ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিমানবন্দর দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে

মো. কামরুল ইসলাম
বিমানবন্দর দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে

আকাশপথে ভ্রমণ আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার অন্যতম আকর্ষণ। সারাবিশ্বে শত শত বিমানসংস্থা হাজার হাজার বিমানবন্দরকে সংযুক্ত করে আছে। এই সংযুক্তি শুধু যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করছে তা কিন্তু নয়। আকাশ পথের যোগাযোগ বিশ্বের সার্বিক অর্থনীতির চিত্রকে বদলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। অষ্টম বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া আছে আরো পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। মাত্র ৮টি বিমানবন্দর দিয়ে দেশে আকাশপথে সংযোগ স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫১ বছরের অধিক সময়। দেশের আকাশ পরিবহন সংস্থাও গঠিত হয়েছে প্রায় একই সময় ধরে। স্বাধীনতার আগে দেশে ১২টি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উঠা-নামা করত। কিন্তু বর্তমানে ৮টি বিমানবন্দর চালু আছে।

ব্যবসায়িকভাবে বর্তমানে চালুকৃত অনেকগুলো বিমানবন্দরে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা বিরাজ করছে। বরিশাল, রাজশাহী কিংবা যশোর বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা থেকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ খুব একটা লাভবান হচ্ছে না। কিন্তু সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকছে, বিমানবন্দরগুলো সচল থাকার কারণে। সারাদেশের প্রায় ৫০টির মতো জেলা ৮টি বিমানবন্দর দিয়ে আকাশপথের সংযোগ স্থাপন করেছে। অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলো চালু হলে দেশের আকাশ পরিবহনে সার্বিক চিত্র আমুল পরিবর্তন সাধিত হবে। বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, ঈশ্বরদী, শমশেরনগর, বগুড়া, বাগেরহাট, কুমিল্লা বিমানবন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতি তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে।

সারা দেশে ৩১টি এয়ারস্ট্রিপ রয়েছে, যেগুলোতে কখনই বিমান চলাচল করেনি। সেইসব এয়ারস্ট্রিপগুলো পুনোরুদ্ধার করে স্টল এয়ারপোর্ট কিংবা হেলিপোর্ট নির্মাণ করলে আকাশপথে যোগাযোগ আরও সুসংহত হবে। উল্লেখযোগ্য এয়ারস্ট্রিপগুলোর মধ্যে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, বাজিতপুর, আড়াইহাজার, ফেনীসহ আরো অনেক।

দেশে ১০টি হেলিকপ্টার কোম্পানির প্রায় ৩০টির অধিক হেলিকপ্টার রয়েছে যা দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ক্ষুদ্র পরিসরে আকাশ পরিবহন ব্যবসায় ভূমিকা রাখছে। দেশে অধিকসংখ্যক হেলিপোর্ট নির্মাণ করলে হেলিকপ্টার ব্যবসায় সফলতা আসতে পারে। বন্ধ হওয়া বা অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে চালু করার পরিকল্পনা করছে সরকার। ফলে দেশের বেশি সংখ্যক জনগণের আকাশ পরিবহন থেকে সেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি বিমানবন্দর চালু হলে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক শহর সৃষ্টি হয়। বেকার সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখে। শিল্প-কারখানা গড়ে উঠে। গ্রামীণ অর্থনীতি তথা সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নতি দেখা যায়। বিমানবন্দর কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ সাধিত হয়। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতির উপর পজিটিভ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

লেখক : মহাব্যবস্থাপক- জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত