আধুনিক যুগের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ

রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট, [email protected]

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আদিকাল থেকে সভ্যতার সিঁড়ি বেয়ে মানুষ তার প্রয়োজনে সামাজিকভাবে জীবনযাপনের লক্ষ্যে কিছু নিয়মনীতি শৃঙ্খালবোধ আইন প্রথা মেনে চলে। যদিও জনগণের কল্যাণ মূলত আইনের উদ্দেশ্য তবুও সব সময় সর্বক্ষেত্রে আইন ন্যায়বিচার ও নীতির উপর অটল থাকে না। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান এই কথাটি সবাই বললেও মূলত : তা পুরোপুরি সঠিক নহে। যদিও আইন কোনো ব্যক্তি বা বিশেষ মামলার জন্য প্রণীত হয় না, তবুও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় আইনের শাসন ও মানবাধিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ নিজকে সভ্য করার চেষ্টা করছিল, সেই আদিকাল থেকে যা এখনও নিরন্তর। আদিকালে মানুষের ভাষাজ্ঞান, পরিসংখ্যান ও তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার সম্পর্কে তাদের জ্ঞান ছিল না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষ সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সে যুগের মানুষকে বর্বর বা অসভ্য ভাবা হলে ও তারা বর্তমানে একশ্রেণির মানুষের মতো অমানবিক ছিল না। সামাজিক নীতিশাস্ত্র একটি ধারণা যা ব্যক্তিদের নৈতিক আচরণের পাশাপাশি তাদের সম্মিলিত বাস্তবতা এবং তাদের ব্যক্তিত্বের সংমিশ্রণের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটা সব সম্পর্কে লোকেরা তাদের শারীরিক ও নৈতিক সততা এবং অন্যের প্রতি সম্মান রেখে অন্যের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচতে সক্ষম হতে হবে, এমন আচরণের নীতিমালা। মূল্যবোধের দ্বীনতা এবং নৈতিকতার বিচ্যুতি সমাজে ঘটে যাওয়া বিচ্ছিন্ন ঘটনায় প্রায়শই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, পরিবার ও সমাজের দায় এবং আমাদের বিপরীতমুখী যাত্রার প্রবণতা ও বাসনা। শিক্ষাদীক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে পিছিয়ে থাকলেও পৃথিবীর অনেক অগ্রসর সমাজের মতোই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা অনুরূপ পর্যায়ের উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের বিশেষ সম্মানের চোখে দেখে। কিন্তু সমাজের সেই উচ্চশিক্ষিত সম্মানিত মানুষরাই যখন নানা নৈতিকতাবিবর্জিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়েন, তখন সেই সম্মান কি আর অক্ষুণ্ণ থাকে বা থাকা সম্ভব? তারা যে শুধু গবেষণার জন্য অর্থ বরাদ্দ নিয়েই সেটি তছরুপ করে দেয়ার লক্ষ্যে নানা ফন্দি ফিকির করেন তাই নয়, এরূপ হাজারটা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়াটা এখন তাদের নিত্যদিনের মামুলি আচরণে পরিণত হয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের দুর্নীতি, অনিয়ম, কেলেঙ্কারি ও অপকর্মের তালিকা এখন এতটাই দীর্ঘ যে দুর্নীতিতে শীর্ষস্থান অধিকারের জন্য খেতাব দেয়ার রীতি থাকলে সেটি তারাই পেতেন। আর খেতাবের প্রসঙ্গ যখন এলই, তখন উল্লেখ করতেই হয় যে খেতাবদানের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও এখন দুর্নীতির মহোৎসব, যে উৎসবের কল্যাণে ফেসবুকে লিখেও একুশে পদক পাওয়া যায়। আর তথ্য হচ্ছে, এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লিখিত জ্ঞানী-গুণীদের সংখ্যাও যথেষ্টই রয়েছে। যে সমাজে কথিত গুণিজনরা তদবির করে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, লেজুড়বৃত্তি ও চাটুকারিতা করে, লেখাজোকার ভুয়া ফিরিস্তি দিয়ে তথাকথিত কর্ম ও অবদানের স্বীকৃতি আদায় করে, সে সমাজে চিন্তা ও নৈতিকতার অবক্ষয় যে কতটা নিচে নেমেছে তা শুধু এ দেশের মানুষের পক্ষেই উপলব্ধি করা সম্ভব। এমনকি তা আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া, সুদান কিংবা শাদের মানুষের পক্ষেও উপলব্ধি করা সম্ভব কিনা, সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। যে ধাঁচের ও মানদণ্ডের মূল্যায়নে একজন শিক্ষার্থীকে নকলের অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে, অনুরূপ মানদণ্ডে গবেষণা কর্ম চুরির অভিযোগে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককেও তো অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে তা কি হচ্ছে? বরং কখনো কখনো ছোটখাটো কোনো শাস্তি হলেও রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো ক্ষুদ্র স্বার্থগত বিবেচনায় তা মওকুফ করে দেয়া হচ্ছে। আর কখনো কখনো তা পুরোপুরি মওকুফ না হলেও শাস্তির ধরন এমনই হয়ে থাকে যে, সেটিকে নিছক প্রহসন বলেই মনে হয়। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি বড় অংশই বর্তমানে উচ্চশিক্ষার নামে আসলে সনদ বিক্রি করছে। শিক্ষাকে পণ্য বানিয়ে এরূপ নৈতিকতাহীন কাজে যুক্ত থাকাটা যে অপরাধ, এ কাজের সঙ্গে যুক্ত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষকরাও তা বোঝেন। কিন্তু তার পরও যে এ অপরাধ তারা অবলীলায় করে যাচ্ছেন, তার একটাই কারণ নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সীমাহীন অবক্ষয়। অবক্ষয়িত এ সমাজে রাজনীতিক, আমলা, বণিক প্রভৃতি শ্রেণির মানুষের গায়ে এখন পচনের যে গন্ধ, তা থেকে মুক্ত থাকতে পারেননি আমাদের শিক্ষকরাও-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তো নয়ই। পক্ষ-বিপক্ষের সবাই এখন নিঃসংকোচে স্বীকার করেন যে দেশটা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। কিন্তু এ দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মধ্যে কতজন লেখা পড়া না-জানা বা স্বল্প জানা সাধারণ মানুষ, আর কতজন উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া সাজানো-গোছানো চৌকস নাগরিক। দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের প্রায় সবাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেয়া নিঘাত ভদ্রলোক। রাজনীতিবিদের মধ্যেও ডিগ্রিধারী লোকের অভাব নেই, যারা চেহারা ও লেবাসে অনেকটাই ধর্মগুরুর মতো, দেখলেই মনে হয় যেন এইমাত্র স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন। কিন্তু লেবাসের ভেতর থেকে নিয়ত নিঃসৃত পুঁতিগন্ধময়তা আশপাশকে যে অতিষ্ঠ ও অসহনীয় করে তুলেছে, সেটি অস্বীকার করা যাবে কেমন করে। ব্যবসায়ও ইদানীং উচ্চশিক্ষিত লোকের অভাব নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ইভ্যালি, আলেশামার্টের মতো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের নামে হায় হায় কোম্পানি খুলে প্রতারণার ব্যবসা ফেঁদে যারা ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষকে ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তাদের প্রায় সবাই স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষিত নাগরিক। তাহলে এ সমাজের জন্য কী অবদান রাখছেন, দেশের উচ্চশিক্ষিত খ্যাতিমান নাগরিকরা। এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে সে তুলনায় আমাদের খেটে খাওয়া নিরক্ষর কৃষক ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষকেই দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য অধিক নিরাপদ ও প্রকৃত সম্ভাবনায়, যাদের নীতি ও মূল্যবোধ যেকোনো বিচারেই তথাকথিত ওই উচ্চশিক্ষিত শ্রেণির চেয়ে অধিকতর উন্নততর। এমতাবস্থায়, ঘটনার তাগিদ হিসেবে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি দাঁড়াচ্ছে এই যে রাষ্ট্র ও সমাজে উচ্চতর নৈতিকতা ও মূল্যবোধ যদি ফিরিয়ে আনতেই হয়, তাহলে সর্বাগ্রে গণহারে উচ্চশিক্ষিত নাগরিক সৃষ্টির ধারা ও প্রবণতা দুইই বন্ধ করতে হবে। আমাদের নীতি-নৈতিকতাবর্জিত সনদধারী উচ্চশিক্ষিত লোকের কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের দরকার আসলে উচ্চতর রুচি, দৃষ্টিভঙ্গি, মনন ও সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা সংবলিত স্বাপ্নিক ও মানবিক মানুষ, যারা সাধারণের প্রতি শুধু মমতাবানই হবেন না- তাদের সঙ্গে নিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রকে প্রগতির পথে বদলেও দিতে চাইবেন। আর তাই এতশত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে চলুন একটি সৃষ্টিশীল শিক্ষাধারাপুষ্ট মানবিক সমাজ ও ন্যায্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার পথে এগোনোর চেষ্টা করি। প্রত্যেক সমাজ পরিবার এবং সম্প্রদায়ই তার পথ চলায় বেশকিছু অলিখিত আচার-আচরণ নৈতিক মানদণ্ড প্রথা বিধি মূল্যবোধে অভীষ্ট হয়ে সামাজিক বন্ধন নির্ভরশীলতা বিশ্বাস নিরাপত্তা এবং অকৃত্রিম তৃপ্তি ও সন্তুষ্টি পাওয়ার মানসে নিয়ত নিযুক্ত। এসব বিধিবিধান মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অনুশীলন চর্চা এবং আমরা মনোভাবে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজ-সংসারে বেঁচে থাকার অক্সিজেন এবং রসদ যুগিয়ে মানব মনে স্বস্তি ও আস্থার আভায় সম্পৃক্ত থেকে সামনে আগাতে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে। এ যেন এক অকৃত্রিম বন্ধন। যেখানটায় আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্তের বাঁধন গোষ্ঠীগত সংযুক্তি সব সময় না থাকা সত্ত্বেও সবার মাঝেই আন্তরিকতা ও ভালোবাসার প্রতিধ্বনিত অনুরণিত হয়। শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য ভোগবাদী মানসিকতা এবং ব্যক্তি স্বাতন্ত্রীকরণের লাগামহীন প্রসারে আমাদের মনন মেধায় অস্তিত্বে যান্ত্রিকতা ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় সামাজিক সম্পর্ক রীতিনীতি বন্ধন ভালোবাসায় কোথায় যেন ছেদ পড়েছে। মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি হলো যূথবদ্ধভাবে পারস্পরিক মিলেমিশে সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে সহযোগিতা, সহানুভূতি, ভালোবাসা, প্রীতি আবেগকে পুঁজি করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখা। সামাজিক জীবের তকমায় ভূষিত মানবজাতি। যারা কিনা সমাজের বিবর্তনের নানা পথ বেয়ে বিজ্ঞানের অভাবনীয় সাফল্যের সুফল ভোগ করে সময়ের ধারা বাহিকতায় গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দার পরিচয়ে অজান্তেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। মূল্যবোধ ও নৈতিকতার গুণেই মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এ তকমা এবং লকবটুকু আজ প্রশ্নবিদ্ধ। হেন কোনো অনিয়ম স্বার্থপরতা এবং পাপাচার নেই যার সঙ্গে মানবকুলের সম্পর্ক নেই। নৈতিকতার বিচ্যুতি সামাজিক বন্ধনের শিথিলতা রীতি নীতিনিয়ম প্রথার যথার্থ অনুশীলনের ঘাটতির সুবাধেই এসব হচ্ছে। সময় এসেছে ভেবে দেখার এবং এক্ষেত্রে পরিবারই পারে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে। যার হাত ধরেই সমাজ-সংসারে সুদিন ফিরতে পারে। পারিবারিক বন্ধন ভালোবাসা শাসন পরিচর্যা মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার মাঝেই এ দৈন্যতার অবসানের স্বপ্ন দেখা যেতে পারে। বর্তমান সমাজে বিদ্যমান রীতিনীতি ও প্রথার মাধ্যমে ভালো-মন্দ, ভুল-সঠিক, কাঙ্ক্ষিত-অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সম্পর্কে সমাজের মানুষের যে ধারণা সেগুলোকেই আমরা মূল্যবোধ বিবেচনা করি। একজন সচেতন মানুষ সামাজিক চাপে পড়ে বা ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত স্বার্থের কারণে নয় অথবা কোনো পার্থিব ভয় বা প্রলোভনের কারণে নয় বরং নৈতিক মূল্যবোধ ও বিবেককে প্রাধান্য দিয়ে তার সব কাজ সম্পাদন করেন, তবে তিনিই প্রকৃতপক্ষে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে বিবেচিত বা স্বীকৃত হবেন সমাজ বা রাষ্ট্রের কাছে। নৈতিকতা সম্পর্কে সচেতনতা জাগরণের শিক্ষাকেই মূল্যবোধের শিক্ষা বলা যায়। নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ মানুষকে তার মানবতা বোধ জাগ্রত করতে সহায়তা করে। নৈতিক আদর্শসংবলিত সমাজ বলতে বোঝায় যে সমাজে কোনো অনাচার, অবিচার, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, শোষণ, নিপীড়ন, স্বার্থপরতা এসব অনৈতিক চর্চা থাকবে না। সে সমাজকেই নৈতিকতার আদর্শে আবর্তিত সমাজ বলা হয়।

সব ধরনের দুর্নীতি, অন্যায়, অসততা থেকে মুক্ত জীবনই আদর্শ জীবন হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমানে সমাজ ও রাষ্ট্রে অবক্ষয় বিশৃঙ্খলা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এ অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করতে হবে। সমাজে আজ অবক্ষয়ের কারণে খুনোখুনি, হানাহানি বেড়েই চলেছে। আজকাল কিশোর অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। মানুষ মানুষকে সামান্যতম স্বার্থের কারণে খুন করছে। সমাজের মানুষের মধ্যে ন্যূনতম নৈতিকতা বা মূল্যবোধ কাজ করে না। বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সমাজে বেড়েই চলছে। মানুষ কেমন যেন হিংস্র ও স্বার্থপর হয়ে পড়ছে। সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতে না পারলে তা রাষ্ট্রের ওপরও প্রভাব ফেলবে। এজন্য প্রয়োজন নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চর্চা করা; যা একটি পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তর থেকে শুরু করা যায়।

আজকে পৃথিবীর যেসব দেশকে উন্নত হিসেবে গণনা করা হয়, দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেসব দেশের মানুষ সমাজ বা রাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতা অনুসরণ করে জীবনযাপন করছে। বর্তমানে আমাদের প্রথম প্রয়োজন শিক্ষাব্যবস্থাকে সঠিক পথে চালিত করা। যে শিক্ষা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জ্ঞানী, দক্ষ, ভালো-মন্দ বোঝার মতো করে গড়ে তুলতে সাহায্য করে এবং তার পাশাপাশি ন্যায়বান, রুচিশীল, নান্দনিক নৈতিক ও মানবিক বোধসম্পন্ন গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক ও সর্বোপরি আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে রকম শিক্ষা প্রসারে আমাদের সদিচ্ছা জরুরি।