্রম প্রথার কারণগুলো বুঝতে পারি। শিল্পোন্নত প্রথম বিশ্বের দেশগুলোতে এ সমস্যা নেই, কারণ উন্নত আর্থ সামাজিক কাঠামো। কিংবা হয়তো সেই ব্যবস্থা, যা দিয়ে আমাদের শিশুদের শ্রম ওদের শিশুদের বিলাশ-ব্যসন পণ্য সামগ্রীতে ব্যবহৃত! এই নির্মম ব্যবস্থায় সাম্রাজ্যবাদী শোষণের কি কোনো ভূমিকা নেই? অতিরিক্ত অর্থনৈতিক শোষণ, ধনী দরিদ্রের মধ্যে আকাশ-পাতাল বৈষম্য, সামাজিক অস্থিরতা, প্রাপ্তবয়স্কদের বেকার জীবন, কর্মহীনতার মতো দারিদ্র্য সৃষ্টিকারী শর্তগুলোও শিশুশ্রম প্রথার জন্যও দায়ী।

শিশুশ্রমের কারণগুলো আকাশের উল্কাপাত থেকে নয়, আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা থেকেই উ™ূ¢ত। দারিদ্র্যই মূলত দায়ী। শিশুরা শ্রমিক হিসেবে অধিকাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়। এর ফলে তাদের অধিকার, সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়গুলো শ্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন আওতার বাইরে থেকে যায়। এতে সুবিধা হয় নিয়োগকর্তা মালিকদের। কারণ এসব শিশুদের মজুরি কম। তারা বাধ্য নয়, নমনীয়। শাসন করতে সুবিধে। দাবি-দাওয়া নেই বললেই হয়, অথচ কাজ করার ক্ষমতা বড়দের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এরা ফাঁকি দিতে শেখেনি। সবচেয়ে বড় কথা, এদের ‘ইউনিয়ন’ নেই, তাই ঝামেলাও নেই। শিশু শ্রমিকদের তাই মালিকদের এত পছন্দের। শিশু শ্রমিকদের চাহিদা তাই এত বেশি। শিশুদের শোষণ-বঞ্চনার বর্ণনা শেষ করা যাবে না। তার ওপর আছে কাজের জায়গায় পরিবেশের দুঃসহ অবস্থা। নোংরা, ঘিঞ্জি, গরম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশুদের কাজ করতে হয়। রাতে থাকার জায়গাও হয় না। কোনো ছাউনি বা কাজের জায়গায় দম-বন্ধ করা কোণাটুকুই তাদের ভরসা। অগ্রিম নেওয়া থাকলে মজুরি দেওয়া হয় আরো কম। পরিশোধ করার হিসাব ইচ্ছাকৃত কারচুপিও করতে ছাড়ে না অনেক মালিক বা তার দালাল। সীমাহীন দুর্দশার সেসব কাহিনী সত্যি অবর্ণনীয়, অমানবিক। একসময় বলা হতো বড়দের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, সর্বশিক্ষার আয়োজন, উপযুক্ত আইন করলে এই প্রথা নির্মূল হবে। ১০০ দিনের কাজ, বিভিন্ন ভাতা ইত্যাদির মাধ্যমে দুর্বল পরিবারগুলোকে নিরাপত্তা যোগানের কাজ কিছুটা হলেও কার্যকর হয়েছে। পুরোনো কিছু দাবি-দাওয়া এরইমধ্যে পূরণ হয়েছে। কিন্তু শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা কমেছে কি? কিছুটা যে কমেছে তা আমরা জানি। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ কবে হবে?

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত