ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অভিমত

বাজার কার্যকরে চাই কঠোর মনিটরিং

এম এস খান
বাজার কার্যকরে চাই কঠোর মনিটরিং

দেশি পেঁয়াজ, ডিম ও আলু- এই তিনটি পণ্যের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। কিছুদিন ধরেই পণ্য তিনটি নিয়ে বাজারে চলছে এক ধরনের অস্থিরতা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণেই পণ্যগুলোর দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে। গত আগস্টেই সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাইয়ে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

অর্থাৎ, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ভোগ্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে বাজারের লাগাম টানতে সরকার দেশি পেঁয়াজ, ডিম ও আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয়। কিন্তু কাজের কাজ কি কিছু হয়েছে? সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে ব্যবসায়ীদের তো বেঁধে রাখা যায়নি। তারা পণ্য বিক্রি করে যাচ্ছেন মনগড়া দামেই। প্রতিদিনের সংবাদ বলছে, কোথাও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না পেঁয়াজ, ডিম ও আলু। রাজধানীর বড় কয়েকটি বাজারের চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুচরা পর্যায়ে আলু প্রতি কেজি ৫০ এবং দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। অথচ সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম হওয়ার কথা ১২ টাকা (এক হালি ৪৮ টাকা), প্রতি কেজি আলু ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এই পথে হাঁটছেন না। তারা চলছেন তাদের মনমতো।

সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি না করা নিয়ে বিক্রেতাদের রয়েছে নানা অজুহাত। সরকার নির্ধারিত দামে যাতে পণ্য বিক্রি করা হয়, সেজন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু তাতে এই তিন পণ্যের দামে কোনো হেরফের হচ্ছে না; বরং বাজারে আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। ডিম, আলু ও পেঁয়াজের বাজার কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কয়েকজন বিক্রেতা আবার বলছেন, তারা নাকি বেঁধে দেওয়া দামের বিষয়টি জানেন না। তবে অধিকাংশরা বলছেন, বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগবে। ক্রেতাদের দাবি, দাম শুধু নির্ধারণ করলেই হবে না- তা বাজারে কার্যকরও করতে হবে। তা না হলে বিভ্রান্ত হবেন বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা।

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পণ্যের উৎপাদন ও চাহিদার সঠিক হিসাব না থাকলে বাজারে কেউ কেউ অবৈধ সুযোগ নেয়। কর্তৃপক্ষও যথাযথভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর বিভিন্ন সংস্থা যে পরিমাণ আলুর উৎপাদনের কথা বলছে, তাতে বাজারে এমন পরিস্থিতি হওয়ার কথা নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শেষ সময়ে আলু পচে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অথচ সিন্ডিকেট কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত