ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শেখ হাসিনা : অগ্রসর বাংলার মহানায়ক

ড. সৈয়দ নাজমুল হুদা
শেখ হাসিনা : অগ্রসর বাংলার মহানায়ক

বিশ্ববলয়ে মাঝেমধ্যে অসামান্য বিরল কিছু ক্ষণজন্মা মানুষের আবির্ভাব হয়। যারা সাধারণ থেকে অসাধারণ হিসেবে পরিণত হয়। যাদের সৃষ্টি হয় নিজের জন্য নয় অন্যের জন্য। সৃষ্টিকূলের কল্যাণ আর মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করে নীরবে নিভৃতে। শত দুঃখ-কষ্টকে মাথায় নিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কর্মকেই ধর্ম হিসেবে মেনে নেয়। তাদের কিছু কাজ যা মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাদের সহজ-সরল জীবনযাপন মানবতার মুক্তি আর কল্যাণের জন্য নিবেদিত হয়। তেমনি একজন যিনি বঙ্গকন্যা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যিনি বাঙালি ও বাংলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে নিভৃতে। ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। রাখে আল্লাহ মারে কে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে সম্মানিত করেন আবার যাকে ইচ্ছা তাকে অসম্মানিত করেন। বঙ্গকন্যা আজ সাধারণ মেয়ে থেকে মানবতার ফেরিওয়ালা বিশ্ব নেতৃত্বে অবস্থান করে নিয়েছেন। ইতিহাসের পাতায় তিনি স্থান করে নিয়েছেন অনেক কিছুতেই। তার শ্রম আর ত্যাগের মধ্যে দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ এক নতুন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। যিনি সাধারণ জীবনযাপনে বেড়ে উঠে শ্রম, মেধা, সৃজনশীলতা, সর্বোপরি জনকল্যাণ ও ঐকান্তিক দায়িত্ববোধের সর্বোচ্চ স্থানে আছেন। তিনি তার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছেন। তিনি তার গভীর স্বপ্নবিলাসী আত্মজিজ্ঞাসার সার্থক বাস্তবায়ন ঘটিয়ে জাগিয়ে তোলেন জনপদ-জনসমাজ-জনগোষ্ঠী এবং স্বদেশকে। তার মধ্যে নেই কোনো অহংকারবোধ, কোনো আত্মকেন্দ্রিকতা, কোনো কুক্ষিগত স্বেচ্ছাচারের প্রতিভূ নয়- জনমানসের সঙ্গে নিষ্কলুষ স্বচ্ছতা নিয়ে তিনি অবিরাম পথচলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি দেশ গড়ার নির্মোহ অবিচল সংগ্রাম তাকে করে তুলেছেন কালের পাতায় সর্বজন বরণীয় স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যার কীর্তি যশ খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশকালের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব সমাজে। তিনি হয়ে ওঠেছেন সবার কাছে অনুকরণীয়। অনুসরণীয় হয়ে পড়েছে তার প্রাগ্রসর চিন্তা-চেতনা। তার অনুধ্যান বিষয় বিশ্লেষণ। কর্ম খ্যাতি আর যোগ্যতা গুনে তিনি খেতাব, উপাধি আর ডিগ্রি পেয়েছেন বিভিন্ন দেশে দেশে। আধুনিক বাংলাদেশের সফল রূপকার শেখ হাসিনা তেমনি একজন বিরলপ্রজ ব্যক্তিত্ব, জীবন্ত কিংবদন্তি, কর্মে খ্যাতিতে অদ্বিতীয়। তার রয়েছে জ্ঞান আর প্রজ্ঞা, বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-চেতনার অধিকারী, উন্নতি-অগ্রগতিতে সমুন্নত। তিনি একজন সফল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক। অতি অল্প সময়ে বাংলাদেশকে তিনি পরিচিত করেছেন বিশ্ব দরবারে। বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে দেশে দেশে। তার সম্পর্কে লেখা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ, আত্মজীবনী ও তার চিন্তাও কর্মের উপরে গবেষণা। তিনি সর্বদা জনসম্পৃক্ত গতিশীলতা নিয়ে। নিবিড় সৃজনশীলতা নিয়ে তার পথচলা। সফল্যের গৌরবগাঁথার সৌকর্যে তিনি হয়ে উঠেছেন রাষ্ট্র, সমাজ বিবর্তনের এক অসামান্য দলিল। যা একবিংশ শতাব্দির ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ রাজনীতির অঙ্গনে অনেক বিষয় ভাবনার আধার হয়ে থাকবে বলে মতপ্রকাশ করেছেন বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ববর্গ। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দারুণভাবে সারা বিশ্বের কাছে আলোচিত। কীভাবে তিনি এত অল্প সময়ে একক নেতৃত্বে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনি অর্থনীতির প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করছেন। বাংলায় পড়েও তিনি অর্থনীতিতে অসামান্য পাণ্ডিত্যের অধিকারি। আজকের প্রধানমন্ত্রী, তার শিক্ষা, পরিবারিক জীবন, বাংলা ও বাঙ্গালীর প্রতি দরদ।

দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা, মানুষের আবেগ অনুভূতি আর চাওয়া পাওয়ার জন্য কি করতে হবে তা নিয়ে তিনি ভাবেন এবং ইতিহাসের আলোকে কাজ করছেন। তিনি বাস্তবের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ভয়কে জয় করার দৃঢ় মনোবাসনার বিষয়আশয়। মন্ত্রীপদে দায়িত্ববোধের সচেতনতা, ইসলাম ও ইসলামিকরণ বিষয় প্রসঙ্গ নিয়ে গভীর চিন্তাধারার অনুরণন। উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত ভাবনা বিবেচনা, ১/১১ ও মুসলিম বিশ্ব বলয়ের নানাবিধ পারিপার্শ্বিকতা। কূটনৈতিক ভাবনা, সাফল্যের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে অর্থনীতির যথাযথ বিশ্লেষণ, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটর এক্সপ্রেস, অর্থনৈতিক অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় দেয়ার মত সাহসিকতা, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের পন্থা বের করা। বিরোধী দলীয় নেতার চ্যালেঞ্জ জয় করা, সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে যাওয়া, উত্তরাধিকার ও নবতর সংকট বিষয়ে চিন্তাভাবনা বিষয়ক নানান দিক। ভবিষ্যত ধ্যান-ধারণা সম্পর্কিত মহামূল্যবান চিন্তা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গঠনে সব ধর্মের গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। মুসলমানদের জন্য নির্মিত হয়েছে অসংখ্য মডেল মসজিদ। হজ পালন ব্যবস্থাকে সহজিকরণ করা হয়েছে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে মানবকল্যাণকে গুরুত্ব প্রদান করেছেন তিনি। বাবা বঙ্গবন্ধুর দেওয়া শিক্ষা আর মায়ের ত্যাগকে দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের কর্মপন্থা উদ্ভাবনের নিরলস প্রচেষ্টা সব কাজে জোগায় অনুপ্রেরণা। সর্বোপর একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে জনকল্যাণকর, সুখী-সমৃদ্ধ শিল্পোন্নয়ন দেশ হিসেবে গড়ে তোলার সীমাহীন মমত্ববোধ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত তিনি। তিনি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার জীবন দর্শনের এক অনুপম প্রতিচ্ছবি।

বিশ্ববিশ্রুত এই সফল রাষ্ট্রনায়ক তার অভিজ্ঞতার ঝুলি ঋদ্ধ করেছেন নানা বিষয় বৈচিত্র্য সম্পর্কে সমধিক জ্ঞাত হয়ে। অতপর নিজের কর্মজীবনে চলমান, রাজনীতির বলয়ে তার সমাধান খুঁজে তৃপ্ত হয়েছেন- সফল হয়েছেন- সার্থক হয়েছেন তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনেও।

অজ্ঞতা ও কুসংস্কারকে তিনি নানাভাবে অবলোকন করেছেন। ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার থেকে সার্বিক মুক্তির পথ নির্দেশে সংগ্রাম করেছেন- দীর্ঘপথ চলেছেন এবং বাস্তবেও শেষ পর্যন্ত জয়ী হবেন বহুমাত্রিক প্রাজ্ঞজনের অবিধায় ভূষিত এই রাষ্ট্রনায়ক। তিনি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে, সৃজনশীল সমাজ আবহ প্রবর্তনে তার অদম্য সহনশীলতার চরম ত্যাগ-তিতীক্ষার কথা- যা আজ সারা বিশ্ব রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য যথার্থ বোঝার বিষয়ও বটে। তিনি অনুকরণের একটি পাঠশালাও।

দেশের বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সকলেই মনে করেন শেখ হাসিনার জীবন সংগ্রাম- প্রজ্ঞা দূরদর্শী চেতনা বাঙালির জন্য মাইল ফলক হয়ে রবে। মধুমতি পদ্মা মেঘনা যমুনার মতো তিনি তার মানবতা আর মমত্ববোধ ছড়িয়ে দিয়েছেন দেশের প্রতিটি পরতে পরতে। দেশকে- দেশের সব জনগোষ্ঠীকে জানার এবং তাদের নিয়ে কাজ করতে শেখার অন্তর্চেতনা কীভাবে নির্মাণ করতে হয়- নিজকে জন মানুষের কল্যাণে তুলে ধরা যায়- একজন জনসচেতন ব্যক্তি; সর্বোপরি রাজনীতিবিদ হিসেবে নির্দ্বিধায় বলা যায় তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক এর নেতৃত্বের অনুপম দৃষ্টান্ত তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায়। তার সিদ্ধান্ত কর্মপরিকল্পনা বাংলাদেশকে গড়ে তুলবে আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ।

শিক্ষক : বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত