ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গবেষণা খাত আরো মজবুত করতে হবে

ড. অজয় কান্তি মন্ডল
গবেষণা খাত আরো মজবুত করতে হবে

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) প্রতিবছর বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা প্রকাশ করে। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর, যেমন : একাডেমিক খ্যাতি, চাকরির বাজারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েটদের সুনাম, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক, শিক্ষকপ্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র ও পেটেন্টের অনুপাত, বিদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুপাতের উপর ভিত্তি করে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং করে এই প্রতিষ্ঠানটি। সারাবিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় এমন ৫৪টি বিষয়কে ৫ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এই র‍্যাংকিং প্রকাশ করে কিউএস প্রতিষ্ঠানটি। এই বছর মোট ১ হাজার ৫৯৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার ৭০০টির বেশি একাডেমিক প্রোগ্রামের মর্যাদা ও গবেষণাকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে র‍্যাংকিংয়ে স্থান দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এ বছরের তালিকায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ভারতের ৪১টি ও পাকিস্তানের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিলেও বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২টি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) স্থান পেয়েছে। বিগত বছরগুলোতে কিউএস র‍্যাংকিংয়ের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, ২০১২ সালে ঢাবির অবস্থান ৬০১তম এর মধ্যে থাকলেও ২০১৪ সালে তা পিছিয়ে ৭০১তম অবস্থানেরও পরে চলে যায়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই র‍্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছিল। ওই বছর ঢাবি’র অবস্থান ছিল ৭০১-৭৫০তম এর মধ্যে। ২০১৯ সাল বা এর পরবর্তী বছরগুলোতে প্রকাশিত তালিকায় সেই আবস্থান আরো পেছনের দিকে চলে যায়। সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০১৯, ২০২০, ২০২১, ২০২২ সালের প্রকাশিত তালিকায় কিউএস র‍্যাংকিংয়ে ঢাবি ও বুয়েটের অবস্থান ছিল ৮০১ থেকে ১০০০-এর মধ্যে। মন্দের ভালো এ বছর ঢাবি ও বুয়েটের অবস্থান একটু উপরের দিকে উঠেছে। তবে দেশে এত এত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে মাত্র ২টি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা ৫০০ তালিকায় স্থান পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, সেটাই স্বাভাবিক। যেখানে আমাদের থেকে অনেক ভালো অবস্থানে আছে পাকিস্তান ও ভারত। পাকিস্তানের দিকে নজর দিলে বিষয়টি বেশ অবাকই লাগে। দেশটির যাবতীয় উন্নয়ন খাত, মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন সূচকে আমাদের থেকে পিছিয়ে থাকলেও গবেষণার দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে বলা যায়, যার বাস্তব প্রমাণ মিলছে সে দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় এই কিউএস র‍্যাংকিংয়ে বিশ্বের ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে পিছিয়ে যাওয়ার নানাবিধ কারণ আছে। কেননা, যেসব সূচকের ভিত্তিতে এই র‍্যাংকিং করা হয়, সেগুলোতে আমরা অনেক পিছিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক খ্যাতি অর্জন করতে হলে সর্বপ্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা ও গবেষণাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। যেখানে আমাদের বেশ ঘাটতি আছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল। যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটা দিয়ে ভালো মানের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা দুরূহ। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে শিক্ষকতার পাশাপাশি ভালো মানের গবেষক হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই গবেষণাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেটা করতে গেলে গবেষণা খাতে পর্যাপ্ত বাজেটের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী নিযুক্ত থাকতে হবে। কেননা, গবেষণার সার্বিক অগ্রগতির জন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত বড় একটি মাপকাঠি। যেটাতে আমাদের দেশে বেশ বড় রকমের গরমিল রয়েছে। বিদেশে একজন শিক্ষকের অধীনে ১১ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও আমাদের দেশে শিক্ষক প্রতি ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী থাকে, যেখানে শিক্ষা বা গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকছে না। গবেষণা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা খাতে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া হলেও গবেষকদের বেতন ভাতা নিয়ে এদেশে আলাদা কোনো নিয়মনীতি নেই। সেখানে একজন গবেষক শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবীর মতো মাসিক বেতন পেয়ে থাকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, অন্যান্য চাকরিতে সৎ ও বৈধ উপায়ে বাড়তি ইনকামের সুযোগ-সুবিধা থাকলেও গবেষকদের এই সুযোগ খুবই কম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নির্দিষ্ট বেতনের আয় দিয়ে যেখানে একজন গবেষকের পারিবারিক ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য, সেখানে বাড়তি কোনোরকম সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে তাদের থেকে ভালোমানের গবেষণা আশা করাটা বোকামি। এখানে বাইরের দেশের প্রেক্ষাপট অনেকটা ভিন্ন। সেখানে একজন গবেষক বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মানেই দেশের সবচেয়ে সম্মানীয় ব্যক্তি। তার ভালো মানের গবেষণাপত্র পাবলিকেশনে বাড়তি আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। এই আর্থিক সুবিধার অংকটাও বেশ বড়, যেটা নির্ভর করে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধের জার্নালের র‍্যাংকিংয়ের উপর। কিন্তু আমাদের দেশে একজন শিক্ষক বা ভালো গবেষকের মূল্যায়ন তো করা হয় না বরং অযোগ্যদের উচ্চ আসনে বসানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে মেধার চেয়ে অন্যান্য ক্ষেত্রে পারদর্শীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ফলে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষকতা পেশায় নিয়োগ পাচ্ছে না। সেই কারণেও গবেষণা খাতকে সেভাবে এগিয়ে নিতে পারছে না। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করা হয় না। এই কিউএস র‍্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়া অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটিও একটি কারণ বলা যায়। কেননা, র‍্যাংকিং করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়। ওয়েবসাইট হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়না। ওয়েবসাইট যদি আপডেটেড না থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্জন সেভাবে প্রকাশিত হয় না। দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ বা প্যাটেন্টের আপডেট করা হয় না। ফলে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে কাজে আসছে না।

আমাদের দেশে চাকরির বাজারের সঙ্গে প্রার্থীর পঠিত বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পরে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যতীত অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভিন্ন খাতে তার ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রার্থীর পঠিত বিষয়ের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের কোনো মিল নেই। এর ফলে অনেক মেধাবী তাদের সঠিক লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। গবেষণা থেকে সরে যাচ্ছেন। তাই দেখা যায় দেশে গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাতে গোনা কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত গবেষণা খাতকে এগিয়ে নেওয়ার মতো তেমন কোনো শক্ত প্রতিষ্ঠান দেশে নেই। ফলে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের গবেষণা খাত বেশ নড়বড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কম, যে কারণে র‍্যাংকিংয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। একজন বিদেশি শিক্ষার্থী যখন আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে, তখন তার কাছেও বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিংয়ের বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং সেভাবে স্থান না হওয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। দেশের উচ্চ শিক্ষিতদের অনেকে পাস করে কর্মসংস্থানে ঢুকতে না পেরে বেকার হচ্ছে। এ বিষয়টি বিশ্বব্যাপীও আলোচিত হচ্ছে এবং র‍্যাংকিংয়ে এর প্রভাব পড়ছে। বাইরের দেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে অনেকেই সঠিক কর্মসংস্থানের উপায় করতে না পেরে আবারো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাচ্ছে। নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় হতে বের হওয়া গ্র্যাজুয়েটদের মান যথেষ্ট ভালো থাকার সত্ত্বেও তাদের দেশে রাখার জন্য উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তারা সারা বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভালো মানের গবেষক হিসেবে কাজ করছে ও সুখ্যাতি ছড়াচ্ছে। এসব গবেষকের দেশে রাখতে পারলে নিঃসন্দেহে তাদের এই অর্জন দেশের উন্নয়নের সূচকে কাজে লাগানো যেত। যেটা আমাদের গবেষণা খাতের ভিতকে আরো বেশি মজবুত ও শক্তিশালী করত। আমাদের দেশের শিক্ষার্থী প্রতি যে বাজেট প্রণয়ন করা হয় সেটির যদি র‍্যাংকিং করা হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তার মান বিশ্বের অন্যান্য ৫ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পড়বে না। এই অপ্রতুল বাজেট নিয়ে আমরা বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ১০০-এর মধ্যে আসব, সেটা ভাবাটাও বোকামি। তাই শিক্ষার্থী প্রতি যে বাজেট সেটার মানও বাড়াতে হবে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা গবেষণা অবকাঠামো তৈরি করতে পারছি না। আমাদের নতুন নতুন গবেষণাগার তৈরি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের কনফারেন্সে অংশগ্রহণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। একজন গবেষকের একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ মানে তার আইডিয়াকে বিশ্বের অন্যান্য খ্যাতিমান গবেষকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার সুযোগ পাওয়া। একই সঙ্গে সারাবিশ্বে কী ধরনের গবেষণা চলছে, সে সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা পাওয়া। কিন্তু আমাদের দেশের গবেষকরা উন্নত বিশ্বের নামিদামি কনফারেন্সে-সেমিনারে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে না। যেটি গবেষকদের পিছিয়ে পড়তে বাধ্য করছে। আমাদের দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির কলাবরেশন করে গবেষণা কর্ম চালিয়ে যাওয়ার তেমন কোনো রীতি নেই, যেটা বাইরের দেশগুলোতে হরহামেশাই হয়ে থাকে। এর ফলে বাইরের দেশগুলোতে ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কলাবরেশন পাবলিকেশনের সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য আমাদের দেশে এই রীতির প্রচলন শুরু করা জরুরি। বিজ্ঞান ও গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য ব্যতীত কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারেনি। তাই এই বিজ্ঞান ও গবেষণায় আমাদের উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। সে উদ্দেশ্যে, বিজ্ঞান ও গবেষণায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে হলে বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে। গবেষকদের নিত্য নতুন উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করতে হবে, যাতে করে তাদের গবেষণায় উৎসাহ বাড়ে। হতে পারে সেটা আর্থিক সহযোগিতা বা অন্যান্য যেকোনো ধরনের সহযোগিতা। এ উদ্দেশে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সেরা গবেষণা পুরস্কার, সেরা উদ্ভাবনী পুরস্কার, কোনো অর্থবছরে সর্বোচ্চ সংখ্যক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশকারীর স্বীকৃতি, সর্বোচ্চ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টরে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের স্বীকৃতিসহ নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, যেখানে একজন গবেষকের গবেষণা কাজের উৎসাহ বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে গণমাধ্যমেরও পজেটিভ যোগসূত্র থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খারাপ কাজ করলে যেভাবে সমালোচনা করা হয়, একইসঙ্গে ভালো গবেষণাসহ কোনো স্বীকৃতিমূলক কাজ করলে সেটাও প্রচার করতে হবে। তাহলে বিশ্ব আমাদের এ অর্জনগুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। গবেষণায় বরাদ্দ অবশ্যই বাড়াতে হবে। আমাদের শিক্ষার কারিকুলাম যুগোপযোগী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলো আপডেট করতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের র‍্যাংকিং মানদ-ের সূচকগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। এই সূচকগুলো যাতে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায় সে বিষয়ে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজেদের দুর্বল জায়গাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোর অতিক্রম করার জন্য অতিদ্রুত সমাধান করতে হবে। সংকটগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানে কাজ করতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান যাতে করে স্বাবলম্বী বা স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে গড়ে উঠতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে গবেষকদের সঙ্গে সময়ে সময়ে নীতি নির্ধারকদের বসতে হবে, যেখানে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে একজন গবেষকের কী কী সমস্যা হচ্ছে সেগুলো চিহ্নিত পূর্বক সমাধানের আশু ব্যবস্থা করতে হবে। গবেষণা খাতের উন্নয়ন ব্যতীত একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। বিষয়টি অনুধাবন করে গবেষকদের গবেষণাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত