সড়ক দুর্ঘটনা মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করে

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

২০২৩ সালের ঘটনা। সিএনজিতে উঠেছি। সিএনজি চলছে। হঠাৎ করেই বিপরীত দিক থেকে সাঁই করে ছুটে আসা দুটি মোটরবাইক এসে আছড়ে পড়ে চলন্ত সিএনজির সামনে। সিএনজিও সামলে উঠতে না পেরে কাত হয়ে পড়ে। আমি লুটিয়ে পড়ি রাস্তায়, আর আমার দুই পায়ের ওপর পড়ে সিএনজি, রক্তে ভিজে যায় রাস্তার ঘাস। সিএনজির সামনে থাকা লোকটি নিজেকে সামলে উঠতে পারলেও বেশ ভালো রকমের জখম হয়েছে, রক্তের স্রোত বইছে তার বাহু থেকেও, চালকের মাথা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ছে, কী ভয়ানক সেই দৃশ্য! সামনে থাকা লোকটিকে অনুরোধ করলাম, গাড়িটা কয়েক সেকেন্ডের জন্য আলগা করতে। তিনি সেদিন সিএনজিটি তুলে ধরে আমাকে বের হওয়ার সুযোগ করে না দিলে হয়তো পা দুটো একেবারেই অকেজো হয়ে যেত। সে যাত্রায় অবশ্য শক্ত একজোড়া বুট আমার পায়ের পাতাদ্বয়ের অতিরিক্ত রক্ষাকবচ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু পায়ের উপরের অংশ থেঁতলে গিয়েছিল, যা এখনো ভাবতে গেলে বাহ্যিক-মানসিক অবয়ব স্থির রাখতে পারি না; দীর্ঘস্থায়ী ভোগান্তির কথা না-ই বললাম। এরপর অনেক সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনো যে আঘাতটা আমার হৃদয়কে ম্লান করে দেয়, তা হলো মানসিকভাবে অনিরাপদ অনুভব করা। কালের পরিক্রমায় সব দুর্ঘটনাই মন থেকে হারিয়ে যায়, কিন্তু তার গভীর ছাপ বা বিরূপ প্রভাব ঠিকই মনে বিরাজমান থাকে। মানসিকভাবে এখনো ওই বিভৎস স্মৃতি আমাকে পীড়া দেয়। গাড়ি চড়ার কথা উঠলেই এখনো অজানা আতঙ্কে মন আঁতকে ওঠে। সড়ক দুর্ঘটনা কি এভাবেই মানুষের নিজস্বতা বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে! আর কত! আর কত প্রাণ ধ্বংস করবে!

নুসরাত জাহান ঈশা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।