ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংকটের আকস্মিক বিস্ফোরণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন

রায়হান আহমেদ তপাদার
সংকটের আকস্মিক বিস্ফোরণে ইসরাইল-ফিলিস্তিন

ইসরাইলের ওপর মিসর ও সিরিয়ার আকস্মিক হামলার মধ্যদিয়ে ১৯৭৩ সালে চতুর্থ আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ৭ অক্টোবর শনিবার ইসরাইলের ওপর ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বড় ধরনের হামলাকে কেন্দ্র করে ৫০ বছর পর আগের সে পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হামাসের এই হামলাটি ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত। দিনটিও ছিল ইহুদিদের ছুটির দিন। ওই হামলার পর ইসরাইলও গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে। স্থল অভিযানেরও পরিকল্পনা করছে তারা। কিছুদিন ধরেই গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা বাড়তে দেখা গিয়েছিল। তবে ভাবা হচ্ছিল, গাজার শাসনে থাকা হামাস কিংবা ইসরাইল কেউই চায় না উত্তেজনা আরো বাড়ুক। সে ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করে হঠাৎ ইসরাইল অভিমুখে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে হামাস। ইসরাইল এখন হতোদ্যম, নিজ ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ আর ইসরাইলের হাতে নেই। এ দফায় হামাস ও ফিলিস্তিনের অন্য গোষ্ঠীগুলো যেভাবে যুদ্ধ করছে, ১৯৪৮ সালের পর তেমনটি আর দেখা যায়নি। ওই বছর আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করে ইসরাইল রাষ্ট্রের অভ্যুত্থান ঘটেছিল। এমনকি অর্ধশতাব্দী আগে ১৯৭৩ সালে যখন মিসর আচমকা ইসরাইলে আক্রমণ করে, তখনো কেউ এতটা বিস্মিত হয়নি। ওই যুদ্ধকে ইসরাইলিরা ইয়ম কিপ্পুর বলে অভিহিত করে। এবারকার হামলায় ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হতবাক হয়ে গেছে। তাদের বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের নাগরিকদের যে আস্থা ছিল, তাতেও ভয়ংকরভাবে চিড় ধরেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু ৭ অক্টোবর শনিবারই ২৫০ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। ১৯৭৩ সালে ইসরাইলিরা একটা প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। এবার যারা যুদ্ধ করছে, তাদের হাতে কালাশনিকভ ছাড়া কিছু নেই। এটা অবিশ্বাস্য। ইসরাইলের এই সেনা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা তাদের অনেক দিন ভোগাবে। ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে গাজা উপত্যকার আশপাশে নজরদারির জন্য শৌখিন ও বহুমূল্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। এই অঞ্চলকে তারা ২০০৭ সালে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল।ওখানে ক্যামেরা ও আকাশে ড্রোন ওড়ার কথা। এই বেষ্টনী অতিক্রম করা প্রায় অসম্ভব। ফলে ইসরাইলের যে প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি, তাতে এই আঘাত অকল্পনীয়। কারণ, ৮ হাজার ২০০ নামে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর যে গোয়েন্দা ইউনিট আছে, তাদের কাছে ফিলিস্তিনিদের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যও আছে। অথচ তারা জানতে পারেনি যে কয়েকশ’ বা হাজারখানেক যোদ্ধা এমন জটিল ও ব্যাপক হামলা চালাবে। তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরাইলি শহরে হেঁটে-ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ইসরাইলি নারী, শিশু ও বয়স্কদের জিম্মি করছেন, এর একটা গভীর প্রভাব ইসরাইলি জনগোষ্ঠীর ওপর পড়বে। দেখা গেল, মানুষ ফিসফিস করে ফোনে বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলকে খবর দিচ্ছেন যে তারা একা হয়ে গেছেন। বাইরে গোলাগুলি হচ্ছে এবং সারাদিনেও সেনাবাহিনীর কোনো দেখা নেই। এই ঘটনা এত সহজে ইসরাইলিরা ভুলবে না। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, ইসরাইল সরকার এখন কী করবে, তা পরিষ্কার নয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভূমধ্যসাগর থেকে জর্ডান নদী পর্যন্ত সবটুকু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার এ অঙ্গীকার নিশ্চিতভাবেই ধাক্কা খেয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রথমেই যা করতে চাইবে তা হলো, গাজাকে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া। এতে হতাহতের সংখ্যা হাজার ছাড়াবে দ্রুতই। এরই মধ্যে বিমান হামলায় ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কিন্তু সামরিক প্রেক্ষাপট থেকে এ ধরনের বিমান হামলার কোনো গুরুত্ব নেই। কারণ, এতে হামাসকে থামানো সম্ভব হবে না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এখন পর্যন্ত ১৫০ ইসরাইলিকে জিম্মি করেছেন। ফিলিস্তিনিদের বোমা মেরে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা এসব জিম্মিকে আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী গাজা পুরোপুরি দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে এ জন্য যে আত্মবিশ্বাস দরকার, সেটা তাদের নেই। তারপরও তারা যদি গাজা পুরোপুরি দখল করে নিতে চায়, তাহলে গাজার হাজার হাজার লোক নিহত অথবা বাস্তুচ্যুত হবেন। শত শত ইসরাইলিও খুন হবেন। ইসরাইল এমন এক পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যেখানে তারা আর নিজেদের ভাগ্য নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাদের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। একই অবস্থা সেনাবাহিনীতেও। সেনাবাহিনী নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে, ইসরাইলিরা বিশ্বাস হারিয়েছে সেনাবাহিনীর ওপর। গাজা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে এসবের ব্যাপক প্রভাব থাকবে। গাজায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি, শরণার্থী সংকটের আশঙ্কা বড় পরিসরে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। এই যুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের একাধিক গোষ্ঠী, পশ্চিম উপত্যকা ও জেরুজালেমের বেসামরিক জনগোষ্ঠী, সিরিয়া ও জর্ডানের যুক্ততার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নেতানিয়াহু তাঁর ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচের পরামর্শ অনুযায়ী গাজা পুরোপুরি দখলের উদ্যোগ নিতে পারেন। অথবা তিনি আপসের চেষ্টা করতে পারে। ১৯৭৩ সালে যুদ্ধের পর ইসরাইলিরা যুদ্ধ ও প্রাণহানির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। নেতানিয়াহু এখন যাই করুন না কেন, তার সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আঘাত এসেছে। এই হামলা তার সরকারকে দুর্বল করবে। ফিলিস্তিনিদের দেওয়াল দিয়ে আটকে রেখে চাবি ছুড়ে ফেলা এবং একই সঙ্গে দুবাইয়ের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা নেতানিয়াহু করেছেন, তা কতটা অসার ছিল, সেটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। যা ঘটেছে, সেটার দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। সীমান্ত পাহারা না দিয়ে ৩৩টি ব্যাটালিয়ন পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষা দিচ্ছে। নেতানিয়াহু সরকারে চরমপন্থি এবং উগ্র ধর্মীয় জাতীয়তাবাদীরা রয়েছেন, যারা যেকোনো মূল্যে পশ্চিম উপকূলে ইহুদিদের বসতি স্থাপন করতে চান।

কিন্তু অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি তাদের এই অতি মনোযোগই পতনের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অচিরেই আমরা এমন কথা শুনব যে কেন আমরা নিজেদের বিপন্ন করে এই অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষা দিচ্ছি?

ইসরাইল এমন এক পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যেখানে তারা আর নিজেদের ভাগ্য নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাদের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। একই অবস্থা সেনাবাহিনীতেও। সেনাবাহিনী নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে, ইসরাইলিরা বিশ্বাস হারিয়েছে সেনাবাহিনীর ওপর। গাজা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে এসবের ব্যাপক প্রভাব থাকবে। আরো বাজে পরিস্থিতি হবে তখন, যখন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে। এরই মধ্যে ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাদের সেনাদের শক্তিসামর্থ্য বাড়ানোর আদেশ দিয়েছে। গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি সেখানে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা চলছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। তবে হামাস ইসরাইলি সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের জিম্মি করেছে। তাদের মানব ঢাল ও দর-কষাকষির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের আশা করছে হামাস। এটি একটি বড় জটিলতার বিষয়। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, আমরা বর্তমানে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় আছি। ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে গাজা উপত্যকার আশপাশের এলাকাগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতির ব্যাপারে খুব নিবিড় ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করব। পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনাকে সামনে রেখে নিঃসন্দেহে ইসরাইলের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন করছেন, কেন তারা আগে থেকে হামাসের হামলার আভাস পাননি। এত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে তারা কীভাবে ব্যর্থ হলেন। গাজা উপত্যকায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের ১ বছর পর ২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়।

এরপর ইসরাইল ও মিসর গাজায় অবরুদ্ধ অবস্থা আরো জোরদার করে। তবে গাজায় বেকারত্ব প্রায় ৫০ শতাংশ। ২০২১ সালে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের পর মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের পরোক্ষ আলোচনা হয়। তখন হাজারো গাজাবাসীকে ইসরাইলে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতা হয়। আরো কিছু কড়াকড়িও শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়। গত সেপ্টেম্বরে ইসরাইল সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গাজার কর্মীদের জন্য ২ সপ্তাহ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এবার ইসরাইল অভিমুখে রকেট হামলার শুরুতে হামাসের সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়ক মোহাম্মদ দেইফ ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন ইসরাইলি দখলদারদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপে শামিল হয়। তবে এখন বড় প্রশ্ন হলো, ইসরাইলের দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম কিংবা ওই অঞ্চলের অন্য এলাকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা তার আহ্বানে সাড়া দেবেন কি না। নিঃসন্দেহে ইসরাইল একটি যুদ্ধের আশঙ্কা করছে এবং বিভিন্ন দিক থেকে এ যুদ্ধ শুরু হতে পারে। সর্বশেষ গত বছর গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরাইলি বাহিনী। জাতিসংঘের হিসাবে, ওই বছরের ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত ইসরাইলের সর্বাত্মক হামলায় প্রাণ গেছে ৬৭ শিশুসহ ২৪১ জনের। আহত প্রায় আড়াই হাজার। কিন্তু এই হিসাব দাপ্তরিকভাবে বাস্তবে তা আরো অনেক বেশি। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই নানা ছুতোয় ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হন, প্রাণ কেড়ে নেন ইসরাইলি সেনারা। ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এক ফিলিস্তিনি যুবককে আটক করছেন ইসরাইলি সেনারা। গুলিতে ঝাঁঝরা, বোমায় ছিন্নভিন্ন, আগুনে দগ্ধ, কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের চাপায় পিষে-থেঁতলে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লাশের মিছিল তাই থামে না।

উল্লেখ্য যে, বধ্যভূমি, মৃত্যুপুরী, জল্লাদের মঞ্চ- কোনো বিশেষণেই ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যা, নৃশংসতাণ্ডনিপীড়ন স্পষ্ট হয় না; কিছুতেই পাওয়া যায় না তাদের দুঃখ-দরিয়ার কিনারা! এইতো সেদিন ৩৪ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি আইনজীবী গত মাসে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। তার স্বজনদের আহাজারি আজও বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাছাড়াও ফিলিস্তিনিদের ভূমি-ভিটা জবর দখল, তাদের অন্যায্য বিতাড়ন আর অবৈধ ইহুদিবসতি স্থাপনের আনুপাতিক হারে ফিলিস্তিনির সংখ্যা কমানোর সব ইন্তেজাম পাকা ইসরাইলের। ইঙ্গ-মার্কিন মহব্বত-মদতে ইসরাইলের একতরফা আগ্রাসন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গাজা, পশ্চিম তীর তথা গোটা ফিলিস্তিন ভূমি। ফিলিস্তিনিদের বুকের পাঁজর গুঁড়িয়ে ইহুদিদের এই দখলবাজি চলছে বছরের পর বছর, দশকের পর দশক। তবু সভ্যতার কাণ্ডারিদের মুখে কোনো আফসোস নেই। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কি শুধু ফিলিস্তিনিদের আত্মিক, ন্যায্য ও আইন সংগত দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ, নাকি তা আজ বিশ্বজনীন মানবমুক্তির প্রাণভোমরাও? পঙ্গু শিশুর বেড়ে ওঠার অধিকারও যখন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, পাখি শিকারের উল্লাসে খুন করা হয় নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষকে, তখন মুখ বুজে থাকলে বিবেকও কি নীরব থাকে? মানবতা তো কিতাবে ছাপা ধারণামাত্র নয়, ন্যায়ের পক্ষে না দাঁড়ালে মনুষত্ব বিলুপ্ত হতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কালীন হলোকাস্টের নির্মমতাও যেন ছাপিয়ে গেছে ইসরাইলের বর্বর কর্মকাণ্ডে। তাদের তাণ্ডবশক্তির নিচে মানবিকতার পদদলন আর কত দিন? আর কত দিনই-বা তা নিরবে চেয়ে চেয়ে দেখবে বাকি বিশ্ব? আর কত রক্তমূল্য পরিশোধে মানবমুক্তির সুখবর পৌঁছাবে ফিলিস্তিনি ভূমিতে? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

লেখক : গবেষক ও কলাম লেখক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত