ধনিক দেশ ও গ্লোবাল সাউথের সেতুবন্ধনে জি-২০

রায়হান আহমেদ তপাদার

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের পর আন্তর্জাতিক আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নয়ন সম্পর্কিত নীতি আলোচনার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৯ সালে গঠন করা হয় জি-২০। সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বৈশ্বিক অর্থনীতির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার একটি ফোরাম। এই জি-২০ বা গ্রুপ অব টুয়েন্টি হচ্ছে কতগুলো দেশের একটি ক্লাব যারা বিশ্ব অর্থনীতির বিষয়ে পরিকল্পনার জন্য আলোচনা করতে বৈঠক করেন। জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর আওতায় বিশ্ব অর্থনীতির ৮৫ শতাংশ এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ জনগণও রয়েছে এসব দেশে। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আরো ১৯টি দেশ। এসব দেশ হচ্ছে- আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। তবে স্পেন সব সময়ই অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে আমন্ত্রণ পায়। জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কয়েকটি দেশ মিলে আবার জি-৭ গঠন করেছে। জি-২০ভুক্ত কয়েকটি দেশ যেমন ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা মিলে ব্রিকস নামে আরেকটি সংগঠন তৈরি করেছে। এই সংগঠনটি আরো সম্প্রসারিত হওয়ার কথা রয়েছে। সবশেষ সম্মেলনে তারা নতুন ছয়টি দেশকে তাদের জোটে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এগুলো হচ্ছে, আর্জেন্টিনা, মিশর, ইরান, ইথিওপিয়া, সৌদি আরব, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। সম্প্রতি জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর আলোচনার পরিসর বেড়েছে। তাদের আলোচ্য সূচি শুধু অর্থনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই জ্বালানি, আন্তর্জাতিক ঋণ মওকুফ এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর করদানের মতো বিষয়ও আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে। প্রতি বছর জি-২০ভুক্ত কোনো একটি দেশ সভাপতির দায়িত্ব নেয় এবং সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় ঠিক করে।

২০২২ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিল ইন্দোনেশিয়া এবং জি-২০ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বালিতে। ২০২৩ সালের সভাপতি হিসেবে ভারত চায় দিল্লির এই সম্মেলন যাতে টেকসই উন্নয়নের প্রতি মনোনিবেশ করে এবং উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যাতে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে সে বিষয়ে পদক্ষেপ আসুক। এই সম্মেলনে জোটবদ্ধ আলোচনার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ রাখা হয়েছে। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং দারিদ্র্য নিরসনে বিশ্বব্যাংকের মতো বৈশ্বিক সংস্থার আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সম্মেলনে অংশ নেবেন না। এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংও যে সম্মেলন থেকে দূরে থাকবেন সেটিও সংবাদ মাধ্যমে বিস্তরভাবে প্রচার করা হয়েছে। তারপরও নিয়মতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে হয়ে গেল বার্ষিক জি-২০ সম্মেলন। এ বছরের সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল টেকসই উন্নয়ন। কিন্তু ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বিষয়ের প্রতি নজর ছিল সবার। ২০২২ সালের মার্চে জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কোন চুক্তিতে সম্মত হতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে তীব্র বিতর্কের কারণে। ২০২২ সালের নভেম্বরে বালিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের বেশিরভাগ জুড়ে ছিল ইউক্রেনের সঙ্গে পোল্যান্ডের সীমান্তের ভেতর পড়া যুদ্ধে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র সংকট নিয়ে আলোচনা। গত কয়েক বছরে নিজেকে গ্লোবাল সাউথভুক্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে ভারত।

তাই জি-২০কে দেখা হচ্ছে তাদের এই আওয়াজ আরো বড় অঙ্গনে তুলে ধরার সুযোগ হিসেবে। ভারতের ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে আগে শীর্ষ এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হলো। ফলে এটি বিশ্বে নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চলমান জটিল বহু-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই সম্মেলনে ভারতের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক হাওয়া আনবে বলে মনে হচ্ছে না। অনেক অর্থনীতি এখনো মহামারির থাবা থেকে বেরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা যুদ্ধ এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাবের বিষয়ে ক্রমে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। কারণ বিশ্বজুড়েই খাদ্য এবং জ্বালানির দাম বেড়েছে। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে অর্থনৈতিক মন্দার সময় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদক্ষেপ এসেছে এই সম্মেলন থেকে। কিন্তু অনেক সমালোচক বলেন যে, পূর্ববর্তী সম্মেলনগুলো খুব একটা সফল হয়নি বিশ্বের শক্তিধর বিরোধী দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনার জের ধরে। তবে সম্মেলনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলো বরাবরই ফলপ্রসূই ছিল। এবার আসা যাক, বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর জি-২০ গ্রুপের সদস্য নয়। সদস্য দেশগুলো ছাড়াও শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আরো ৯টি দেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। জি-২০ সম্মেলনে এসব দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনে সব দেশের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় অতিথি দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সুযোগ থাকবে। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সমন্বয়ক হর্ষবর্ধন শ্রিংলার মতে, জি-২০ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক নীতিকে প্রভাবিত করার একটি বিশেষ সুযোগ করে দিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক তাদের সোনালি অধ্যায় পার করছে। এই দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বের ওপর সিলমোহর দিতেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের বিশেষ অতিথি হিসেবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। এতে বাংলাদেশকে অতিথি হিসেবে ভারতের আমন্ত্রণে দেশটি তার নিকটতম প্রতিবেশীকে ভালো বন্ধু হিসেবে উচ্চ অগ্রাধিকারের কথা বলা হয়েছে। ভারতের কাছে বাংলাদেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ- এমন প্রশ্নের বিশ্লেষণে বলা হয়, ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মহামারি সত্ত্বেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০১৯ সালের ৯ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১ সালে ১৪ শতাংশ হারে বেড়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভারতের জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এবার জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের দায়িত্বে রয়েছে ভারত। উদীয়মান দেশগুলোর গ্লোবাল সাউথের মুখোমুখি অগণিত চ্যালেঞ্জের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করাই ভারতের লক্ষ্য। ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে রাশিয়া ও পাশ্চাত্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে মতবিরোধের ফলে ভারত এখন একটি কঠিন কূটনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বিভাজন মূলক হয়ে উঠেছে। আমেরিকার মতো শক্তিশালী দেশগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এসব সমস্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। উদীয়মান মেরুকরণে বাংলাদেশ হয়তো রাশিয়া-চীন জোটকে আরো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্থার সভাপতি ঐতিহ্যগতভাবে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সভা এবং শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

এই সুবাদেই বাংলাদেশ, মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারত থেকে সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। এই আমন্ত্রণ পাওয়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সম্মানের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভারত তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া তিন সমঝোতা স্মারক হলো-কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ। এদিকে জি-২০ এর শীর্ষ সম্মেলন শুরুতেই এই জোটের নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। গত বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে জি-২০ এর সভাপতিত্ব পাওয়ার পর ভারত ৬০টিরও বেশি শহরে দুই শতাধিক বৈঠকের আয়োজন করেছে। ভারত একই সঙ্গে ধনিক দেশ ও গ্লোবাল সাউথের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করার জন্য তার ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ভাবমূর্তি কাজে লাগাতে চায়। এ ক্ষেত্রে জি-২০ নিঃসন্দেহে আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। নয়াদিল্লি এ বছরের জি-২০ সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো অগ্রাধিকারে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক ঋণ ইত্যাদি। এ বছরের জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি ‘ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট’ তথা গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠ শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রয়োজনের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা এবং আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি-২০ সদস্যপদ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ভারত অবশ্যই জি-২০ সভাপতির পদকে জনসংযোগের হাতিয়ার হিসেবে দেখে, যাতে দেশটি তার বৈশ্বিক প্রভাব বোঝাতে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে বিশ্বের চোখ অন্যদিকে সরাতে পারে। নয়াদিল্লিকে এ ক্ষেত্রেও সফল বলতে হবে। এদিকে জি-২০ সভাপতি হিসেবে ডিসেম্বরে ভারতের মেয়াদ শেষ হবে। নয়াদিল্লির সত্যিকার সফলতা এই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমেই পরিমাপ করা হবে। সম্মেলনে জি-২০ সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিবৃতি দেয় কি না, তা থেকেও বোঝা যাবে এটা কতটা সফল। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্যও ভারত গর্ব বোধ করে। যদিও জি-২০ ঘিরে বড় পরাশক্তিগুলোর মধ্যে যে অঘোষিত প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে, তার ফলে সম্মেলন-পরবর্তী বিবৃতিতে সব সদস্যের স্বাক্ষর নেওয়াটা মুশকিল হবে। ফ্রান্স এরইমধ্যে বলে দিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে নিন্দা না জানালে তারা স্বাক্ষর করবে না। অন্যদিকে এমন কোনো বিবৃতি দেওয়া হলে স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়া স্বাক্ষর করবে না। এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অনুপস্থিতির কারণে সবার ঐকমত্যের সম্ভাবনা আরো ক্ষীণ। এই দুইজনের অনুপস্থিতিতে যারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাদের কোনো ধরনের আপস কিংবা ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এর সঙ্গে আরো যোগ করার বিষয় হলো, ভারতের নেতৃত্বাধীন যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ জি-২০ বৈঠক হয়েছে, সেগুলোতে এ পর্যন্ত কোনো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা যায়নি। এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের সবচেয়ে বড় আশা, কম বিতর্কিত বিষয়ে সম্মিলিত বিবৃতি প্রদান। যেমন আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্যপদ সমর্থন করা, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া, ক্লিন এনার্জি তথা নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তির প্রসার ইত্যাদি। যদিও জি-২০ সভাপতি পদে মোদি ব্যাপক রাজনৈতিক পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। তাই, ভারত ও মোদির অনেক কিছুই যেখানে বাজি ধরা হয়েছে, সেখানে ব্যর্থতার কোনো সুযোগই থাকতে পারে না। কিন্তু সফলতাও সহজে আসবে বলে মনে হয় না।

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক