অভিমত

স্মার্ট বাংলাদেশ ও ইংরেজি শিক্ষা

প্রশান্ত বণিক

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

স্মার্ট বাংলাদেশ এখন কোনো অবাস্তব কিছু নয়, এটি বাস্থবতা। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব কার্যক্রম আজ ডিজিটাল পেরিয়ে স্মার্টে রূপান্তরিত হচ্ছে। এর বাস্তব প্রমাণ হলো আমাদের দেশে শ্রেণিকক্ষে ও অফিস আদালতে ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন প্রযুক্তিনির্ভর উপকরণ। সঠিক নির্ভুল ও গুণগত মানসম্পন্ন সহজ সাবলীল উপস্থাপনের বিকল্প কল্পনাতীত। এই আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি ইংরেজি শিক্ষার শিখন শেখানোর কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন ও শিক্ষার্থীকে ব্যাপক উৎসাহী করছে। স্মার্ট ক্লাসরুম মানেই হচ্ছে- ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, মডেম স্পিকার, প্রজেক্টর ইত্যাদি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও তৈরি হচ্ছে স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ। এর কল্যাণে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন কনন্টেট ও বাস্তবমুখী শিক্ষা। কনটেন্টগুলোতে ভিডিও এবং ছবি যুক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীর কাছে ইংরেজি হয়ে উঠছে বোধগম্য ও আনন্দদায়ক। এই শিক্ষা পদ্ধতি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করছে। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় মাল্টিমিডিয়া ও কনটেন্ট তৈরির কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে ডিজিটালের যাত্রা শুরু হয় যা আজ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তিত হয়েছে। কিন্তু কোভিড-১৯ পৃথিবীর প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জে ফেলায় এক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থী হয়ে গেছে শিক্ষাভীরু। শিক্ষার্থীকে মুখস্থ, শিক্ষককেন্দ্রীক ও পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতি থেকে বের করে বাস্তব ও জীবনমুখী শিক্ষার উৎসাহী করে তোলা হচ্ছে। এর ফলে ২০২১ সালে শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক পরিবর্তন এনে ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে ইতিবাচক, গ্রহণযোগ্য, সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়। নতুন শিক্ষাক্রমে ইংরেজি শিক্ষার শিখন শেখানো প্রক্রিয়াটি হল অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন। এই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থী অভিভাবক শিক্ষক, পরিবেশ থেকে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। তা বাস্তবতা জীবনে প্রয়োগ করবে। আর এ জন্যই ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্য বই রচিত হয়েছে রিসোর্স ও ওয়ার্ড বুক আকারে। তাছাড়া ইংরেজি পাঠ্যপুস্তকগুলো প্রক্রিয়ানির্ভর যাতে করে শিক্ষার্থী বুঝতে পারে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিখন অর্জনের পাশাপাশি তার ভূমিকা ও দায়িত্ব। এই প্রক্রিয়ায় পাঠ দানের ফলে শিক্ষার্থীদের ইংরেজিভিতি দূর হচ্ছে এবং শেখার উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগের মাধ্যম ও ভাষা হিসাবে ইংরেজি শিখছে। উদাহারণ স্বরূপ, ভাষাশিক্ষার প্রচলিত শিক্ষাক্রমে যেখানে শোনা, বলা, পড়া, লেখা এই চারটিকে মূল যোগ্যতা বিবেচনা করা হত। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে এগুলোর সঙ্গে সঙ্গে দেখা ও অনুভব করাকেও দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমে শিখন কার্যক্রমজুড়েই মূল্যয়ন পরিচালিত হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীর চাহিদা, আগ্রহ, বৈচিত্র্য অনুযায়ী মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে। পরিশেষে, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ও নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে আমরা যুগোপযোগী আধুনিক স্মার্ট প্রজন্ম তৈরি করতে সক্ষম হব।